দুই নেত্রীর পরস্পর দোষারোপ নয়, জনগণ চায় পদ্মা সেতু by সৈয়দ মেজবাহউদ্দিন
পদ্মা সেতু নিয়ে রাজনীতির মাঠ বেশ জমে উঠেছে। সম্প্রতি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠের জনসভা থেকে বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতি প্রশ্নে পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। চাঁপাইয়ের জনসভায় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, 'পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যিনি ব্যবস্থা নেবেন, যদি তাঁর কাছেই সেই দুর্নীতির টাকা যায়, তাহলে তিনি আর কী ব্যবস্থা নেবেন?'
এর বিপরীতে পাটগ্রামের জনসভায় শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতাকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, 'চোরের মায়ের বড় গলা।' পদ্মা সেতু প্রশ্নে পৃথক জনসভায় সরকারি ও বিরোধী দলের নেতা অবশ্য একমত হয়েছেন যে, পদ্মা সেতু নিয়ে প্রকৃতই দুর্নীতি হয়েছে। সেতুটি নিয়ে চারদলীয় জোট সরকারের দুর্নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার অর্থায়ন স্থগিতের পেছনে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে খালেদা জিয়া যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দায়ী করে বলেছেন, 'বিদেশিদের দেওয়া সব টাকা খেয়ে ফেলেছে সরকার। এ কারণে বিশ্বব্যাংক ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে।'
পদ্মা সেতু নিয়ে উভয় নেতার পাল্টাপাল্টি অবস্থানের বক্তব্যকে জনগণ ভালোই উপভোগ করছে। জনগণের উদ্দেশে দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও যার জন্য এত যন্ত্রণা, সেই বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ করছেন না।
উভয় নেতার দৃষ্টিতে বিশ্বব্যাংক যেন 'ধোয়া তুলসীপাতা'। পদ্মা সেতু করতে টাকা লাগবে প্রায় ২১ হাজার কোটি, এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার হিসেবে আট হাজার কোটিরও কম। পদ্মা সেতুর বাকি ১৩ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করবে বাংলাদেশ সরকার, জাইকা, আইএমএফসহ অন্যান্য সংস্থা। দেখা যাচ্ছে, পদ্মা সেতুর অর্থ সংস্থানে মোট ব্যয়ের তিন ভাগের এক ভাগ সংস্থান করছে বিশ্বব্যাংক। অথচ তাদের খবরদারি পুরো ২১ হাজার কোটি টাকার ওপর।
প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি করেছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। আর বিরোধী দলের নেতা অভিযোগ করেছেন, এই দুর্নীতি হয়েছে বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সমন্বয়ে। দুই নেতার পাল্টাপাল্টি এই অভিযোগের আসলে কতটা ভিত্তি আছে, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী দুর্নীতি করেছেন বলে বিশ্বব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করেনি। প্রশ্ন হলো, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর সময়ে পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু সেই কাজের জন্য বিশ্বব্যাংক তখন এক টাকারও ঋণ মঞ্জুর করেনি। তাহলে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী কোন টাকায় দুর্নীতি করলেন? একইভাবে খালেদা জিয়া বলেছেন, পদ্মা সেতুর টাকা খেয়ে ফেলেছে সরকার। এখানেও যে প্রশ্ন দাঁড়ায়, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর বিষয়ে ঋণচুক্তি করেছে, ঋণ মঞ্জুর নয়। তাহলে বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী কি ঋণ মঞ্জুর না হওয়া অর্থ থেকেই দুর্নীতি করে ফেলেছেন?
উভয় যোগাযোগমন্ত্রীর ক্ষেত্রে অবশ্য বিদেশি কোনো কম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিশন গ্রহণের অভিযোগ ওঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। এখানে বলা যায়, কোনো কাজে কোনো কম্পানি কাজ শুরু হওয়ার আগেই কমিশন দেয় না। কারণ, বাংলাদেশের মন্ত্রীরা কোন সময় মন্ত্রিত্বহারা হয়ে যান, এই চিন্তায় কাজ পাওয়ার জন্য কমিশন হয়তো দেন, তবে তা আহামরি কিছু নয়। বিদেশি কম্পানি মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতনদের দেওয়া কমিশন শত ভাগ তখনই পরিশোধ করে, যখন তাদের শতভাগ কাজ সম্পন্ন করে বিপুল লাভ উঠিয়ে নেয়।
বিষয়টি যদি এমন দাঁড়াত, পদ্মা সেতুর ২১ হাজার কোটির মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকাই দুর্নীতি হয়ে গেছে, তাহলে বিশ্বব্যাংকের এ সাপলুডু খেলার অর্থ ছিল। তা ছাড়া পদ্মা সেতুর পুরো টাকাই যদি বিশ্বব্যাংক দিত, তাহলেও কথা ছিল। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যরা ঋণচুক্তি করেও দুই যোগাযোগমন্ত্রীর দুর্বোধ্য দুর্নীতির ধুয়া কেন তুলল, তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
আট হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে কনসালটেন্সি ফি, প্রকৌশলীদের বেতন, বলে দেওয়া দেশ থেকে উপকরণ, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ ক্রয় ইত্যাদি বাবদ ছয় হাজার কোটি টাকা নিতে না পারার মধ্যে সব সমস্যা লুকিয়ে আছে কি না, তা সরকারকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে। দিলাম আট হাজার কোটি টাকা, নিয়ে গেলাম ছয় হাজার কোটি টাকা। অথচ ঋণের সুদ বছরের পর বছর পাওয়া যাবে আট হাজার কোটি টাকারই। তৃতীয় বিশ্বের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে এর চেয়ে বড় আয় আর কী হতে পারে? বিশ্বব্যাংক যদি এই বোধ থেকে বাংলাদেশের মন্ত্রীদের ওপর দুর্নীতির লেবেল আঁটতে চায়, তাহলে আমাদেরও উচিত পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততা ত্যাগ করা।
বিশ্বব্যাংক ছাড়া পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে অন্য যেসব সংস্থা ঋণ দিতে চেয়েছিল (যারা এখন বিশ্বব্যাংকের জন্য বেঁকে বসেছে), তাদের সঙ্গে সরকারের অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুসম্পর্কই পারে এডিবি, আইএমএফ, জাইকার দেওয়া ঋণ ছাড় করে আনতে। পদ্মা সেতুতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের যে পরিমাণ অর্থায়নের কথা ছিল, সে বিষয়ে সরকার এখন নির্বিকার। বিভিন্ন উৎস থেকে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর জন্য যেভাবে সারচার্জ আদায় করা হয়েছিল, তার কিছুই হচ্ছে না পদ্মা সেতু বিষয়ে। অথচ সরকার ইচ্ছা করলেই বিভিন্ন উৎস থেকে পদ্মা সেতুর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করতে পারে।
সরকার যদি মনে করে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পদ্মা সেতুর বেশির ভাগ টাকা সংগ্রহ করলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে, তাহলে কোনো সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে নয়, বিদেশি এক বা একাধিক নির্মাণ কম্পানির সঙ্গে (টোল থেকে প্রাপ্য অর্থের ভাগাভাগির ভিত্তিতে) চুক্তিতে আসতে পারে। মালয়েশিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার এমন বহু কম্পানি ব্রিজ করার পর টোল প্রাপ্তির ভিত্তিতে তাদের পাওনা বুঝে নেয়। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতেও পদ্মা সেতু করা যায় কি না, তাও সরকারের ভাবা উচিত। বাংলাদেশের এমন কিছু কম্পানি আছে, যাদের পাঁচ-সাতটির পক্ষেই পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব।
তাই এখন সময় এসেছে, দুই নেত্রী পরস্পরকে দোষারোপ না করে, কুৎসা না রটিয়ে, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য না করে পদ্মা সেতু বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা। দুই নেত্রী দেশ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হলে বিশ্বব্যাংক ছাড়াই আমরা গড়ে তুলতে পারব স্বপ্নের পদ্মা সেতু, আর তাতে থাকবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন।
পদ্মা সেতু নিয়ে উভয় নেতার পাল্টাপাল্টি অবস্থানের বক্তব্যকে জনগণ ভালোই উপভোগ করছে। জনগণের উদ্দেশে দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও যার জন্য এত যন্ত্রণা, সেই বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ করছেন না।
উভয় নেতার দৃষ্টিতে বিশ্বব্যাংক যেন 'ধোয়া তুলসীপাতা'। পদ্মা সেতু করতে টাকা লাগবে প্রায় ২১ হাজার কোটি, এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার হিসেবে আট হাজার কোটিরও কম। পদ্মা সেতুর বাকি ১৩ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করবে বাংলাদেশ সরকার, জাইকা, আইএমএফসহ অন্যান্য সংস্থা। দেখা যাচ্ছে, পদ্মা সেতুর অর্থ সংস্থানে মোট ব্যয়ের তিন ভাগের এক ভাগ সংস্থান করছে বিশ্বব্যাংক। অথচ তাদের খবরদারি পুরো ২১ হাজার কোটি টাকার ওপর।
প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি করেছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। আর বিরোধী দলের নেতা অভিযোগ করেছেন, এই দুর্নীতি হয়েছে বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সমন্বয়ে। দুই নেতার পাল্টাপাল্টি এই অভিযোগের আসলে কতটা ভিত্তি আছে, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী দুর্নীতি করেছেন বলে বিশ্বব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করেনি। প্রশ্ন হলো, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর সময়ে পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু সেই কাজের জন্য বিশ্বব্যাংক তখন এক টাকারও ঋণ মঞ্জুর করেনি। তাহলে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী কোন টাকায় দুর্নীতি করলেন? একইভাবে খালেদা জিয়া বলেছেন, পদ্মা সেতুর টাকা খেয়ে ফেলেছে সরকার। এখানেও যে প্রশ্ন দাঁড়ায়, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর বিষয়ে ঋণচুক্তি করেছে, ঋণ মঞ্জুর নয়। তাহলে বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী কি ঋণ মঞ্জুর না হওয়া অর্থ থেকেই দুর্নীতি করে ফেলেছেন?
উভয় যোগাযোগমন্ত্রীর ক্ষেত্রে অবশ্য বিদেশি কোনো কম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিশন গ্রহণের অভিযোগ ওঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। এখানে বলা যায়, কোনো কাজে কোনো কম্পানি কাজ শুরু হওয়ার আগেই কমিশন দেয় না। কারণ, বাংলাদেশের মন্ত্রীরা কোন সময় মন্ত্রিত্বহারা হয়ে যান, এই চিন্তায় কাজ পাওয়ার জন্য কমিশন হয়তো দেন, তবে তা আহামরি কিছু নয়। বিদেশি কম্পানি মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতনদের দেওয়া কমিশন শত ভাগ তখনই পরিশোধ করে, যখন তাদের শতভাগ কাজ সম্পন্ন করে বিপুল লাভ উঠিয়ে নেয়।
বিষয়টি যদি এমন দাঁড়াত, পদ্মা সেতুর ২১ হাজার কোটির মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকাই দুর্নীতি হয়ে গেছে, তাহলে বিশ্বব্যাংকের এ সাপলুডু খেলার অর্থ ছিল। তা ছাড়া পদ্মা সেতুর পুরো টাকাই যদি বিশ্বব্যাংক দিত, তাহলেও কথা ছিল। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যরা ঋণচুক্তি করেও দুই যোগাযোগমন্ত্রীর দুর্বোধ্য দুর্নীতির ধুয়া কেন তুলল, তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
আট হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে কনসালটেন্সি ফি, প্রকৌশলীদের বেতন, বলে দেওয়া দেশ থেকে উপকরণ, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ ক্রয় ইত্যাদি বাবদ ছয় হাজার কোটি টাকা নিতে না পারার মধ্যে সব সমস্যা লুকিয়ে আছে কি না, তা সরকারকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে। দিলাম আট হাজার কোটি টাকা, নিয়ে গেলাম ছয় হাজার কোটি টাকা। অথচ ঋণের সুদ বছরের পর বছর পাওয়া যাবে আট হাজার কোটি টাকারই। তৃতীয় বিশ্বের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে এর চেয়ে বড় আয় আর কী হতে পারে? বিশ্বব্যাংক যদি এই বোধ থেকে বাংলাদেশের মন্ত্রীদের ওপর দুর্নীতির লেবেল আঁটতে চায়, তাহলে আমাদেরও উচিত পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততা ত্যাগ করা।
বিশ্বব্যাংক ছাড়া পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে অন্য যেসব সংস্থা ঋণ দিতে চেয়েছিল (যারা এখন বিশ্বব্যাংকের জন্য বেঁকে বসেছে), তাদের সঙ্গে সরকারের অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুসম্পর্কই পারে এডিবি, আইএমএফ, জাইকার দেওয়া ঋণ ছাড় করে আনতে। পদ্মা সেতুতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের যে পরিমাণ অর্থায়নের কথা ছিল, সে বিষয়ে সরকার এখন নির্বিকার। বিভিন্ন উৎস থেকে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর জন্য যেভাবে সারচার্জ আদায় করা হয়েছিল, তার কিছুই হচ্ছে না পদ্মা সেতু বিষয়ে। অথচ সরকার ইচ্ছা করলেই বিভিন্ন উৎস থেকে পদ্মা সেতুর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করতে পারে।
সরকার যদি মনে করে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পদ্মা সেতুর বেশির ভাগ টাকা সংগ্রহ করলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে, তাহলে কোনো সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে নয়, বিদেশি এক বা একাধিক নির্মাণ কম্পানির সঙ্গে (টোল থেকে প্রাপ্য অর্থের ভাগাভাগির ভিত্তিতে) চুক্তিতে আসতে পারে। মালয়েশিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার এমন বহু কম্পানি ব্রিজ করার পর টোল প্রাপ্তির ভিত্তিতে তাদের পাওনা বুঝে নেয়। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতেও পদ্মা সেতু করা যায় কি না, তাও সরকারের ভাবা উচিত। বাংলাদেশের এমন কিছু কম্পানি আছে, যাদের পাঁচ-সাতটির পক্ষেই পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব।
তাই এখন সময় এসেছে, দুই নেত্রী পরস্পরকে দোষারোপ না করে, কুৎসা না রটিয়ে, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য না করে পদ্মা সেতু বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা। দুই নেত্রী দেশ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হলে বিশ্বব্যাংক ছাড়াই আমরা গড়ে তুলতে পারব স্বপ্নের পদ্মা সেতু, আর তাতে থাকবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন।
No comments