সংবিধান ও আইনের লঙ্ঘনঃ নারায়ণগঞ্জে সেনা দেয়নি সরকার
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু সরকার তা দেয়নি। এ ব্যাপারে ইসি যে চিঠি দিয়েছিল, তার কোনো জবাবই দেয়নি সরকার। ইসি সেনাবাহিনী চাইলেও না দেওয়া সংবিধান ও নির্বাচনী আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী বিভাগের কর্তব্য হইবে।’
আর সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদে আছে, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীর প্রয়োজন হবে, কমিশন অনুরোধ করলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করবেন।’ স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ২(১) ধারায় উল্লেখ আছে, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অর্থ পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ন আনসার, বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্টগার্ড বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ।’
এই আইনের আলোকে নির্বাচন কমিশন একটি পরিপত্র জারি করেছে। নির্বাচনে চার কোম্পানি সেনা মোতায়েন এবং তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে ২৪ অক্টোবর পরিপত্রটি জারি করা হয়। কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব আবদুল বাতেন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, ‘সেনাসদস্যগণ ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে ১ নভেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এই চার কোম্পানির মধ্যে সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত তিনটি থানায় তিন কোম্পানি এবং মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে এক কোম্পানি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিজার্ভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের চাওয়ামতো সরকার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করে সংবিধান ও আইন লঙ্ঘন করেছে। এর মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে যে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিতে চায় না। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন আইনে সশস্ত্র বাহিনীও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশ। তাই এখানে সরকারের ‘না’ করার অর্থ হলো, আইন ও সংবিধান দুটোই অমান্য করা।
ইসির চিঠির জবাব নেই: ১৬ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী মোতায়েনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দেয়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মিহির সারোয়ার মোর্শেদ স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়, ভোটাররা যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন এবং কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য কমিশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সরকার এই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। এখন নির্বাচন কমিশন ধরে নিয়েছে যে সরকার সেনাবাহিনী দেবে না।
কমিশনে বৈঠক: গতকাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে নারায়ণগঞ্জে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ছিল। কিন্তু সেনা না যাওয়ায় এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন দিনভর অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের পর বিকেলে বৈঠকে বসে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক থেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। র্যাবের মহাপরিচালক ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করতে পারেনি বলে জানা যায়। কমিশন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনাবাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে।
নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের জন্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার তা করেনি। এ বিষয়ে যে সাংবিধানিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা সরকার নিশ্চয়ই জানে।
আইনবিদ শাহ্দীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে, সরকার সেই সহযোগিতা দিতে বাধ্য। সরকার যদি কোনো কারণে সহযোগিতা করতে সমর্থ না হয়, সেটা কমিশনকে জানানোর ব্যাপারেও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না করলে সরকার সাংবিধানিক জটিলতায় পড়বে। স্থানীয় সরকার আইনেও এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে রাখা হয়েছে।
এই আইনের আলোকে নির্বাচন কমিশন একটি পরিপত্র জারি করেছে। নির্বাচনে চার কোম্পানি সেনা মোতায়েন এবং তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে ২৪ অক্টোবর পরিপত্রটি জারি করা হয়। কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব আবদুল বাতেন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, ‘সেনাসদস্যগণ ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে ১ নভেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এই চার কোম্পানির মধ্যে সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত তিনটি থানায় তিন কোম্পানি এবং মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে এক কোম্পানি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিজার্ভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের চাওয়ামতো সরকার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করে সংবিধান ও আইন লঙ্ঘন করেছে। এর মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে যে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিতে চায় না। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন আইনে সশস্ত্র বাহিনীও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশ। তাই এখানে সরকারের ‘না’ করার অর্থ হলো, আইন ও সংবিধান দুটোই অমান্য করা।
ইসির চিঠির জবাব নেই: ১৬ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী মোতায়েনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দেয়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মিহির সারোয়ার মোর্শেদ স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়, ভোটাররা যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন এবং কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য কমিশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সরকার এই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। এখন নির্বাচন কমিশন ধরে নিয়েছে যে সরকার সেনাবাহিনী দেবে না।
কমিশনে বৈঠক: গতকাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে নারায়ণগঞ্জে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ছিল। কিন্তু সেনা না যাওয়ায় এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন দিনভর অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের পর বিকেলে বৈঠকে বসে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক থেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। র্যাবের মহাপরিচালক ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করতে পারেনি বলে জানা যায়। কমিশন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনাবাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে।
নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের জন্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার তা করেনি। এ বিষয়ে যে সাংবিধানিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা সরকার নিশ্চয়ই জানে।
আইনবিদ শাহ্দীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে, সরকার সেই সহযোগিতা দিতে বাধ্য। সরকার যদি কোনো কারণে সহযোগিতা করতে সমর্থ না হয়, সেটা কমিশনকে জানানোর ব্যাপারেও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না করলে সরকার সাংবিধানিক জটিলতায় পড়বে। স্থানীয় সরকার আইনেও এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে রাখা হয়েছে।
No comments