বিরাজনীতিকরণের অন্য মাত্রা by ড. মাহ্বুব উল্লাহ্
রাজনীতি-বিবর্জিতভাবে দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার কৌশল 'বিরাজনীতিকরণ' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে যে অর্থে 'বিরাজনীতিকরণ' শব্ধটি ব্যবহার করা হয় তার জন্য এই শব্ধটি সঠিক কিনা আমার মনে সংশয় আছে। বাংলা ভাষায় 'বি' একটি উপসর্গ। সাধারণত বিশিষ্টতা ও ভিন্নতা বোঝানোর জন্য 'বি' উপসর্গটি ব্যবহার করা হয়। উপসর্গের কাজই হলো শব্ধের অর্থের পরিমার্জন, পরিবর্ধন কিংবা সঙ্কোচন সাধন। আমার মনে হয়, বিরাজনীতিকরণ শব্ধটির পরিবর্তে নিরাজনীতিকরণই অধিকতর সঠিক প্রয়োগ।
যা হোক, বিরাজনীতিকরণ শব্ধটি বাংলাদেশে বহুলভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে জরুরি সরকারের সময়। রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা দল-মত-নির্বিশেষে প্রায় সবাই বলেছেন যে, বিরাজনীতিকরণের এজেন্ডাকে সামনে নিয়ে নেমেছিল সেনা সমর্থিত জরুরি সরকার। আমাদের বুঝতে হবে বিরাজনীতিকরণের একটি দ্বান্দ্বিক চরিত্র আছে। বিরাজনীতিকরণ একদিকে যেমন রাজনীতিকে ধোয়ামোছা করে বিদায় দেয়া, অন্যদিকে এটি একটি বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক এজেন্ডাকে কার্যকর করা বোঝায়। জরুরি সরকারের আমলে 'মাইনাস-টু' ফমুর্লা বা রাজনীতি থেকে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে বিদায় করার কৌশল নেয়া হয়েছিল। এই কৌশল বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জরুরি সরকারের কুশীলবরা জবরদস্তি ও বলপ্রয়োগের আশ্রয়ও নিয়েছিল; কিন্তু তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। কারণ, দেশের জনসংখ্যার একটি ঈৎরঃরপধষ গধংং এই দুই নেত্রীর পেছনে ছিল এবং আছে। তাহলে এই দুই নেত্রীকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে অপসারণের হীন কৌশল কেন গ্রহণ করা হয়েছিল? একথা এখন অনেকটাই সপষ্ট যে, বিগত জরুরি সরকার বিদেশিদের কিছু এজেন্ডা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর ছিল। বিদেশিদের স্বার্থে এসব এজেন্ডার কোনো কোনোটি হয়তো দুই নেত্রীর পছন্দ হতো না। কারণ এই দুই নেত্রীর শক্তি ও ক্ষমতার মূল ভিত্তি জনগণ। জনসমর্থন হারিয়ে ফেললে এদের কারোরই দুই পয়সার মূল্য থাকবে না। যেহেতু বিদেশি স্বার্থের এজেন্ডা বাস্তবায়ন জনগণের ঘোর অপছন্দের বিষয় সেহেতু একটি পর্যায়ে এদের দু'জনার কারও পক্ষেই শতকরা ১০০ ভাগ বিদেশি লাইন অনুসরণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং এদেরকে রাজনীতি থেকে হটাতে হবে। অন্যদিকে কম জনপ্রিয় এবং ক্ষুদ্র জনভিত্তিসম্পন্ন নেতাদের নিয়ে রাজনৈতিক লেনদেন করতে সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কারণ তাদেরকে দিয়ে যে কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন অত্যন্ত সহজ এবং তারাও নিছক ক্ষমতার লোভে বিদেশিদের যে কোনো প্রস্তাবে সায় দিতে প্রস্তুত থাকে। ইতিহাসে জনপ্রিয় নেতাদের রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চ থেকে হটিয়ে দেয়ার বেশকিছু দৃষ্টান্ত আছে। আমরা প্রথমেই দৃষ্টান্ত হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট সুকর্ণের কথা ভাবতে পারি। প্রেসিডেন্ট আহমদ সুকর্ণ ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। তার জনপ্রিয়তাও ছিল প্রচুর। ১৯৬৫ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে সুকর্ণ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত বন্দি জীবনযাপন করেন। সামরিক অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে ইন্দোনেশিয়ায় ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রাম-গ্রামান্তরে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নরমুন্ডু দিয়ে ফুটবল খেলা হয়। বিংশ শতাব্ধীতে হলোকষ্টের ঘটনার পর এটি ছিল আরেকটি হলোকষ্ট। এসব সংঘটিত হয়েছিল তৎকালীন ইন্দোনেশীয় সেনাপ্রধান জেনারেল সুহার্তোর নেতৃত্বে। সুহার্তো ইন্দোনেশিয়ার জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিলেন। জেনারেল সুহার্তো ইন্দোনেশিয়াকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে কমিউনিষ্টমুক্ত করেছিলেন। চিলির সালভেদর আলেন্দের সরকারের বিরুদ্ধে জেনারেল পিনোশের নেতৃত্বে যে অভ্যুত্থান পরিচালিত হয়, সেই অভ্যুত্থানের ফলে চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সালভেদর আলেন্দে নিহত হন এবং চিলির সাম্রাজ্যবাদবিরোধী প্রগতিশীল জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। সাম্রাজ্যবাদীরা ও আধিপত্যবাদীরা তাদের স্বার্থ উদ্ধারে এ রকম প্রচন্ড নিষ্ঠুরতার পথ বেছে নিতে পারে। বাংলাদেশের জরুরি সরকারের সময় সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল; কিন্তু যে কোনো কারণেই হোক না কেন তারা ইন্দোনেশিয়া অথবা চিলির চরম ভয়াবহ পথ বেছে নেয়নি। এর একটি কারণ হতে পারে তারা গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভিত ছিল। কারণ ২০০৭-র আগষ্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রবলভাবে ফুঁসে ওঠা সামরিক কর্মকর্তাদের ভিন্নভাবে ভাবতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তারা একটি পক্ষের সঙ্গে আপোষের চেষ্টা চালায় এবং শেষ পর্যন্ত সে প্রচেষ্টা সফলতা অর্জন করে। সেই আপোষের ফলশ্রুতি হল ২০০৮-র ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং তার অবিশ্বাস্য ফলাফল। যাহোক, বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে হোঁচট খেলেও কিংবা বিরতি নিলেও সেই প্রক্রিয়া থেমে গেছে বলে যদি কেউ মনে করে তাহলে মহাভুল করবে। কারণ মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সাম্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। যতদিন সেই লক্ষ্যে ওরা পৌঁছাতে না পারবে ততদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভানুমতির খেলা চলতে থাকবে। একের পর এক অভাবনীয় ইস্যু সৃষ্টি এবং উস্কানিমূলক কর্মকান্ড রাজনৈতিক পরিবেশকে বিষিয়ে তুলবে এবং এরই পথ ধরে আরেকটি ১১ জানুয়ারি ঘটানোর জন্য কোনো মহলের পাঁয়তারা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিরাজনীতিকরণের এইসব ষড়যন্ত্রকে একটি মাত্র উপায়ে প্রতিহত করা সম্ভব। আর সেটি হলো রাজনীতিকে আরও গভীর থেকে গভীরতর করা, ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর করা। রাজনীতিকে গভীর ও ব্যাপক করার কথা কেন উঠছে? উঠছে এই কারণে যে, স্বাধীনতা-উত্তর রাজনীতিতে বিশেষ করে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরাজনীতিকরণের ধারা ক্রমে প্রবল হয়েছে। স্বাধীনতা পূর্বকালে রাজনৈতিক দলে যে আদর্শবাদিতা ছিল সেই আদর্শবাদিতা যেন কর্পূরের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে থাকল। তার জায়গা দখল করে নিল সুবিধাবাদ, লোভ এবং অপরিণামদর্শিতা। এর সবই ঘটেছে খোদ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চালু হওয়া বিরাজনীতিকরণের কালচারের ফলে। এখন রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিংয়ে অনেক স্লোগানই উচ্চারিত হয়; কিন্তু এর কতটা বিশ্বাস ও উপলব্ধি থেকে আর কতটা বিশেষ কোনো ফায়দা হাসিলের জন্য তা বুঝে ওঠা মুশকিল। এখন কোনো গবেষক যদি একটি রাজনৈতিক দলের কাছে তার বিভিন্ন কমিটি মিটিংয়ের আলোচ্য বিষয় এবং সিদ্ধান্তবলি জানতে চান তাহলে হয়ত দেখা যাবে কোনো রাজনৈতিক দলই সেসব দলিল-দস্তাবেজ দেখাতে সমর্থ হবে না। ইতিহাস চেতনার অভাবে রাজনৈতিক দলগুলো সভার প্রস্তাব, আলোচনার বিষয়বস্তু এবং সিদ্ধান্তগুলো যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে না। অথচ আজকের দিনে প্রযুক্তিগত সুবিধার ফলে এই কাজটি অতীতের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন সভায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সভ্যের বক্তব্য অডিও-ভিডিও পদ্ধতিতে ধারণ করে রাখা সম্ভব। ১৯৪৭-র আগে ভারতের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের দলিল-দস্তাবেজ যেভাবে লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষিত হয়েছে তা দেখতে রীতিমত অবাক লাগে। এখন বিশাল ভলিউম আকারে এসব দলিল-দস্তাবেজ গ্রন্হাগারে পাওয়া যায়। নামকরা নেতা-নেত্রীদের চিঠিপত্রের সঙ্কলনও রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেয়। যতদিন ব্রিটিশ শাসকরা ছিল, ততদিন এই চমৎকার কালচারটি অব্যাহত ছিল; কিন্তু ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর অর্থাৎ ১৯৪৭-র পর এ ধরনের চর্চা বিলোপ হতে শুরু করে। একথাটি পাকিস্তানের মুসলিম লীগের ক্ষেত্রে যেমন সত্য, ভারতের কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও অনেকাংশে সত্য। অবশ্য ভারতের কমিউনিষ্টরা এবং পাকিস্তানের দক্ষিণপন্হী দল জামাতে ইসলামী দলের দলিল-দস্তাবেজ সংরক্ষণে অনেক বেশি নিষ্ঠা ও একাগ্রতার পরিচয় দিয়েছে। এসব দেখে একটি হাইপোথিসিস মনে জাগে। দেখা গেছে, কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মতো দল যখন ক্ষমতায় চলে যায় এবং তাদেরকে ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংগ্রাম করতে হয় না, তখনি দেখা যায় সব ধরনের শৈথিল্য, সুবিধাবাদিতা ও নীতিভ্রষ্টতা। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরাজনীতিকরণ ঘটছে অপর একটি প্রক্রিয়ায়। সেটি হলো কোনো রাজনৈতিক ইস্যু বা সমস্যা নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর আলোচনা-পর্যালোচনা বা ডিসকোর্সের কোনো চর্চা নেই। অথচ একবিংশ শতাব্ধীর এই পৃথিবীতে নতুন নতুন এমন সব বিষয়ের অবতারণা ঘটছে যে, নিরন্তর চিন্তাচর্চা না করে এসব বিষয়ের কোনো অর্থ করাই মুশকিল। যেমন ধরুন বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা, দোহা রাউন্ড, ইউএন কনফারেন্স অন দি 'ল' অব দ্য সিজ, ক্লাইমেট চেঞ্জ, গ্লোবাল কমন্স, ফ্রি মার্কেট ইকনোমি, গ্লোবালাইজেশন, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট এগ্রিমেন্ট ফ্রেময়ার্ক, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির বিবরণ, সরকারের শিল্পনীতি, কৃষিনীতি, শ্রমনীতি, শিক্ষানীতি, বাজেট, উন্নয়ন কৌশল দলিল, বিশ্ব রাজনীতিতে বিভিন্ন পরাশক্তির ভূমিকা, অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও ট্রিটি, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক গতিপ্রবাহ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মেনিফেষ্টো ও আদর্শ, রাজনীতিতে বিভিন্ন মতাদর্শের সংজ্ঞা ও বিশ্লেষণসহ বহুবিধ বিষয় আছে যেগুলো সম্পর্কে নেতাসহ কর্মী পর্যন্ত সকলের বিশদ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কেবলমাত্র তাহলেই সচেতনভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব হবে। একটা সময় ছিল যখন ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে এ ধরনের চর্চা ব্যাপকভাবে হতো। এখন কী ছাত্র সংগঠন, কী শ্রমিক সংগঠন, কী কৃষক সংগঠন এমনকি মূল রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের মধ্যেও এ ধরনের চর্চা নেই বললেই চলে। ফলে রাজনীতিতে বিচারবুদ্ধি ও সুস্থ যুক্তিতর্কের কোনো অবকাশ থাকে না। এভাবে চেতনাহীন রাজনীতি হয়ে ওঠে ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার। উপদলে বিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলতে থাকে নানা মাত্রার সংঘাত ও কোন্দল। পরিস্থিতি এমন হয়ে উঠতে পারে যে, রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে। একেই বলে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া। এই বিরাজনীতিকরণের মধ্য দিয়ে দলে সুবিধাবাদী ও মাস্তানদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। আমরা যখন দেখি আদর্শগত বা রাজনৈতিক কোনো কারণ নেই, অথচ একটি দলের মধ্যে নেতৃত্বের জন্য কোন্দল অব্যাহত আছে, তখন আমাদের ভেবে দেখতে হয় কেন এসব কোন্দল। আদর্শগত ও রাজনৈতিক কারণ যদি না থাকে তাহলে বুঝতে হবে বৈষয়িক চাওয়া-পাওয়ার কারণে এসব ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে যেসব রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে, কিংবা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে, কিংবা আগামীদিনে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেসব দলের ক্ষেত্রে কোন্দল ঘটে প্রধানত ব্যক্তিস্বার্থকে কেন্দ্র করে। রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হলো সম্পদ বণ্টন ও সম্পদ আহরণ নিয়ে। আমাদের মতো দেশে সম্পদ বণ্টন ও আহরণে রাষ্ট্রশক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এসব রাজনৈতিক দলে যখন কোন্দলের উৎপত্তি হয় তখন বুঝতে হবে মহৎ কোনো কারণে নয়, জাতীয় সম্পদের একটি টুকরো হস্তগত করার লক্ষ্য থেকেই কোন্দলে প্রবৃত্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। কোন্দল কিসের জন্য? মূলত নেতৃত্বের ক্ষমতা অর্জনের জন্য। নেতৃত্বের ক্ষমতা অর্জন করলে সম্পদের টুকরোর পরিমাণটি একটু বাড়ানো যায় বৈকি! দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী ও আন্তরিক নেতৃত্বকে এসব বিষয় মনে রাখতে হবে। তবে অনেক সময় কোন্দলের ওপর ভর করে আধিপত্যবাদী শক্তিও ফায়দা লুটতে চায়। সে ব্যাপারেও সজাগ থাকা বাঞ্ছনীয়।
লেখক : অধ্যাপক, ডেভেলপমেন্ট ষ্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
No comments