কাউন্সিলর মুন্নিকে 'অস্বাভাবিক জামিন' দিয়ে বিপদে ওসি! by রফিকুল বাহার
আওয়ামী লীগের নেত্রী ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নিকে জামিন অযোগ্য ধারার মামলায় জামিন দেওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি নূর নবীকে শোকজ করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোমতাসির আহমেদের আদালত এ শোকজ করে আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওসিকে সশরীরে হাজির হয়ে শোকজের জবাব দিতে হবে।
মামলার বাকি ১৭ আসামিকে আদালত জেলহাজতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলায় রহস্যজনকভাবেই মুন্নিকে আসামি করা হয়নি। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মালিকানাধীন প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের ৩৪ শতাংশ জমিতে ভবন নির্মাণের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৩, ৪৪৭, ৩২৩, ৩৩২, ৩৫৩, ৩৭৯, ৪২৭ ও ৫০৫ ধারায় একটি মামলা করেন জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা। মামলা দায়েরের পর পুলিশ মু্ন্নিকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর 'অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে' মুচলেকা নিয়ে থানা থেকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। জামিন দেওয়ার সময় শুক্রবার আদালতে হাজির হতে বলা হয়। এ মামলার ৩৫৩ ও ৩৭৯ ধারা জামিন অযোগ্য বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুম চৌধুরী। এই দুই ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছর করে ছয় বছরের কারাদণ্ড।
আদালত অঙ্গনের একটি সূত্র জানায়, সরকারি ছুটির দিনে আদালতে হাজির হওয়ার মুচলেকা নিয়ে কাউকে জামিন দেওয়ার এখতিয়ার থানার ওসির নেই। প্রথা অনুযায়ী মৃত্যুশয্যাশায়ী কোনো আসামিকে সাধারণত এ ধরনের জামিন দেওয়া হয়।
জামিনের ব্যাপারে জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি নূর নবী বলেন, 'আইনে আমাকে সেই এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। মাইগ্রেন রোগে অসুস্থ রোগীকে জামিন দেওয়া যায়।' রাজনৈতিক চাপেই এই ধরনের জামিন দিতে বাধ্য হয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কোনো চাপ ছিল না। যার যার ভূমিকা সে সে পালন করেছে।' ওসি অসুস্থতার যুক্তি দেখালেও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্নিকে প্রকাশ্যে রাজপথে জেলা পরিষদের ঠিকাদারের সঙ্গে বাদানুবাদ করতে দেখেছেন সংবাদকর্মীরা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওসি 'হা হা' করে হেসে ওঠেন।
নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সরকারি জমি লিজ নিয়েছিল ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ফেরদৌস বেগম মুন্নির পরিবার। লিজের শর্ত ভঙ্গ করায় সেটি বাতিল করা হয়। বাতিলের পর অবৈধ দখল নিয়ে ৩০-৩৫টি দোকান গড়ে সেগুলো থেকে নিয়মিত ভাড়া আদায় করতেন মুন্নি। ওয়ান-ইলেভেনের পর এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুন্নি পুনরায় সেখানে অবৈধভাবে দোকান তৈরি করে ভাড়া আদায় করছিলেন। প্রায় ১৪ মাস আগে আদালত থেকে উচ্ছেদ আদেশ নিয়ে মুন্নির গড়া স্থাপনা ভেঙে ফেলে জেলা পরিষদ সেখানে ভবন তৈরির কাজে হাত দেয়। এই ভবনে ৩০ জনকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে তাদের কাছ থেকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সৈয়দা সারওয়ার জাহান গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সরকারি জায়গা উদ্ধার করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণের জন্য আদালত ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তারপরও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্নি দফায় দফায় বাধা দিচ্ছিলেন। তাঁর এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। মুন্নির তরফ থেকে দায়ের করা অসংখ্য মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে জেলা পরিষদের পক্ষেই। এ সংক্রান্ত সব নথি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। তারপরও নির্মাণকাজে অবৈধভাবে বাধা দিচ্ছেন তিনি।'
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সংরক্ষিত ১, ২, ৩) ফেরদৌস বেগম মুন্নির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাকে অহেতুক হয়রানি করছে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী। জেলা পরিষদের জায়গা বলে দাবি করা হলেও প্রকৃত মালিক হলো গণপূর্ত বিভাগ ও বাংলাদেশ অঙ্েিজন কম্পানি। এই মহিলা (জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী) এ জায়গা নিয়ে এত আগ্রহ দেখাচ্ছেন কেন? তিনি বেশি বাড়াবাড়ি করছেন।' এ জমি সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হেরে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, 'সব মিথ্যে কথা। তারা বাঁচার জন্য এসব কথা বলছে।'
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ফেরদৌস বেগম মুন্নির সঙ্গে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরোধ বাধে। সেই সময় মুন্নির পক্ষে মহিউদ্দিনবিরোধীরা শক্ত অবস্থান নেয়। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দলীয় কোন্দলের প্রভাব রয়েছে বলে অনেকেই অনুমান করেন।
মুন্নিকে থানা থেকে আনতে গিয়েছিলেন প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি। তিনি গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জেলা পরিষদ ভবন নির্মাণের আগে সিডিএ কিংবা সিটি করপোরেশন থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন নেননি। কেউই আইনের ঊধর্ে্ব নয়। সহকর্মী হিসেবে বর্তমান মেয়র মঞ্জুর আলম মঞ্জু ও মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিনের সঙ্গে কথা বলে থানা থেকে মুন্নিকে জামিন নিয়ে এসেছি।'
চট্টগ্রাম নগরীতে নানা কারণেই ব্যাপক আলোচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নি। ওয়ান-ইলেভেনের সময় নগরীতে এক শিল্পপতির সঙ্গে পানাহার করা অবস্থায় খুলশি থানা পুলিশ মুন্নিকে আটক করে থানায় নিয়ে পরে ছেড়ে দেয়।
আদালত অঙ্গনের একটি সূত্র জানায়, সরকারি ছুটির দিনে আদালতে হাজির হওয়ার মুচলেকা নিয়ে কাউকে জামিন দেওয়ার এখতিয়ার থানার ওসির নেই। প্রথা অনুযায়ী মৃত্যুশয্যাশায়ী কোনো আসামিকে সাধারণত এ ধরনের জামিন দেওয়া হয়।
জামিনের ব্যাপারে জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি নূর নবী বলেন, 'আইনে আমাকে সেই এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। মাইগ্রেন রোগে অসুস্থ রোগীকে জামিন দেওয়া যায়।' রাজনৈতিক চাপেই এই ধরনের জামিন দিতে বাধ্য হয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কোনো চাপ ছিল না। যার যার ভূমিকা সে সে পালন করেছে।' ওসি অসুস্থতার যুক্তি দেখালেও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্নিকে প্রকাশ্যে রাজপথে জেলা পরিষদের ঠিকাদারের সঙ্গে বাদানুবাদ করতে দেখেছেন সংবাদকর্মীরা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওসি 'হা হা' করে হেসে ওঠেন।
নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সরকারি জমি লিজ নিয়েছিল ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ফেরদৌস বেগম মুন্নির পরিবার। লিজের শর্ত ভঙ্গ করায় সেটি বাতিল করা হয়। বাতিলের পর অবৈধ দখল নিয়ে ৩০-৩৫টি দোকান গড়ে সেগুলো থেকে নিয়মিত ভাড়া আদায় করতেন মুন্নি। ওয়ান-ইলেভেনের পর এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুন্নি পুনরায় সেখানে অবৈধভাবে দোকান তৈরি করে ভাড়া আদায় করছিলেন। প্রায় ১৪ মাস আগে আদালত থেকে উচ্ছেদ আদেশ নিয়ে মুন্নির গড়া স্থাপনা ভেঙে ফেলে জেলা পরিষদ সেখানে ভবন তৈরির কাজে হাত দেয়। এই ভবনে ৩০ জনকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে তাদের কাছ থেকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সৈয়দা সারওয়ার জাহান গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সরকারি জায়গা উদ্ধার করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণের জন্য আদালত ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তারপরও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্নি দফায় দফায় বাধা দিচ্ছিলেন। তাঁর এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। মুন্নির তরফ থেকে দায়ের করা অসংখ্য মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে জেলা পরিষদের পক্ষেই। এ সংক্রান্ত সব নথি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। তারপরও নির্মাণকাজে অবৈধভাবে বাধা দিচ্ছেন তিনি।'
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সংরক্ষিত ১, ২, ৩) ফেরদৌস বেগম মুন্নির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাকে অহেতুক হয়রানি করছে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী। জেলা পরিষদের জায়গা বলে দাবি করা হলেও প্রকৃত মালিক হলো গণপূর্ত বিভাগ ও বাংলাদেশ অঙ্েিজন কম্পানি। এই মহিলা (জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী) এ জায়গা নিয়ে এত আগ্রহ দেখাচ্ছেন কেন? তিনি বেশি বাড়াবাড়ি করছেন।' এ জমি সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হেরে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, 'সব মিথ্যে কথা। তারা বাঁচার জন্য এসব কথা বলছে।'
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ফেরদৌস বেগম মুন্নির সঙ্গে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরোধ বাধে। সেই সময় মুন্নির পক্ষে মহিউদ্দিনবিরোধীরা শক্ত অবস্থান নেয়। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দলীয় কোন্দলের প্রভাব রয়েছে বলে অনেকেই অনুমান করেন।
মুন্নিকে থানা থেকে আনতে গিয়েছিলেন প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি। তিনি গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জেলা পরিষদ ভবন নির্মাণের আগে সিডিএ কিংবা সিটি করপোরেশন থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন নেননি। কেউই আইনের ঊধর্ে্ব নয়। সহকর্মী হিসেবে বর্তমান মেয়র মঞ্জুর আলম মঞ্জু ও মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিনের সঙ্গে কথা বলে থানা থেকে মুন্নিকে জামিন নিয়ে এসেছি।'
চট্টগ্রাম নগরীতে নানা কারণেই ব্যাপক আলোচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস বেগম মুন্নি। ওয়ান-ইলেভেনের সময় নগরীতে এক শিল্পপতির সঙ্গে পানাহার করা অবস্থায় খুলশি থানা পুলিশ মুন্নিকে আটক করে থানায় নিয়ে পরে ছেড়ে দেয়।
No comments