রোবট মাছ ঘুরে বেড়াবে সাগরতলে
এমআইটির গবেষকরা এমন রোবট মাছ তৈরি করেছেন, যা সমুদ্রের তলদেশ থেকে নানা রকম তথ্য পাঠাবে। এতে সামুদ্রিক গবেষণার নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিচরণ করা সম্ভব হবে বলেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। খবর বিবিসি অনলাইনের। সংবাদ সংস্থার বরাতে জানা গেছে, সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্র, স্রোত এবং স্রোতের স্বভাব, সমুদ্রের পানির দূষণ, তেল ও গ্যাস পাইপলাইন সার্ভেসহ নানা কাজে লাগানো যাবে।
এমআইটির ইঞ্জিনিয়াররা প্রথম রোবট মাছ বানানোর প্রায় ১৫ বছর পর এখন পর্যন্ত সর্বশেষ সংস্করণের নতুন এ মাছ তৈরির কথা জানালেন। নতুন যে 'প্রজাতির' মাছ ডিজাইন করা হয়েছে, সেটি যথেষ্ট পাতলা এবং পানিতে সাধারণ মাছের মতোই বিচরণ করতে সক্ষম। এমআইটির এক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পাবলো ভালদিভিয়া এলভারাডো বলেন, 'এই মাছ এমন জায়গাতেও জরিপ চালাতে সক্ষম, যেখানে আগের বানানো রোবটিক যানগুলোতে যেতে পারত না।' এলভারাডো আরও জানিয়েছেন, 'এই মাছ বানানোর খরচ এত কম যে, আমাদের এ গবেষণার সপন্সররা নানা কাজে এটি ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। যেমন ধরুন দুই থেকে পাঁচশ' মাছ কোনো একটি উপসাগরে ছেড়ে দেয়া হলো। তারপর সেগুলো ঘুরে ঘুরে সাগরতলের মাপজোঁক নিয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পাঠাতে শুরু করল।' ১৯৯৪ সালে এমআইটি প্রথম রোবট মাছ বানায়। এর নাম দেয়া হয়েছিল 'রোবটুনা'। তবে রোবটুনার পরিণতি হয়েছিল ডায়নোসরের মতো। অবশ্য এবার এলভারাডো জানিয়েছেন, 'নতুন মাছগুলো বানাতে মাত্র কয়েকশ' ডলার খরচ হবে এবং এগুলোর মূল অংশ ১০টি, যেখানে রোবটুনার ছিল প্রায় হাজারখানেক।' সূত্রটি জানিয়েছে, এই মাছগুলোর আকার হবে ৫ থেকে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত এবং একটি পলিমার বডির ভেতর এর যন্ত্রাংশগুলো থাকবে। এলভারাডো বলেন, 'পুরো মাছের শরীর পলিমার দিয়ে ঢাকা থাকার কারণে ওয়াটারপ্রুফ হওয়ায় এ মাছগুলো সমুদ্রেও ছাড়া যাবে।' আরেক গবেষক কামাল ইউসেফ টওমি বলেন, গবেষণাকালে এ মাছগুলোকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। পুরো দু'বছর এরা ছিল পানির ট্যাংকে এবং সেটি ট্যাপের পানি দিয়ে পূর্ণ ছিল। এমআইটিতে এই গবেষণার অর্থ যোগান দেয় তেল কোম্পানি স্লামবার্জার। তবে এলভারাডো বলেন, আমেরিকান নেভি সাগর প্রতিরক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
No comments