যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক: মধ্যপ্রাচ্য সংকট এড়িয়ে গেলেন ওয়ালজ ও ভ্যান্স
এতে বলা হয়, এই দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচনী প্রচারাভিযানে পরস্পরকে তীব্র ভাবে আক্রমণ করলেও, বিতর্কে তাদের মনোভাব ছিল উষ্ণ। তারা বরঞ্চ তীব্র আক্রমণের বিষয়টি যেন তাদের নির্বাচনী টিকিটের সর্বোচ্চ প্রার্থী ডেমোক্রেটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জন্য রেখে দিলেন।
নিউ ইয়র্কের সিবিএস ব্রডকাস্টিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই বিতর্কের শুরুতেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলের অব্যাহত আক্রমণ এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের পর মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সংকট প্রসঙ্গটি আসে। ওয়ালজ বলেন ট্রাম্প অনেক বেশি ‘নড়বড়ে’ এ ব্যাপারে। তবে ভ্যান্স জোর দিয়েই বলেন, ট্রাম্প তার আমলে বিশ্বকে আরও বেশি নিরাপদ করে গেছেন।
ভ্যান্স প্রশ্ন করেন হ্যারিস কেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি, অভিবাসন ও অর্থনীতির দিকে নজর দেননি। ভ্যান্স বলেন, মধ্যবিত্তের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কমালা হ্যারিসের যদি এত মহৎ পরিকল্পনা থাকে, তাহলে যে কাজটি তাকে আমেরিকান জনগণ সাড়ে তিন বছর আগেই দিয়েছিলেন তার উচিত ছিল এখনই তা সম্পন্ন করা।
ওয়ালজ ট্রাম্পকে অস্থিতিশীল নেতা বলে বর্ণনা করেন যিনি কোটিপতিদেরই কেবল অগ্রাধিকার দিয়েছেন এবং অভিবাসন সম্পর্কে ভ্যান্সের সমালোচনা তাকে ফিরিয়ে দিয়ে এ বছর আরও আগে সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে দ্বিদলীয় প্রস্তাব পরিহার করতে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য তিনি ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন। অভিবাসন সম্পর্কে ওয়ালজ বলেন, আমরা, অধিকাংশ লোকই এর সমাধান করতে চাই। এটি করার জন্য ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চার বছর সময় ছিল, এবং তিনি আপনাদের, আমেরিকানদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিষয়টা কতোখানি সহজ হবে।
যখন জানতে চাওয়া হয় যে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন করবেন কিনা, জবাবে ভ্যান্স বলেন, বিষয়টি তিনি ইসরাইলের বিবেচনার জন্য রাখবেন, তবে ওয়ালজ এই প্রশ্নের কোনো সরাসরি উত্তর দেননি। ৬০ বছর বয়সী ওয়ালজ হচ্ছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের লিবারেল গভর্নর ও হাই স্কুলের একজন সাবেক শিক্ষক এবং ৪০ বছর বয়সী ভ্যান্স হচ্ছেন একজন জনপ্রিয় লেখক এবং ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনেটর। তারা উভয়ই নিজেদের আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের সন্তান হিসেবে তুলে ধরেন। তবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি গভীর ভাবে পরস্পরবিরোধী।
৫ই নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এই শেষ বিতর্কে উভয় প্রতিপক্ষ পরস্পরকে লক্ষ্যবস্তু করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্টদের বিতর্ক খুব উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে কিন্তু তা নির্বাচনের ফলাফলে তেমন কোনো পরিবর্তন আনে না। তবে তা সত্ত্বেও জনগণের মতামতের সামান্য পরিবর্তনও পাঁচ সপ্তাহ আগে এই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে পাল্টে দিতে পারে।
No comments