‘শর্ত পূরণ না হলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নয়’
শর্ত পূরণ না হলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন
করবে না বিশ্বব্যাংক। পরিষ্কার করে এ ঘোষণা দিয়েছেন এবার বিশ্বব্যাংক
প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
তিনি বলেছেন, আইনগত এবং এ
সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় যেহেতু তার নিজের মতো করে চলবে সেহেতু এ ক্ষেত্রে
আমার বাধা দেয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, যদি পদ্মা সেতু প্রকল্পে নজরদারি
বাড়ানো না হয় এবং দুর্নীতির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নিশ্চয়তা সহ
সুনির্দিষ্ট শর্তগুলো পূরণ করা না হয় তাহলে এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন
করতে পারে না। আমরা জানি এ সেতুটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ও
অর্থনীতির জন্য কতটা গুরুত্ব বহন করে। জিম ইয়ং কিম ৩০শে জানুয়ারি
ওয়াশিংটনে এক ভাষণে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার পদ্মা সেতু
প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে পর্যাপ্ত সাড়া দেয় নি। এর ফলে বিশ্বব্যাংক ১২০
কোটি ডলারের প্রকল্প গত বছর জুনে বাতিল করে। ওয়াশিংটনে ৩০শে জানুয়ারি তিনি
‘এন্টি-করাপশন ইফোর্টস ইন এ গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট: এ কমিটমেন্ট টু অ্যাক্ট’
শীর্ষক ওই বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির বিষয়ে জিরো
টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এই ব্যাংকের
প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, আমাদেরকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মোকাবিলার
জন্য চোখ খোলা রাখতে হবে এবং যতটা আমরা পারি ততটা ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা
করবো। বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব ওয়েব সাইটে জিম ইয়ং কিমের ওই বক্তব্য প্রকাশ
করা হয়েছে। দীর্ঘ ওই বক্তব্যে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি বছর ২০০০
থেকে ৪০০০ কোটি ডলার লুটপাট হয়। এতে তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
বলেন, আমরা কঠিন অবস্থা ও ঝুঁকির মধ্যে কাজ করি। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের
প্রকল্পে ও কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। আমি জোর গলায়, পরিষ্কার
করে বলতে চাই যখনই আমাদের কোন প্রকল্পে বা কর্মকাণ্ডে কোন দুর্নীতি ধরা পড়ে
তখনই আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করি। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের বহুল
কাঙ্খিত পদ্মাসেতুর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, এই সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির
প্রমাণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত সাড়া দেয় নি। তাই আমরা গত বছরের
জুনে এ প্রকল্পের ১২০ কোটি ডলার ঋণ বাতিল করি। তারপরও এখন পর্যন্ত আমরা
বাংলাদেশে কাজ করছি। বর্তমানে বাংলাদেশে আমাদের ৩০টির বেশি প্রকল্পে কাজ
হচ্ছে। এগুলো প্রায় ৪৩০ কোটি ডলারের প্রকল্প। দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের জিরো
টলারেন্স নীতি গ্রহণ মানে এই নয় যে আমরা তার জন্য ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা
বাস্তবায়নকে অস্বীকার করবো।
No comments