মুহাম্মাদুর রাসূলের (সা.) প্রতি ভালোবাসা by মুফতি মাহফূযুল হক
ভালোবাসা কখনও হয় স্বভাবজাত আবার কখনও বিবেকপ্রসূত। কোলের অবুঝ শিশু মাকে কাছে পেয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে যে আবেগ প্রকাশ করে তা স্বভাবজাত অপরিকল্পিত ভালোবাসা থেকেই হয়। ছাত্র তার শিক্ষকের প্রতি যে বিনয়ী হয় তা বিবেকপ্রসূত পরিকল্পিত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
অনেক সময় বিবেকপ্রসূত ভালোবাসা অধিক চর্চার ফলে স্বভাবজাত ভালোবাসায় পরিবর্তিত হয়। শুধু এ পর্যন্তই নয়, বরং কখনও কখনও আরও গভীর ও শক্ত হয়ে স্বভাবজাত ভালোবাসাকে হার মানায়। মানুষ মাত্রই কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে ভালোবাসে। শিশু-বৃদ্ধ, ধনী-দরিদ্র শিক্ষিত-মূর্খ, শহুরে-গ্রাম্য সবাই কাউকে বা কোনো কিছুকে ভালোবাসে। এ থেকে নির্লিপ্ত কেউ নেই। তবে সব যুগের এবং সব স্থানের মুসলমানরা ভালোবাসেন মুহাম্মাদুর রাসূল (সা.)কে। এ ভালোবাসা মুসলমানের ইমানের অংশ এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইমাম বুখারি (রহ.) সাহাবি আনাসের (রা.) উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করেছেন আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কারও কাছে তার পিতা, সন্তান এমনকি সব মানুষ অপেক্ষা আমি অধিক প্রিয় হবো তখন সে মুসলমান হবে। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, মুহাম্মাদুর রাসূল (সা.)কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা মুমিন-মুসলমান হওয়ার পূর্বশর্ত। তবে এর অর্থ এটি নয় যে, সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, পিতা, মাতা, জন্মভূমি, বংশ, নিজের জান ইত্যাদির ভালোবাসা মনে রাখা যাবে না, বরং এদের যথাযথ ভালোবাসা একজন মুসলমানের ধর্মীয় দায়িত্ব। সে কখনোই এসব ভালোবাসাকে অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু তাকে সতর্ক থাকতে হবে যে, এসব ভালোবাসা যেন কখনও মুহাম্মাদুর রাসূলের (সা.) প্রতি ভালোবাসাকে পরাজিত না করে। একজন মুসলমান দেশকে অবশ্যই ভালোবাসবে; কিন্তু এ কথা বলতে পারে না, আমার কাছে দেশ সবচেয়ে বড়, দেশকে আমি সবচেয়ে ভালোবাসি। একজন মুসলমান অবশ্যই তার স্ত্রীকে ভালোবাসবে; কিন্তু একথা বলতে পারে না, তুমি আমার কাছে সবচেয়ে আপন। ভালোবাসার সর্বোচ্চ ও সর্বশেষ আসনটি একমাত্র মুহাম্মাদুর রাসূলের (সা.) জন্য।
মনে রাখতে হবে, মুহাম্মাদুর রাসূল (সা.)কে ভালোবাসার প্রমাণ হলো তার আদর্শে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের অব্যাহত সাধনা। তাকে ভালোবাসা-গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি হলেন সাহাবিরা। যে কাজ তারা কেউ করেননি এমন কোনো কাজ শেষ নবীর প্রেমে করলেও অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তাঁর ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়ে ভুলে যাওয়া যাবে না যে, তিনি আল্লাহর জাতের অংশ নয়, আল্লাহর নূরের অংশ নয়, তিনি আল্লাহ থেকে ভিন্ন। শুধু তা-ই নয়, বরং তিনি আল্লাহর দাস ও একজন মানুষ। অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ, সব কাজে সুন্নতের অনুসরণ এবং শেষ নবীর আলোচনা সর্বত্র করা_ এ তিন কাজের দ্বারা মুহাম্মাদুর রাসূলের (সা.) প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
mrmahfuz45@gmail.com
মনে রাখতে হবে, মুহাম্মাদুর রাসূল (সা.)কে ভালোবাসার প্রমাণ হলো তার আদর্শে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের অব্যাহত সাধনা। তাকে ভালোবাসা-গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি হলেন সাহাবিরা। যে কাজ তারা কেউ করেননি এমন কোনো কাজ শেষ নবীর প্রেমে করলেও অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তাঁর ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়ে ভুলে যাওয়া যাবে না যে, তিনি আল্লাহর জাতের অংশ নয়, আল্লাহর নূরের অংশ নয়, তিনি আল্লাহ থেকে ভিন্ন। শুধু তা-ই নয়, বরং তিনি আল্লাহর দাস ও একজন মানুষ। অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ, সব কাজে সুন্নতের অনুসরণ এবং শেষ নবীর আলোচনা সর্বত্র করা_ এ তিন কাজের দ্বারা মুহাম্মাদুর রাসূলের (সা.) প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
mrmahfuz45@gmail.com
No comments