প্রিয় নবীজির (সা.) প্রিয় শহর by জহির উদ্দিন বাবর
একজন মুসলমানের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় শহর মক্কা ও মদিনা। কারণ এ দুটি শহরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুসলমানদের প্রাণপ্রিয় নবীর (সা.) অজস্র স্মৃতি। এ জন্য সারাবিশ্বের মুসলমানের কেন্দ্রবিন্দু মক্কা ও মদিনা। আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহর কারণে মক্কা নিঃসন্দেহে মর্যাদার দিক থেকে শীর্ষে।
তবে মুসলমানদের আবেগ, ভালোবাসা ও অনুরাগ প্রশ্নে মদিনা তাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এ শহরেই শুয়ে আছেন দোজাহানের বাদশা, কোটি কোটি মুসলমানের প্রাণের স্পন্দন মহানবী (সা.)। রাসূলের জীবনের স্বর্ণোজ্জ্বল সময়টুকু কেটেছে মদিনায়। ইমান তার নিরাপদ আশ্রয়-আবাস খুঁজে পেয়েছিল মদিনার শীতল মরূদ্যানে। রাসূলের পদাঙ্কে উজ্জ্বল মদিনা একাধারে মোহাজির ও আনসারদের মিলনভূমি, মুসলমানদের প্রথম রাজধানী। এখানে উড্ডীন হয়েছিল আল্লাহর পথে জিহাদের ঝাণ্ডা।
শান্ত ও সি্নগ্ধতার আবেশে গড়ে ওঠা মদিনার পরিবেশ-প্রকৃতি যে কোনো মুসলমানের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এ শহরের বৈশিষ্ট্য আকৃষ্ট করে সবাইকে। মদিনায় গেছেন অথচ এ শহরের প্রেম ও ভালোলাগা তাকে ছুঁয়ে যায়নি_ এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সোনার মদিনার প্রতিটি ইট-পাথরও যেন সোনা দিয়ে বাঁধানো। এ শহরের প্রতিটি মানুষ যেন সোনার মানুষ। মদিনা শহরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে অপার্থিব এক ভালোলাগার আবেশে দেহ-মন জুড়িয়ে যায়। এ শহরেই শুয়ে আছেন প্রিয় নবীজি (সা.)। মসজিদে নববীর পাশেই জান্নাতুল বাকিতে শুয়ে আছেন হাজার হাজার সাহাবায়ে কেরাম। এত বড় নিয়ামত ও সৌভাগ্য পৃথিবীর আর কোনো শহর লাভ করেনি। এ জন্য বাহ্যিক চাকচিক্যে পৃথিবীর অনেক শহর আগন্তুকের দৃষ্টি কাড়তে পারে, কিন্তু মদিনার মতো এমন ভালোলাগা ও ভালোবাসার শহর দ্বিতীয়টি আর নেই।
আল মদিনা-আল মুনাওয়ারা অর্থ আলোকিত নগরী। এ শহরটি মদিনাতুর রাসূল বা রাসূলের (সা.) শহর হিসেবে পরিচিত। এর আগে তাইবাহ, ইয়াসরিব, দার আল হিজরা_ এসব নামে ডাকা হতো মদিনাকে। সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমে ও লোহিত সাগরের আগে এ নগরীর অবস্থান। পশ্চিমে আল হুজাজ পর্বত, উত্তর-পশ্চিমে সালা, দক্ষিণে আলইর ও উত্তরে ওহুদ পর্বত দিয়ে বেষ্টিত মদিনা। আল্লাহতায়ালা মক্কা নগরীকে যেভাবে হারাম তথা সম্মানিত ও নিরাপদ করেছেন; মদিনা নগরীকেও তেমনিভাবে হারাম ও নিরাপদ করেছেন। রাসূল (সা.) এই শহরের জন্য দোয়া করেছেন :'হে আল্লাহ! তুমি আমাদের ফল-ফলাদিতে বরকত দাও। আমাদের এ মদিনায় বরকত দাও। আমাদের ছা' পরিমাণ বস্তুতেও বরকত দাও। আমাদের মুদ পরিমাণ জিনিসেও বরকত দাও।' এ শহরে কখনও মহামারী ও দাজ্জাল প্রবেশ করবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন রাসূল (সা.)। তিনি বলেছেন, 'আমার এ মসজিদে এক সালাত আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে এক হাজার সালাত আদায় করার চেয়েও উত্তম।'
মদিনার কেন্দ্রবিন্দু হলো মসজিদে নববী। এ মসজিদ থেকেই ইসলামের বিশ্বযাত্রা শুরু হয়। প্রিয়নবী (সা.) প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইলের বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য পরিচালনা করেছেন এ মসজিদ থেকেই। তখন মসজিদে নববী আন্তর্জাতিক ইসলামী রাজধানীর ভূমিকা পালন করেছে। মসজিদে নববীতে প্রতি রাকাত নামাজে ৫০ হাজার সওয়াব পাওয়া যায়। হজ ও ওমরাহকারীরা মদিনায় অবস্থানকালে এ মসজিদে নামাজ আদায় করে পরম তৃপ্তি লাভ করেন।
মসজিদে নববী বা নবীজির মসজিদের বর্তমান আয়তন এক লাখ ৬৫ হাজার বর্গমিটার। এ মসজিদে একসঙ্গে ১০ লাখ মুসলি্ল নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজ, সুদৃশ্য মিনার, চলন্ত ছাদ, সুন্দর কারুকাজ, বিশাল আয়তন_ সবই আকৃষ্ট করার মতো। সম্প্রতি মদিনা শহরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার। এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় সম্প্র্রসারণ হচ্ছে মসজিদে নববী। সম্প্রসারণের এ কাজ শেষ হলে মসজিদে নববীতে একসঙ্গে ২৮ লাখ মুসলি্ল নামাজ পড়তে পারবেন। এ ছাড়া মসজিদে কুবা, কিবলাতাইন, জুমা, গামামা, আবু বকর, ওমর, আলী, সেজদা, ইমাম বুখারি প্রভৃতি মসজিদও রাসূলের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে আছে। এ শহরের অলিগলিতে হাঁটলে মনে হবে আমার প্রিয় রাসূল এ পথে হেঁটেছেন। কোনো না কোনো সাহাবির পদধূলিতে অবশ্যই ধন্য হয়েছে মদিনার পথঘাট। এ শহর রক্ষায় রাসূল (সা.) গায়ের রক্ত ঝরিয়েছেন। তাই নবীপ্রেমের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মদিনাপ্রেম। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এ শহরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করা।
zahirbabor@yahoo.com
শান্ত ও সি্নগ্ধতার আবেশে গড়ে ওঠা মদিনার পরিবেশ-প্রকৃতি যে কোনো মুসলমানের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এ শহরের বৈশিষ্ট্য আকৃষ্ট করে সবাইকে। মদিনায় গেছেন অথচ এ শহরের প্রেম ও ভালোলাগা তাকে ছুঁয়ে যায়নি_ এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সোনার মদিনার প্রতিটি ইট-পাথরও যেন সোনা দিয়ে বাঁধানো। এ শহরের প্রতিটি মানুষ যেন সোনার মানুষ। মদিনা শহরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে অপার্থিব এক ভালোলাগার আবেশে দেহ-মন জুড়িয়ে যায়। এ শহরেই শুয়ে আছেন প্রিয় নবীজি (সা.)। মসজিদে নববীর পাশেই জান্নাতুল বাকিতে শুয়ে আছেন হাজার হাজার সাহাবায়ে কেরাম। এত বড় নিয়ামত ও সৌভাগ্য পৃথিবীর আর কোনো শহর লাভ করেনি। এ জন্য বাহ্যিক চাকচিক্যে পৃথিবীর অনেক শহর আগন্তুকের দৃষ্টি কাড়তে পারে, কিন্তু মদিনার মতো এমন ভালোলাগা ও ভালোবাসার শহর দ্বিতীয়টি আর নেই।
আল মদিনা-আল মুনাওয়ারা অর্থ আলোকিত নগরী। এ শহরটি মদিনাতুর রাসূল বা রাসূলের (সা.) শহর হিসেবে পরিচিত। এর আগে তাইবাহ, ইয়াসরিব, দার আল হিজরা_ এসব নামে ডাকা হতো মদিনাকে। সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমে ও লোহিত সাগরের আগে এ নগরীর অবস্থান। পশ্চিমে আল হুজাজ পর্বত, উত্তর-পশ্চিমে সালা, দক্ষিণে আলইর ও উত্তরে ওহুদ পর্বত দিয়ে বেষ্টিত মদিনা। আল্লাহতায়ালা মক্কা নগরীকে যেভাবে হারাম তথা সম্মানিত ও নিরাপদ করেছেন; মদিনা নগরীকেও তেমনিভাবে হারাম ও নিরাপদ করেছেন। রাসূল (সা.) এই শহরের জন্য দোয়া করেছেন :'হে আল্লাহ! তুমি আমাদের ফল-ফলাদিতে বরকত দাও। আমাদের এ মদিনায় বরকত দাও। আমাদের ছা' পরিমাণ বস্তুতেও বরকত দাও। আমাদের মুদ পরিমাণ জিনিসেও বরকত দাও।' এ শহরে কখনও মহামারী ও দাজ্জাল প্রবেশ করবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন রাসূল (সা.)। তিনি বলেছেন, 'আমার এ মসজিদে এক সালাত আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে এক হাজার সালাত আদায় করার চেয়েও উত্তম।'
মদিনার কেন্দ্রবিন্দু হলো মসজিদে নববী। এ মসজিদ থেকেই ইসলামের বিশ্বযাত্রা শুরু হয়। প্রিয়নবী (সা.) প্রায় ১২ লাখ বর্গমাইলের বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য পরিচালনা করেছেন এ মসজিদ থেকেই। তখন মসজিদে নববী আন্তর্জাতিক ইসলামী রাজধানীর ভূমিকা পালন করেছে। মসজিদে নববীতে প্রতি রাকাত নামাজে ৫০ হাজার সওয়াব পাওয়া যায়। হজ ও ওমরাহকারীরা মদিনায় অবস্থানকালে এ মসজিদে নামাজ আদায় করে পরম তৃপ্তি লাভ করেন।
মসজিদে নববী বা নবীজির মসজিদের বর্তমান আয়তন এক লাখ ৬৫ হাজার বর্গমিটার। এ মসজিদে একসঙ্গে ১০ লাখ মুসলি্ল নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজ, সুদৃশ্য মিনার, চলন্ত ছাদ, সুন্দর কারুকাজ, বিশাল আয়তন_ সবই আকৃষ্ট করার মতো। সম্প্রতি মদিনা শহরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার। এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় সম্প্র্রসারণ হচ্ছে মসজিদে নববী। সম্প্রসারণের এ কাজ শেষ হলে মসজিদে নববীতে একসঙ্গে ২৮ লাখ মুসলি্ল নামাজ পড়তে পারবেন। এ ছাড়া মসজিদে কুবা, কিবলাতাইন, জুমা, গামামা, আবু বকর, ওমর, আলী, সেজদা, ইমাম বুখারি প্রভৃতি মসজিদও রাসূলের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে আছে। এ শহরের অলিগলিতে হাঁটলে মনে হবে আমার প্রিয় রাসূল এ পথে হেঁটেছেন। কোনো না কোনো সাহাবির পদধূলিতে অবশ্যই ধন্য হয়েছে মদিনার পথঘাট। এ শহর রক্ষায় রাসূল (সা.) গায়ের রক্ত ঝরিয়েছেন। তাই নবীপ্রেমের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মদিনাপ্রেম। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এ শহরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করা।
zahirbabor@yahoo.com
No comments