আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নয় ভারতকে বলে দিল সরকার-জুলাইয়ের মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট আমদানি
চট্টগ্রামের
আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে না বলে ভারতকে জানিয়ে
দিল বাংলাদেশ সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং
কমিটির সভায় ভারতের বিদ্যুৎসচিব পি উমাশঙ্করকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ
সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।
সভায় ভারত থেকে আমদানি করা ২৫০ মেগাওয়াট
বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি চার টাকা ঠিক করা হয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের পাশে
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত
বিদ্যুতের ভারতীয় অংশের ওপর রাজস্ব মওকুফ চেয়েছেন দেশটির প্রতিনিধিদলের
সদস্যরা।
সভার পর সংবাদ সম্মেলনে ভারতের বিদ্যুৎসচিব জানান, ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আমদানি করা যাবে। তিনি জানান, ভারতের অংশে ভূমি উন্নয়নকাজ ৯০ শতাংশ, টাওয়ার ৬৫ শতাংশ, লাইন নির্মাণকাজ ৩০ শতাংশ ও সাবস্টেশন নির্মাণকাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। জুলাইয়ের আগেই কাজ শেষ হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ বিভাগের এমন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'উচ্চ আদালতে আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন থাকায় এ ব্যাপারে আদালতই করণীয় নির্ধারণ করবেন। এ কারণে ভারতীয় কম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেওয়া হচ্ছে না।' সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চীনের সঙ্গেও একটি সমঝোতা চুক্তি সইয়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আদালতের একই নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে সরকার আর এগোতে পারেনি।
গতকাল মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ারুল ইসলাম ও ভারতের বিদ্যুৎসচিব পি উমাশঙ্কর।
বিদ্যুৎসচিব মনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ সঞ্চালন খরচ ছাড়া প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে চার টাকা। তিনি বলেন, লাইন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে। সাবস্টেশন নির্মাণকাজ ৫৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে এর কাজ। সূত্র মতে, বাংলাদেশ ও ভারত অংশের সঞ্চালন লাইনসহ অন্যান্য কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায়।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় বিদ্যুৎসচিব পি উমাশঙ্কর বলেন, যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না রামপাল প্রকল্প থেকে। এখানে ব্যবহৃত কয়লায় সালফার উপাদান থাকবে অনেক কম। এ ছাড়া টাওয়ারের উচ্চতা হবে প্রায় পৌনে ৩০০ মিটার। তাই পরিবেশের এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
ভারতে না করে বাংলাদেশে কেন এই ক্ষতিকারক প্রকল্প করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় সচিব বলেন, ভারত পাঁচ বছরে ৬২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন প্লান্ট করেছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজারই কয়লাভিত্তিক। তাই কয়লা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চিমনি ২৭০ মিটার উঁচু হবে, যা ভারতের কুতুব মিনারের উচ্চতার সমান। এ কেন্দ্রটিতে আধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা থাকবে। ফলে কিছুতেই ক্ষতিকারক কিছু ছড়াবে না।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎসচিব মনোয়ারুল ইসলাম জানান, 'আজকে বসছে বোর্ড মিটিং। তার মানে ধরে নেওয়া যায়, আজকের দিনটি একটি মাইলফলক।' উন্নয়নের স্বার্থে বিষয়টিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান বিদ্যুৎসচিব। তিনি বলেন, 'আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি ছিলাম, আমি বিষয়টি ভালোভাবেই অবগত। এখানে ক্ষতিকারক কিছু হলে তা সংশোধন করা হবে।'
আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নয় : দুই দেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে সভায় ভারতকে 'না' বলে দিয়েছে বাংলাদেশ। কর্মকর্তারা জানান, পরিবেশ নষ্ট করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা থাকায় ভারতকে এ সিদ্ধান্ত জানাল সরকার।
সম্ভাব্যতা যাচাই না করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না বলে ইতিমধ্যে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ১৫ মে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি ফরিদ আহম্মেদের হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিমত দেন। রায়টির অবিকল সত্যায়িত নকল থেকে এ তথ্য জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আনোয়ারায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থবিষয়ক এই রিটটি করেছিল।
অন্যদিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে ভারতীয় কম্পানি এনটিপিসির। এই এনটিপিসির অংশের বিদ্যুতের ওপর রাজস্ব মওকুফ গতকাল আবার দাবি করল ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব মওকুফ করতে আগ্রহী নয়।
ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গত ডিসেম্বরের মধ্যেই আসার কথা ছিল। এর মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট দেবে ভারত সরকার। বাকি বিদ্যুৎ ভারতের 'ওপেন মার্কেট' থেকে কেনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার।
সভার পর সংবাদ সম্মেলনে ভারতের বিদ্যুৎসচিব জানান, ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আমদানি করা যাবে। তিনি জানান, ভারতের অংশে ভূমি উন্নয়নকাজ ৯০ শতাংশ, টাওয়ার ৬৫ শতাংশ, লাইন নির্মাণকাজ ৩০ শতাংশ ও সাবস্টেশন নির্মাণকাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। জুলাইয়ের আগেই কাজ শেষ হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ বিভাগের এমন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'উচ্চ আদালতে আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন থাকায় এ ব্যাপারে আদালতই করণীয় নির্ধারণ করবেন। এ কারণে ভারতীয় কম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেওয়া হচ্ছে না।' সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চীনের সঙ্গেও একটি সমঝোতা চুক্তি সইয়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আদালতের একই নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে সরকার আর এগোতে পারেনি।
গতকাল মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ারুল ইসলাম ও ভারতের বিদ্যুৎসচিব পি উমাশঙ্কর।
বিদ্যুৎসচিব মনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ সঞ্চালন খরচ ছাড়া প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে চার টাকা। তিনি বলেন, লাইন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে। সাবস্টেশন নির্মাণকাজ ৫৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে এর কাজ। সূত্র মতে, বাংলাদেশ ও ভারত অংশের সঞ্চালন লাইনসহ অন্যান্য কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায়।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় বিদ্যুৎসচিব পি উমাশঙ্কর বলেন, যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না রামপাল প্রকল্প থেকে। এখানে ব্যবহৃত কয়লায় সালফার উপাদান থাকবে অনেক কম। এ ছাড়া টাওয়ারের উচ্চতা হবে প্রায় পৌনে ৩০০ মিটার। তাই পরিবেশের এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
ভারতে না করে বাংলাদেশে কেন এই ক্ষতিকারক প্রকল্প করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় সচিব বলেন, ভারত পাঁচ বছরে ৬২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন প্লান্ট করেছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজারই কয়লাভিত্তিক। তাই কয়লা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চিমনি ২৭০ মিটার উঁচু হবে, যা ভারতের কুতুব মিনারের উচ্চতার সমান। এ কেন্দ্রটিতে আধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা থাকবে। ফলে কিছুতেই ক্ষতিকারক কিছু ছড়াবে না।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎসচিব মনোয়ারুল ইসলাম জানান, 'আজকে বসছে বোর্ড মিটিং। তার মানে ধরে নেওয়া যায়, আজকের দিনটি একটি মাইলফলক।' উন্নয়নের স্বার্থে বিষয়টিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান বিদ্যুৎসচিব। তিনি বলেন, 'আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি ছিলাম, আমি বিষয়টি ভালোভাবেই অবগত। এখানে ক্ষতিকারক কিছু হলে তা সংশোধন করা হবে।'
আনোয়ারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নয় : দুই দেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারায় কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে সভায় ভারতকে 'না' বলে দিয়েছে বাংলাদেশ। কর্মকর্তারা জানান, পরিবেশ নষ্ট করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা থাকায় ভারতকে এ সিদ্ধান্ত জানাল সরকার।
সম্ভাব্যতা যাচাই না করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না বলে ইতিমধ্যে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ১৫ মে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি ফরিদ আহম্মেদের হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিমত দেন। রায়টির অবিকল সত্যায়িত নকল থেকে এ তথ্য জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আনোয়ারায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থবিষয়ক এই রিটটি করেছিল।
অন্যদিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে ভারতীয় কম্পানি এনটিপিসির। এই এনটিপিসির অংশের বিদ্যুতের ওপর রাজস্ব মওকুফ গতকাল আবার দাবি করল ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব মওকুফ করতে আগ্রহী নয়।
ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গত ডিসেম্বরের মধ্যেই আসার কথা ছিল। এর মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট দেবে ভারত সরকার। বাকি বিদ্যুৎ ভারতের 'ওপেন মার্কেট' থেকে কেনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার।
No comments