ক্রমশ লজ্জাবতী by ময়ুখ চৌধুরী

একটুকু ছোঁয়া পেলে শরমে সে মরে যেতে চায়
পাতায় পাতায়।
নাম তার লজ্জাবতী
যদিও সে জেগে থাকে কাঁটার প্রহরী নিয়ে প্রতিটি প্রহর
বেগুনি রঙের শিহরণে। খুব সঙ্গোপনে
ছোঁয়াটুকু সরে গেলে দাউ দাউ জ্বলে ওঠে আরও,
নেশা ধরা কণ্ঠে বলে—
‘সকল আগুনে হাত পোড়ে না তো, ছুঁয়ে দেখতে পারো।’

২.
শোনো লজ্জাবতী,
আমিও নিলাম মেনে লেলিহান এই অগ্রগতি।
দশটি আঙুলে আমি বৃন্ত রচনা করে দেব,
পুষ্পের জায়গায় তুমি বসাও নিজের মুখখানি।
কাঁটার ব্যবস্থাপনা যদিও রেখেছ যথাযথ
নির্লজ্জ আঙুলগুলো তবু হতে পারে সরীসৃপ,
তারপর যথারীতি শিহরিত মোমের ঘটনা—
সারা রাত ধরে
মোমের শরীর থেকে ফোঁটা ফোঁটা শাদা রক্ত ঝরে।
রাত্রির গহ্বরটুকু আগুনের মতন উজ্জ্বল,
আলো আর অন্ধকারে তুমি একাকার।
এই ঘুম ভেঙে গেলে জানতে চেয়ো না—
ভোরের শিশিরমাখা নিহত আঙুলগুলো কার।

৩.
রাত্রির বাকল খুলে স্নানঘরে দাঁড়াবে যখন
জলের সংস্পর্শে তুমি পুনরায় পল্লবিত আগুনের শিখা।
পুড়ে যাবে দেহনদী, ডালপালা, অরণ্য পাহাড়;
তখন কোথায় পাবে মিসরীয় রাত্রির আহার!
জোনাকির আলো
মেধাবী রাতের শেষে যখন রঙিন মাছ আপাদমস্তক সাঁতরাল
তখন তো তুমি একা—সাজানো কুসুম।
সব কাঁটা গেঁথে নিয়ে যে তোমাকে করেছে রচনা,
—নিভে গেছে ইতিহাস, শিহরিত মোমের ঘটনা।

৪.
আবার রাতের বেলা জোনাকির মৃতদেহ ফিরে পায় আলো,
আবার আদিম অন্ধকারে
অগ্নিকা-ঘটে,
সমস্ত তল্লাটময় রটে—
প্রতি রাতে খুন হচ্ছে, পড়ে থাকছে শিউলির লাশ।
সম্রাজ্ঞীর চোখে তবু ঘুম নেই, বেগুনি রঙের রশ্মি
শরীরের গলিত বাসনা—
‘আরেকবার ছুঁয়ে দাও, এরপর কখনো এসো না।’

No comments

Powered by Blogger.