প্রশাসনে রাজনৈতিক পদোন্নতি- সরকারের নজর নির্বাচনের দিকে
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মেয়াদের সর্বশেষ বছরে প্রশাসনে পাইকারি হারে রদবদল ও পদোন্নতি শুরু হয়েছে।
সংসদ
নির্বাচন সামনে রেখে এটা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। গতকাল নয়া দিগন্তের
নিজস্ব একটি প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানানো হয়। প্রশাসনের
‘রাজনৈতিক রদবদল’ হিসেবে অভিহিত এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে মাঠপর্যায় থেকে
সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পদোন্নতি ও পদায়ন চলছে। ১৭ জন ভারপ্রাপ্ত সচিবকে
‘ভারমুক্ত’ করে পদোন্নতি দিয়ে সচিব করা হচ্ছে। উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিবÑ
এই তিনটি স্তরেও পদোন্নতি প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য দলীয়
আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, যাবতীয় যোগ্যতা সত্ত্বেও অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই সরকার ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। তাদের ৬০ জন সচিব, ২৯৩ জন অতিরিক্ত সচিব, ৬৮৮ জন যুগ্মসচিব ও ৮৬৫ জন উপসচিব হয়েছেন পদোন্নতি পেয়ে। অপর দিকে, সমসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতিবঞ্চিত বলে অভিযোগ এসেছে। তাদের ব্যাপারে পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েও সরকার কথা রাখেনি। এমন অবস্থায় প্রশাসনে কাজের গতি মন্থর হয়ে এসেছে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও নিরাশার কারণে।
যেকোনো দেশের প্রশাসন সৎ, যোগ্য ও সুদক্ষ, তথা দায়িত্বনিষ্ঠ হওয়ার ওপর সুশাসন নির্ভরশীল। সুশাসন ছাড়া গণতন্ত্র কায়েমের দাবি অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। সুশাসন ব্যতিরেকে জনগণের কল্যাণ এবং দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। দলীয়করণ সুশাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কারণ তখন ক্ষমতাসীন দল ও নেতৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকেই প্রশাসনে নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি, সুবিধাজনক বদলি, পুরস্কৃত করা, বিশেষ কোনো মর্যাদা বা সুবিধা প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রধান মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সততা ও নিরপেক্ষতাকে এ অবস্থায় মনে করা হয় গৌণ ও কম প্রয়োজনীয়। দেখা যায়, ক্ষমতাসীন মহলের অনুগ্রহপুষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্বশীলতার বদলে সরকারি দল ও নেতানেত্রীর সন্তুষ্টি বিধানেই বেশি মনোযোগী ও ব্যস্ত থাকেন। দেশের চেয়ে দল এবং নীতির চেয়ে নেতা বা নেত্রী তাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দেয়। ফলে সুশাসনের সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে সর্বত্র অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, দলবাজি, অন্যায় পক্ষপাত, কর্তব্যে গাফিলতি প্রভৃতি চোখে পড়ে। সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তারা হন বঞ্চিত, তিরস্কৃত ও হতাশ। তারা কাজ করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। সর্বোপরি, জনগণ প্রশাসনের সেবা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং নানাভাবে হয়রানি, শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়।
বাংলাদেশে এমন দুঃখজনক পরিস্থিতিই বিরাজ করছে বিশেষত গত কয়েক বছর। কারণ প্রশাসনে রাজনৈতিক পক্ষপাত তথা দলীয়করণ বর্তমান আমলে চরমে উঠেছে। এ নিয়ে মিডিয়া ও সুশীলসমাজসহ জনগণের শত বাদ-প্রতিবাদ, সমালোচনা ও পরামর্শেও কোনো ফল হয়নি। বরং মেয়াদ যত ফুরিয়ে এসেছে, সরকার ততই দলীয়করণ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনে। এখন ক্ষমতাসীনদের দারুণ দুশ্চিন্তা নির্বাচন নিয়ে। তাদের ব্যাপক ব্যর্থতার পরিণামে জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে এমনভাবে, যাতে আবার ক্ষমতায় আসতে তেমন বেগ পেতে না হয়। গণতান্ত্রিক বলে দাবিদার কোনো সরকার নয়, অনির্বাচিত ও স্বেচ্ছাচারী সরকারের জন্যই এ ধরনের পদক্ষেপ মানানসই। আমরা আশা করব, অতীতে যাই ঘটুকÑ অন্তত মেয়াদের শেষ বছরে দলীয়করণ ও পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থেকে প্রশাসনে নিয়োগ-পদোন্নতি-পদায়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জানা গেছে, যাবতীয় যোগ্যতা সত্ত্বেও অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই সরকার ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। তাদের ৬০ জন সচিব, ২৯৩ জন অতিরিক্ত সচিব, ৬৮৮ জন যুগ্মসচিব ও ৮৬৫ জন উপসচিব হয়েছেন পদোন্নতি পেয়ে। অপর দিকে, সমসংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতিবঞ্চিত বলে অভিযোগ এসেছে। তাদের ব্যাপারে পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েও সরকার কথা রাখেনি। এমন অবস্থায় প্রশাসনে কাজের গতি মন্থর হয়ে এসেছে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও নিরাশার কারণে।
যেকোনো দেশের প্রশাসন সৎ, যোগ্য ও সুদক্ষ, তথা দায়িত্বনিষ্ঠ হওয়ার ওপর সুশাসন নির্ভরশীল। সুশাসন ছাড়া গণতন্ত্র কায়েমের দাবি অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। সুশাসন ব্যতিরেকে জনগণের কল্যাণ এবং দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। দলীয়করণ সুশাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কারণ তখন ক্ষমতাসীন দল ও নেতৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকেই প্রশাসনে নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি, সুবিধাজনক বদলি, পুরস্কৃত করা, বিশেষ কোনো মর্যাদা বা সুবিধা প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রধান মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সততা ও নিরপেক্ষতাকে এ অবস্থায় মনে করা হয় গৌণ ও কম প্রয়োজনীয়। দেখা যায়, ক্ষমতাসীন মহলের অনুগ্রহপুষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্বশীলতার বদলে সরকারি দল ও নেতানেত্রীর সন্তুষ্টি বিধানেই বেশি মনোযোগী ও ব্যস্ত থাকেন। দেশের চেয়ে দল এবং নীতির চেয়ে নেতা বা নেত্রী তাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দেয়। ফলে সুশাসনের সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে সর্বত্র অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, দলবাজি, অন্যায় পক্ষপাত, কর্তব্যে গাফিলতি প্রভৃতি চোখে পড়ে। সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তারা হন বঞ্চিত, তিরস্কৃত ও হতাশ। তারা কাজ করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। সর্বোপরি, জনগণ প্রশাসনের সেবা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং নানাভাবে হয়রানি, শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়।
বাংলাদেশে এমন দুঃখজনক পরিস্থিতিই বিরাজ করছে বিশেষত গত কয়েক বছর। কারণ প্রশাসনে রাজনৈতিক পক্ষপাত তথা দলীয়করণ বর্তমান আমলে চরমে উঠেছে। এ নিয়ে মিডিয়া ও সুশীলসমাজসহ জনগণের শত বাদ-প্রতিবাদ, সমালোচনা ও পরামর্শেও কোনো ফল হয়নি। বরং মেয়াদ যত ফুরিয়ে এসেছে, সরকার ততই দলীয়করণ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনে। এখন ক্ষমতাসীনদের দারুণ দুশ্চিন্তা নির্বাচন নিয়ে। তাদের ব্যাপক ব্যর্থতার পরিণামে জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে এমনভাবে, যাতে আবার ক্ষমতায় আসতে তেমন বেগ পেতে না হয়। গণতান্ত্রিক বলে দাবিদার কোনো সরকার নয়, অনির্বাচিত ও স্বেচ্ছাচারী সরকারের জন্যই এ ধরনের পদক্ষেপ মানানসই। আমরা আশা করব, অতীতে যাই ঘটুকÑ অন্তত মেয়াদের শেষ বছরে দলীয়করণ ও পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থেকে প্রশাসনে নিয়োগ-পদোন্নতি-পদায়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
No comments