প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করার আহ্বান- এলডিসি সম্মেলন শেষ
প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিকরণ, বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সকল ক্ষেত্রে পরিবেশ বান্ধব টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়ে শেষ হয়েছে তিনদিনব্যাপী স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশসমূহের সম্মেলন। এছাড়াও এ সম্মেলনে মোট ১১টি সিদ্ধানত্ম গ্রহণ করা হয়েছে।
এসব সিদ্ধানত্ম বাসত্মবায়নের মাধ্যমে আগামী ২০১১ সালে তুরস্কে অনুষ্ঠিতব্য এলডিসি সম্মেলনে উন্নত বিশ্বকে তাদের প্রতিশ্রম্নতি পালনে বাধ্য করা হবে।বুধবার বিকেলে প্রশানত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশসমূহের সম্মেলন শেষে ঢাকা ঘোষণায় এসব কথা বলেছেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারী ড. নোয়েলিন হাইজার। রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে তিনদিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানকে ঢাকা ঘোষণা হিসেবে নামকরণ করে জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারী বলেন, প্রশানত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৩টি দেশ এবং ১৭টি সংস্থার অংশ গ্রহণে তিনদিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে এতদঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশগুলো যাতে আগামী ২০১১ সালে ইসত্মাম্বুলে অনুষ্ঠিতব্য এলডিসি সম্মেলনে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে তাদের দাবি আদায় করে নিতে পারে তার জন্য কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত বিশ্বকে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য দাবি দরকষাকষির মাধ্যমে আদায় করতে হবে। কারণ তাদের যুক্তিতর্ক এবং দরকষাকষির মাধ্যমে তাদের পরাজিত করতে না পারলে উন্নত বিশ্ব বিভিন্ন সম্মেলনে দেয়া প্রতিশ্রম্নতি পালন করবে না। তাই এখন থেকেই আগামী বছর তুরস্কের রাজধানী ইসত্মাম্বুলে অনুষ্ঠিতব্য এলডিসি সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এলডিসি সম্মেলনে দাতা দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যে সব প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল তার কিছু পূরণ করেছে আবার কিছু পূরণ করেনি। যেমন এখনও উন্নত বিশ্বের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদিত পণ্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্তভাবে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে না। পরিবেশ রক্ষা ও দারিদ্র্য বিমোচনে দরিদ্র দেশগুলোকে উন্নত দেশের মোট দেশজ আয়ের শূন্য দশমিক ২ শতাংশ অর্থ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিলেও তারা তাও পরিশোধ করেনি।
অন্যদিকে ২০০১ সালের এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোও কিছু শর্ত পালন করার কথা থাকলেও তার কিছু পালন করা হয়েছে আবার কিছু হয়নি। তাই আগামী এলডিসি সম্মেলনে যাতে উন্নত রাষ্ট্রগুলো তাদের প্রতিশ্রম্নত অর্থসহায়তা প্রদানে বাধ্য হয় তারজন্য মোট ১১টি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অনেক দাবি নিষ্পন্ন করা হলেও প্রশানত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে তা নিষ্পন্ন করা হয়নি। এশীয় প্রশানত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর খাদ্য, জ্বালানি, আর্থিক সঙ্কট এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুকি উন্নত বিশ্বের সমসত্ম অর্জন নস্যাত করে দিতে পারে। উন্নত বিশ্বের সহায়তায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো রফতানি, বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগাতে এখন যথেষ্ট সমর্থবান। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা ঘোষণায় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারী সাংবাদিকদের আরও বলেন, এবারের সম্মেলনে ৩টি কৌশলকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। তা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করে যাওয়া এবং সকল ধরনের উৎপাদনে পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এ সময় তিনি আগামী এলডিসি সম্মেলনে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে প্রতিশ্রম্নতি পালনে উন্নত বিশ্বকে বাধ্য করানোর আশা প্রকাশ করেন।
No comments