ধর্মঘট ডেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি ছাত্রদল
ধর্মঘট ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারেনি ছাত্রদল। কারণ তাদের বেশিরভাগেরই ছাত্রত্ব নেই। দু'দিনের ধর্মঘটের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রদলের বহিরাগত ও অছাত্র নেতাকর্মীরা মিছিল সমাবেশ করার লৰ্যে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে। শাহবাগে পুলিশ চেকপোস্টে তারা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় পুলিশ তাদের ঢুকতে দেয়নি।
তবে ছাত্রদল দাবি করেছে_ তাদের পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এদিকে ছাত্রদলের ডাকা ধর্মঘটের শেষ দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীৰা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সব কাস অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রথম দিনের মতোই একেবারে ঢিলেঢালাভাবে শেষ হলো ছাত্রদলের দুই দিনের ধর্মঘট কর্মসূচী। সোমবার ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও পদপ্রাপ্তদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষে সংগঠনের সভাপতি টুকুসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনার পর পদপ্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগকে দায়ী করে দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয়।বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের শেষ দিনও অতিবাহিত হয়েছে ঢিলেঢালাভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবকিছুই ছিল স্বাভাবিক। সরেজমিনে বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে অনেক বিভাগে কাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে শিৰার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। সব কাস অনুষ্ঠিত না হলেও পূর্ব ঘোষিত বৃহস্পতিবারের সকল পরীৰা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীৰা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। ক্যাম্পাসে ধর্মঘটের বিরম্নদ্ধে মিছিল সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
এর আগে মঙ্গলবারও ছাত্রদলের ডাকা ধর্মঘটে কাস কিছুটা ব্যাহত হলেও সব পরীৰা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ধর্মঘটের প্রথম দিন মঙ্গলবার ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ঢুকে মিছিল সমাবেশ করলেও বৃহস্পতিবার তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারেনি। প্রত্যৰদর্শীরা জানান, সকাল আটটার দিকে ছাত্রদলের টুকু-আলিম সমর্থক নেতাকর্মীরা বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহবাগের প্রবেশপথে পেঁৗছলে পুলিশ তাদের আটকে দিয়ে পরিচয়পত্র দেখাতে বলে। এ সময় মিছিলে থাকা নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরিচয়পত্র না থাকায় পুলিশ তাদের ঢুকতে বাধা দেয়। মিছিলে অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের অধিকাংশের পরিচয়পত্র না থাকায় শেষ পর্যনত্ম আর কেউই ক্যাম্পাসে না ঢুকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ-কাটাবন হয়ে চলে যায়।
তবে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, তাঁরা সকালে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে শাহবাগে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তাদের শতাধিক নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখায়। কিন্তু তারপরও পুলিশ তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি।
ছাত্রলীগের মিছিল সমাবেশ বেলা সাড়ে বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে ধর্মঘটবিরোধী মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদৰিণ শেষে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, নিজেরা গোলাগুলি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্মঘট দিয়েছে ছাত্রদল। তবে সাধারণ শিৰার্থীরা তাদের সে ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করে কাস পরীৰায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে শিৰার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। কিন্তু সাধারণ শিৰার্থীরা তা হতে দেবে না। সাধারণ শিৰার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।
সমাবেশে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সোহেল রানা টিপু ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে গোলাম সারওয়ার কবির, রাশেদুল মাহমুদ রাসেল, সুজাতুর রহমান, তারেক আল মামুন, আশরাফুর রহমান, ইকবাল মাহমুদ বাবলু, খায়রম্নল হাসান জুয়েল, সোহেল রানা মিঠু, নাসিম আল মোমিন রূপক, জাফরম্নল শাহরিয়ার জুয়েল ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
No comments