কর্মকর্তা সাসপেন্ড- বই দিতে অনিয়ম
বই বিতরণে অনিয়মসহ কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) রম্নহুল আমীন খানকে সাময়িক বরখাসত্ম করা হয়েছে। একই সঙ্গে বই বিতরণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করে দেয়া হয়েছে।
কমিটি আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তারা প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বই বিতরণের সকল সমস্যা সমাধান করবেন। শিৰামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদ বুধবার ডিইওর বরখাসত্মের আদেশ দিয়েছেন। এরপর শিৰা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বই বিতরণ কার্যক্রমে সংশিস্নষ্ট সকলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বই বিতরণে গাফিলতি ও অনিয়ম সৃষ্টিকারীদের বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন অনিয়ম-গাফিলতি বরদাসত্ম করা হবে না।জানা গেছে, দেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চলে সরকার ঘোষিত বিনামূল্যের বই পৌঁছে গেলেও খোদ ঢাকার অনেক স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখনও সকল বিষয়ের বই পায়নি। ঢাকায় বইয়ের মোট চাহিদা ছিল ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ২৯৯টি। অভিযোগ পাওয়া গেছে, শিক্ষা কর্মকর্তা রম্নহুল আমীন খান গ্রহণ করেছেন ৫৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৪৫টি বই। কিন্তু তিনি এ পর্যনত্ম ৪১ লাখ ৬২ হাজার ৫৬৩ বই বিতরণ করেছেন। বাকি ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮২ কপি বই তিনি মজুদ করে রেখেছেন। এছাড়া সরকারের কাছে তার বিরম্নদ্ধে টাকার বিনিময়ে বই বিতরণেরও অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ তদনত্ম করে প্রাথমিকভাবে এর সত্যতাও পেয়েছে সরকার। এরপর বুধবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পাঠ্যপুসত্মক মুদ্রণ, বিতরণ সম্পর্কিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সার্বিক তদারকি কমিটির এক সভায় তাকে বরখাসত্মের সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়। সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফছারম্নল আমিন, প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, শিক্ষা সচিব সৈয়দ আতাউর রহমানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় পাঠ্যবই বিতরণে ত্রম্নটি-বিচু্যতি, অনিয়ম, দুর্নীতির জন্য দায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রধান শিক্ষকসহ সংশিস্ন্লষ্টদের চিহ্নিতকরণ এবং সমস্যা সমাধান করে বই পেঁৗছানোর লৰ্যে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুসত্মক বোর্ডের মাধ্যমে (এনসিটিবি) বিভিন্ন প্রেস থেকে বই গ্রহণ, জেলা-উপজেলা, বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের হাতে পেঁৗছানো বিষয় পর্যালোচনা করাসহ সকল বিষয় সমন্বয় করবে। কমিটির সদস্যরা হলেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোসত্মফা কামাল আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান-উর-রশিদ ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কানত্মি ঘোষ।
সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, বই বিতরণের ক্ষেত্রে কোন রকম গাফিলতি, অযথা দেরি করা, অনিয়ম ও দুর্নীতি বরদাসত্ম করা হবে না। জেলা-উপজেলা ও স্কুলসমূহে পেঁৗছে যাওয়া প্রতিটি বই তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে পেঁৗছাতে হবে। প্রাথমিক সত্মরের বই বিতরণে সংশিস্ন্লষ্ট মন্ত্রণালয় ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সত্মরের ১৯ কোটি বই মুদ্রণ, বাঁধাই, সরবরাহ ও বিতরণকে একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ উলেস্ন্লখ করে বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য ত্রম্নটি-বিচু্যতি লক্ষ্য করা গেছে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বছর শুরম্ন থেকেই এসব ভুল শুধরে নেয়া হবে। মন্ত্রী শীঘ্রই ইংরেজী ভার্সনের বই সরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান করেন। জেলা শিৰা অফিসারের বরখাসত্ম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে বই পৌঁছে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি স্কুলগুলোতে বিতরণ করেননি। এমনকি এ বিষয়ে আমাদের অবহিতও করেননি। কর্তব্যে অবহেলার জন্য তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বই বিতরণে অনিয়মের সাথে জড়িত সকলের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বই বিতরণে মাধ্যমিকের চেয়ে প্রাথমিক সত্মরেই সমস্যা বেশি। তবে সমস্যা দ্রম্নত কেটে যাবে।
No comments