অতি দরিদ্রের ৬শ' কোটি- ফেব্রম্নয়ারিতে শুরম্ন হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায় by মিজান চৌধুরী
৬শ' কোটি টাকা ব্যয়ে মধ্য ফেব্রম্নয়ারি থেকে শুরম্ন হচ্ছে "অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর" দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। বৃহত্তর পরিসরে ৬৪ জেলাই ওই কর্মসূচী গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রায় ১৫ লাখ অতি দরিদ্রকে এই কর্মসূচীর মাধ্যমে তিন মাসের কাজ দেয়া হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে ১৬টি জেলায় এই কর্মসূচী শুরম্ন হয়। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে বড় আকারে সকল জেলা ও উপজেলায় এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিচ্ছিন্ন কিছু অনিয়মসহ গত ১৪ জানুয়ারি অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ব্যয় করা হয়েছে ১৭৭ কোটি টাকা। বৃহত্তর রংপুরের ৫টি জেলা ও আইলা বিধসত্ম ১১টি জেলায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার অতিদরিদ্র মানুষকে দুই মাসের কাজ দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে এই কর্মসূচী বাসত্মবায়নে পাবনাসহ দু'টি জেলায় কিছু অনিয়মের কর্মকা- পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে তদনত্ম করে ওই অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পায়। পরে সংশিস্নষ্টদের বিরম্নদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, বিশাল এই কর্মসূচীর প্রথম পর্যায়ে কাজ পুরোপুরি ভাল হয়েছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু অভিযোগ আসলেও পুরোকার্যক্রম সফলতার সঙ্গে শেষ হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১শ' দিনের কর্মসূচীতে ব্যাপক অনিয়ম থেকে শিা নিয়েই আমরা এই কর্মসূচী মনিটরিং করেছি। বিশেষ করে বড় ধরনের কোন অনিয়ম যাতে না হয় সেভাবে এই কর্মসূচীর নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। নীতিমালায় উলেস্নখ করা আছে এই কর্মসূচীতে কোন অদৃশ্য কাজের অনুকূলে কোন বিল পরিশোধ করা হবে না। ফলে কাজ শুরম্নর পাঁচ দিন অনত্মর সরেজমিনে দেখে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অগ্রিম কোন টাকা দেয়া হয়নি। প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে কাজ করানো হয়েছে। এই কর্মসূচীতে এক-তৃতীয়াংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
সূত্রমতে, দ্বিতীয় পর্যায়ে তিন মাসের এই কর্মসূচীর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬শ' কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই কর্মসূচীর জন্য সরকার ১১শ' ৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রথম পর্যায়ে এই কর্মসূচীর মাধ্যমে ব্যয় করা হয়েছে ১৭৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে বড় আকারে শুরম্নর কারণে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ' কোটি টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংশিস্নষ্ট এক কর্মকর্তার মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থায়নের অনুমোদন পাওয়ার পর কাজ শুরম্ন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর গ্রহণের ব্যাপারে প্রস্তুতিমূলক নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলার সংশিস্নষ্ট ব্যক্তিদের কাছে এই কর্মসূচীর নীতিমালা পেঁৗছে দেয়ার জন্য ৪৮ জন জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের ন্যায় দ্বিতীয় পর্যায়ে একজন গরিব লোককে কাজের বিনিময় দৈনিক এক শ' টাকা হারে পারিশ্রমিক প্রদান করা হবে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে রাসত্মাঘাট উন্নয়ন, খাল খনন, ভিটাবাড়ি বরাট, ব্রিজ, কালভার্ট মেরামত ও গ্রামীণ জনপদ সংস্কারের মাধ্যমে অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। ৪০ শতাংশের অধিক অতি দরিদ্র এলাকাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে।
উলেস্নখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রথম এক শ' দিনে কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়। কিন্তু প্রথম ফেজের অনেক টাকার সঠিক হিসাব মাঠ পর্যায় থেকে অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যনত্ম ওই কর্মসূচীর অধীনে ৯১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, এই কর্মসূচীতে স্বচ্ছতার বিষয়টি বেশি গুরম্নত্ব দেয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সুত্রে জানা গেছে, হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে বিশ্বব্যাংক আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন শর্ত আরোপ করার কারণে সরকার আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেনি।
No comments