কার্ল লেজারফেল্ড
বাংলায় একটা প্রবাদ প্রচলন আছে, 'কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে'। এ কথাটির বাসত্মব উদাহরণ রয়েছে ভূরি ভূরি। বিশ্বের সফল মানুষদের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাঁরা প্রত্যেকেই নিজ প্রচেষ্টা, শ্রম এবং ত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
তেমনি একজন সফল মানুষ হচ্ছেন বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার 'মার্ক লেজারফেল্ড'। তার জন্ম সাল নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। জার্মানির হ্যামবার্গ শহরে জন্ম নেয়া লেজারফেল্ড দাবি করেন ১৯৩৮ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। অথচ লোকাল ক্রিস্ট্রিয়ান রেজিস্ট্রারে তাঁর জন্ম সাল লেখা রয়েছে ১৯৩৩। জার্মানির নিউজ পেপারে তাঁর এক শিৰক এবং কাশমেটের বিবৃতি ছাপা হয়েছিল। সেখানে তারা ১৯৩৩ সালে লেজারফেল্ডের জন্মের প্রতি সাপোর্ট করেন অথচ লেজারফেল্ড নিজেই বলে বেড়ান কেউ তার সঠিক জন্ম সাল জানে না। ২০০৯-এর ফেব্রয়ারিতে ফ্রেঞ্চ টেলিভিশনে এক সাৰাতকারে লেজারফেল্ড বলেন, আমার জন্ম ১৯৩৩ অথবা ১৯৩৮ কোন সালেই নয়। তিনি মনে হয় নিজেই বেশ উপভোগ করেন তার এই জন্ম রহস্য। ১৯৫৩ সালে কার্ল লেজারফেল্ড প্যারিসের নাগরিকত্ব পান। সেখানে তিনি একটি ফ্যাশন হাউসে নক্সা অাঁকতেন। তাঁর নক্সা অাঁকার হাত ছিল দারম্নণ। তিনি যে কোন ডিজাইন একবার দেখলে হুবহু তা এঁকে ফেলতে পারতেন। পুরনো দিনের ক্রেতাদুরসত্ম লোকদের বিশেষ করে ১৭১০ সাল বা তার পরের যুগে যে ধরনের পোশাক প্রচলিত ছিল তার আধুনিক সমন্বয় ঘটিয়ে সবাইকে তাক লাগায় দেন। ১৯৫৫ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি শিৰানবিশ ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে 'পিয়ার বেলম্যান'-এ যোগ দেন। এখান থেকে তিনি উল সেক্রেটারিয়াল ফ্যাশন ডিজাইনিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। এই প্রতিযোগিতায় যিনি প্রথম হন তিনিও লেজারফেল্ডের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি চাকরি বদল করে জিনপাতো নামক ফ্যাশন হাউসে যোগ দেন। এখানে যোগ দেয়ার মাত্র এক বছরের মাথায় অর্থাৎ ১৯৫৮ সালে তিনি স্প্রিং কালেকশন নিয়ে একটি ফ্যাশন শোর আয়োজন করেন। শোটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর ১৯৬০ সালে প্যারিসে ফল কালেকশন শোর আয়োজন করে। এই শোতে তিনি একটি স্পেশাল হ্যাট ডিজাইন করেন যা দেখতে অনেকটা প্যান কোকর মতো। ১৯৬২ সালে পাতো ছেড়ে দিয়ে তিনি সে সময়ের বিভিন্ন নামী-দামী ফ্যাশন হাউসগুলোর সঙ্গে কাজ করা শুরম্ন করেন। ফ্যাশন হাউসগুলো হচ্ছে মারিও ভেলেটিনো, রেপেত্তো, মনোপ্রিক্স ইত্যাদি। এ সময় তিনি প্যারিসে নিজ উদ্যোগে একটি দোকান চালু করেন, যেখানে তিনি তাঁর নিজের ক্রিয়েটিভ ফ্যাশনাবল ড্রেসগুলো প্রদর্শন করেন। তাঁর এই পোশাকগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। এমনকি সে সময়ের নামী-দামী তারকারা তার পোশাক পরে ফটোসেশন করত। এ তালিকায় এলিজাবেথ টেলর, গীনা ালোব্রিগিডা এগিয়ে। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি জারফেল্ডকে। একের পর এক বিজয়ের পালক যোগ হয়েছে তাঁর মুকুটে। এখন পর্যনত্ম তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জীবনের বাকিটা সময় এই করেই পার করে দিতে চান। বর্ণাঢ্য এবং সমালোচনাময় তাঁর জীবন। তারপরও সবকিছু বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি তাঁর কাজ দিয়ে মন জয় করে নিয়েছেন তাবত বিশ্বের সকল ফ্যাশনপ্রেমীর।ইশতার
রাহা
No comments