ঢাবিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস- দুই হোতা গ্রেফতার
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্মরণকালে প্রথমবারের মতো ভর্তি পরীৰার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য শিৰা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আই ই আর এর ভর্তি পরীৰার প্রশ্ন পত্র ফাঁস হওয়ায় রাত তিনটায় জরম্নরী সভা ডেকে পরীৰা স্থগিতের সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়। শুক্রবার সকাল ১০টায় ভর্তি পরীৰা হওয়ার কথা ছিল।
প্রশ্নপত্র ফাসের সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিভাবে এ ঘটনা ঘটলো তা ২৪ ঘন্টার মধ্যে জানানোর জন্য ইনস্টিটিউটকে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপৰ। নতুন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে আগামী ৫ ফেব্রম্নয়ারি ভর্তি পরীৰা নেয়া হবে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে অক্সফোর্ড প্রিন্টিং প্রেসের কর্মচারীরা এ প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। পরে ফাঁস করা প্রশ্ন কাঁটাবনের 'মাস্টার মাইন্ড' প্রেস থেকে আবার ছাপানো হয়। মাস্টার মাইন্ডের যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ তাদের খুঁজছে। সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসে প্রশ্নের ডামি করার পর তা ছাপাতে দেয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশর্্ববর্তী নীলৰেতের অক্সফোর্ড প্রিন্টিং প্রেসে।সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায়, ইনস্টিটিউটের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীৰা কমিটির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের 'গোপালগঞ্জ' নামে পরিচিত সিন্ডিকেট প্রেসের কর্মচারীদের জোগসাজসে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। আগেও এ ধরণের অভিযোগ, গুজব- ওঠলেও প্রশাসন কখনো তা কানে তোলে। এবছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তৎপরতায় ধরা পড়ছে প্রশ্নপত্র ফাসে জড়িত সিন্ডিকেট।
প্রশ্নপত্র ফাসের সঙ্গে জড়িত যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলো- একসময়ের ছাত্রদল কর্মী বর্তমান ছাত্রলীগ কর্মী সূর্যসেন হলের ছাত্র টিটু সর্দার,(সূর্যসেন হলের ছাত্র হলেও টিটু থাকতো এসএম হলে), বিবিএর ছাত্র সুমন, অক্সফোর্ড প্রিন্টিং প্রেসের স্্বত্ত্বাধীকারী নাজির হোসেন মোলস্না, প্রেসের কর্মচারী ইউসুফ, শাহীন, রিপন ও রতন। তাদের শাহবাগ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদনত্ম করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে জানাতে ইনস্টিটিউটকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের রিপোর্ট অনুসারে পরবর্তী পদৰেপ নেয়া হবে। নতুন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে আগামী ৫ ফেব্রম্নয়ারী ভর্তি পরীৰা গ্রহণ করা হবে।
প্রক্টর ড.কেএম সাইফুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, পরীৰার আগের রাত একটার দিকে বিশ্্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র তাকে ফোন করে জানান যে, টাকার বিনিময়ে আইইআর এর ভর্তি পরীৰার প্রশ্নপত্র পাওয়া যাচ্ছে। তাকে এক জন ফোন করে আরও বলেছে ৫০ হাজার টাকা দিলে প্রশ্ন দেয়া হবে। তখন ফাঁদ পাতেন প্রক্টর। তিনি ওই ছাত্রকে দিয়ে যোগাযোগ করান জনৈক প্রশ্ন বিক্রেতা সুমনের সঙ্গে। সুমন ওই ছাত্রকে টাকা নিয়ে নীলৰেত মোড়ে আসতে বলে। প্রক্টর তার টীম এবং গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন সদস্য নিয়ে পাশে অবস্থান নেয়। একটু পর সুমন ওই ছাত্রকে আসতে বলে ধানমন্ডির হেলভেশিয়ার পাশে। ধানন্ডির কাছাকাছি পৌছার পর আবার আসতে বলে নীলৰেত। একটু পর বলে পলাশী মোড়ে যেতে। পলাশী যাওয়ার পর আবার নীলৰেত কোয়ার্টারের সামনে আসতে বলে। শেষ পর্যনত্ম নীলৰেত আবাসিক এলাকায় প্রশ্নপত্র দেয়ার সময় তাকে হাতে নাতে আটক করা হয়। পরে তাকে ব্যবহার করে এসএম হলের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় এ সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য টিটু সর্দার ও প্রেসের কর্মচারীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পৰ থেকে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর রাত তিনটার দিকে উপাচার্যের বাস ভবনে জরম্নরী সভা করে ভর্তি পরীৰা স্থগিত করার সিদ্ধানত্ম নেয় কর্তৃপৰ।
No comments