নাশকতার উদ্দেশ্যেই শিবির চট্টগ্রামে অস্ত্র মজুদ করেছিল- সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি
বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রসত্ম করার জন্যই জামায়াত-শিবির চট্টগামের বাড়িটিতে অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করেছিল। তবে কোন অবস্থাতেই বাংলার মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এ দলটি সম্পর্কে জনগণ এখন সচেতন। জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। সংসদ সদস্যদের দাবির মুখে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৩০০ ধারায় বিবৃতি দিতে গিয়ে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।বুধবার সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের মেস থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার সম্পর্কে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। একই সঙ্গে ছাত্রদলের অস্ত্রধারী ক্যাডারকে 'ছাত্রলীগ' বলে চালানোর বিএনপি মহাসচিবের মিথ্যাচার সম্পর্কেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন আওয়ামী লীগের এ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়া। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিষয়টির সূত্রপাত করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের দু'গ্রম্নপের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ, অস্ত্রের মহড়া সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু চট্টগ্রামে শিবিরের ম্যাস থেকে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারম্নদ, জিহাদী বই উদ্ধারসহ জামায়াত-শিবিরের ১২ নেতার গ্রেফতার নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ৩০০ ধারায় বক্তব্য রাখা।
সে সময় স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ জানান, বৃহস্পতিবার বেসরকারী দিবস হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইলে বিবৃতি দিতে পারেন। সে প্রেৰিতেই বৃহস্পতিবার ৩০০ ধারায় বিবৃতি দেন মন্ত্রী। তবে তিনি শুধু অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়েই বিবৃতি দেন।
বিবৃতি দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়ার ড. এনামুল হকের বাড়ি হক ভিলা থেকে অস্ত্রসস্ত্রসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অস্ত্রের মধ্যে ছিল পাকিসত্মানের তৈরি তিনটি রিভলবার ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি রিভলবার, কাতর্ুজ, বোমা ও গুলি। উদ্ধার করা হয় জিহাদীর ময়দানে ইসলাম, দিনবদলের সনদ কি মানুষ হত্যার লাইসেন্স, বৈপস্নবিক দৃষ্টিতে ইসলামসহ বেশ কিছু জিহাদী ও উস্কানিমূলক বই। গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় জানতে গিয়ে দেখা যায়, তারা জামায়াত ও জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের নেতা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের সামনে জামায়াতের রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,এ দলটি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। তারা লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছে, বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছে, ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমহানি করেছে। গত ২৩ বছর ধরে জামায়াত ও শিবির অস্ত্র ও পেশীশক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রামের শিৰা প্রতিষ্ঠান দখল করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার যখন ৰমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরম্ন করেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শেষে রায় কার্যকর করার দ্বারপ্রানত্মে তখনই সেসব অস্ত্র মজুদ করা হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রসত্ম করার জন্য দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কাজ করার পরিকল্পনা নিয়ে তারা অস্ত্র মজুদ করেছিল।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দর্শন নিয়ে জাতি আজ যথেষ্ট সচেতন। জামায়াতের টিকেট নিয়ে বেহেশতের চাবি পাওয়ার প্রচারে আজ আর জাতি বিশ্বাস করে না। সে জবাব তারা ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখান করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নিমর্ূল করতে চাই। দেশে কোন ধরনের ধ্বাংসাত্মক কার্যক্রম হতে দেয়া হবে না।
No comments