তাঁর অন্তিম স্বপ্ন পূর্ণ করা সবার দায়িত্ব- নির্মল সেনের প্রয়াণ
সাংবাদিক-রাজনীতিক নির্মল সেনের মৃত্যু আমাদের জাতীয় জীবনের বিরাট ক্ষতি। সাংবাদিকতা তাঁর পেশা হলেও আজীবন তিনি মানবমুক্তির সাধনায় নিয়োজিত ছিলেন। রাজনীতিই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। কৈশোরে যে বিপ্লবী রাজনীতির দীক্ষা নিয়েছিলেন নির্মল সেন, আমৃত্যু সেই পথে আপসহীন ছিলেন।
মৃত্যুর পরে চিকিৎসা গবেষণায় দেহ দান করে তিনি অনন্য উদাহরণ রেখে গেলেন।
গত মঙ্গলবার ৮২ বছর বয়সে নির্মল সেন মৃত্যুবরণ করলেও ২০০৩ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর থেকে ছিলেন অসুস্থ। চিরকুমার এ মানুষটি কখনো স্বজনের বাড়িতে, কখনো হাসপাতালে কাটিয়েছেন। অসুস্থ শরীরেও লিখে গেছেন, সাংবাদিকদের প্রতিবাদী সমাবেশে হাজির হয়েছেন। জাতীয় প্রেসক্লাব ছিল তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি।
ছাত্রাবস্থায় রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেন জেল খেটেছেন, রাজনীতির জন্য একাধিকবার তাঁর পড়াশোনায় ছেদ ঘটেছে। কিন্তু হতোদ্যম হননি। দেশবিভাগের প্রাক্কালে রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেই পার্টির নির্দেশেই ছাত্রলীগে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে গড়ে তোলেন কৃষক শ্রমিক সমাজবাদী দল।
পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে নির্মল সেন দৈনিক ইত্তেফাক-এ সাংবাদিকতা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে দৈনিক আজাদ, দৈনিক জেহাদ, সোনার বাংলা প্রভৃতি পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্টের পত্রিকা দৈনিক পাকিস্তান-এ (পরবর্তীকালে দৈনিক বাংলা) যোগ দেন এবং ৩৩ বছর এই পত্রিকায়ই কাটিয়েছেন। লেখালেখিতে তিনি ছিলেন অকুতোভয়। অনিকেত ছদ্মনামে ১৯৭৪ সালে তাঁর ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ শিরোনামের লেখাটি সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তিনি কেবল লেখনীতেই সত্য ও ন্যায়ের কথা বলেননি, গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে রাজপথে লড়াইও করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজরোষে পড়েছেন। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নির্মল সেন তাঁর লেখনীতে যে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়েছিলেন, ৩৮ বছর পরও বাংলাদেশের মানুষের জীবনে সেই নিরাপত্তার অভাব প্রকট। তাঁর শেষ ইচ্ছে ছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নিজ বাড়িতে একটি কলেজ করা। সে জন্য তিনি জমিও দিয়ে গেছেন। আমরা আশা করব, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবাই তাঁর শেষ ইচ্ছাটি পূরণে এগিয়ে আসবে।
আকণ্ঠ বিপ্লব পিপাসার এই মহৎপ্রাণ মানুষটির মৃত্যু আমাদের রাজনীতি ও সাংবাদিকতায় যে শূন্যতা তৈরি করেছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর সাহস ও মানবমুক্তির সাধনা আমাদের নিত্য অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাঁর স্মৃতি জাগ্রত থাক।
গত মঙ্গলবার ৮২ বছর বয়সে নির্মল সেন মৃত্যুবরণ করলেও ২০০৩ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর থেকে ছিলেন অসুস্থ। চিরকুমার এ মানুষটি কখনো স্বজনের বাড়িতে, কখনো হাসপাতালে কাটিয়েছেন। অসুস্থ শরীরেও লিখে গেছেন, সাংবাদিকদের প্রতিবাদী সমাবেশে হাজির হয়েছেন। জাতীয় প্রেসক্লাব ছিল তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি।
ছাত্রাবস্থায় রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেন জেল খেটেছেন, রাজনীতির জন্য একাধিকবার তাঁর পড়াশোনায় ছেদ ঘটেছে। কিন্তু হতোদ্যম হননি। দেশবিভাগের প্রাক্কালে রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেই পার্টির নির্দেশেই ছাত্রলীগে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে গড়ে তোলেন কৃষক শ্রমিক সমাজবাদী দল।
পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে নির্মল সেন দৈনিক ইত্তেফাক-এ সাংবাদিকতা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে দৈনিক আজাদ, দৈনিক জেহাদ, সোনার বাংলা প্রভৃতি পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্টের পত্রিকা দৈনিক পাকিস্তান-এ (পরবর্তীকালে দৈনিক বাংলা) যোগ দেন এবং ৩৩ বছর এই পত্রিকায়ই কাটিয়েছেন। লেখালেখিতে তিনি ছিলেন অকুতোভয়। অনিকেত ছদ্মনামে ১৯৭৪ সালে তাঁর ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ শিরোনামের লেখাটি সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তিনি কেবল লেখনীতেই সত্য ও ন্যায়ের কথা বলেননি, গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে রাজপথে লড়াইও করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজরোষে পড়েছেন। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নির্মল সেন তাঁর লেখনীতে যে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়েছিলেন, ৩৮ বছর পরও বাংলাদেশের মানুষের জীবনে সেই নিরাপত্তার অভাব প্রকট। তাঁর শেষ ইচ্ছে ছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নিজ বাড়িতে একটি কলেজ করা। সে জন্য তিনি জমিও দিয়ে গেছেন। আমরা আশা করব, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবাই তাঁর শেষ ইচ্ছাটি পূরণে এগিয়ে আসবে।
আকণ্ঠ বিপ্লব পিপাসার এই মহৎপ্রাণ মানুষটির মৃত্যু আমাদের রাজনীতি ও সাংবাদিকতায় যে শূন্যতা তৈরি করেছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর সাহস ও মানবমুক্তির সাধনা আমাদের নিত্য অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাঁর স্মৃতি জাগ্রত থাক।
No comments