সিয়াম রিপে দুদিন by মিতালী হোসেন
বিরানব্বই সালে কম্বোডিয়ায় কিছু সময়ের জন্য বাস করার সৌভাগ্য হয়েছিল স্বামীর কর্মসূত্রে। আমার স্বামী জাতিসংঘ শানত্মি মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হিসেবে ছিলেন। কম্বোডিয়ায় জাতিসংঘ মিশনকে সংেেপ বলা হতো আনটাক (টহরঃবফ ঘধঃরড়হং ঞৎধহংধপঃরড়হধষ অঁঃযড়ৎরঃু ওহ ঈধসনড়ফরধ)। নামেই এর পরিচয়। তখন কম্বোডিয়া ছিল অনত্মর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
সেই সরকারের অংশ ছিল জাতিসংঘ। আমরা থাকতাম কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে। আমার স্বামী খন্দকার মোজাম্মেল হক ছিলেন কম্বোডিয়া পুলিশের চিফ অব ট্রাফিক পুলিশ ওরিয়েন্টেশন। সফরভাবে কাজ করে মোজাম্মেল দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিল।
নমপেনে থাকার সময় আমরা ঠিক করলাম, সিয়াম রিপ যাব বেড়াতে। তখন পর্যনত্ম সিয়াম রিপ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতাম না। জাতিসংঘের অনেক কর্মকর্তা সিয়াম রিপ বেড়াতে যেত। যখন ফিরে আসত, আঙ্কর ওয়াট, আঙ্কর থম সম্পর্কে অনেক গল্প করত। সেসব শুনে আমার স্বামী ঠিক করলেন, সিয়াম রিপ যাবেন।
কম্বোডিয়ায় সবচেয়ে বড় প্রদেশ সিয়াম রিপ। নমপেন থেকে বিমানে এক ঘণ্টার পথ সিয়াম রিপের। যুদ্ধবিধ্বসত্ম কম্বোডিয়ায় তখন সড়কপথ, রেলপথ ছিল না বললেই চলে। রাসত্মাঘাট যা-ও বা ছিল, তা ও ল্যান্ড মাইনে পরিপূর্ণ। সড়কপথে কোথাও যাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। আমরা বিমানেই সিয়াম রিপ রওনা দিলাম। কম্বোডিয়া এয়ারলাইনের রাশিয়ার তৈরি এয়ারক্রাফট। বিমানচালকও রাশিয়ান। ক্রুরা কম্বোডিয়ান। সিয়াম রিপে জাতিসংঘের বিমানও যায়, তবে শুধু ওয়াকিং ডে'তে। আমরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে, গেলাম বলে এয়ারলাইনের বিমানেই উঠতে হলো। এয়ারক্রাফটটির অবস্থা সুবিধার মনে হলো না, বরং লক্কড়ঝক্কড় মার্কাই বলা যায়। এমন ঘটঘট শব্দ হচ্ছিল আর জ্বরের রোগীর মতো কাঁপছিল যে অবস্থা দেখে আমার জড়োসড়ো হওয়ার দশা। তবে ভেতরে চা, কফি বেশ ভাল।
কম্বোডিয়া দেশটি আকারে যেমন বিশাল তেমনি বেশ ঘন অরণ্যে পরিপূর্ণ। বিমানের জানালা দিয়ে নিচে তাকাতে দেখা গেল সবুজের সমারোহ। যতদূর চোখ যায়, উঁচু উঁচু পাহাড় আর ঘন বন। এসব বনের অনেকখানি তখনও গেরিলা বিদ্রোহীদের দখলে ছিল বলে বিমানভ্রমণও নিরাপদ ছিল না। প্রায় ১০ মিনিট ধরে বিমান একটা হ্রদের উপর দিয়ে উড়ে চলল। যতদূর চোখ যায় শুধু জল আর জল।
সিয়াম রিপের আঙ্কর ওয়াট ও আঙ্কর থম হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম মন্দির আর দুর্গ। এত বিশাল দুর্গ ও মন্দির বোধহয় আর কোথাও নেই। স্থাপত্যকলার ভাস্কর্যে এক অন্যান্য কর্ম আঙ্কর ওয়াট ও আঙ্কর থম শহর। এর সামনে একবার দাঁড়ালে হাজার বছর আগের পরাক্রমশালী রাজাদের বাহবা না জানিয়ে উপায় নেই। এক সময় এখান থেকেই রাজ্য শাসন করতেন রাজা। শহরটি ছিল রাজধানী। আঙ্কর ওয়াট ও আঙ্কর থমের বিশাল আকারের প্রাসাদ, দুর্গ, রাসত্মাঘাট সবই নির্মাণ করা হয়েছে পাথর দিয়ে। বিশাল বড় বড় পাথর দিয়ে নির্মিত এসব স্থাপত্য। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সিয়াম রিপের আশপাশে কোথাও কোন পাথরের খনি বা পাথরের পাহাড় নেই। তা হলে এই এত বড় বড় পাথর এল কোথা থেকে? উত্তর পাইনি। কারণ উত্তর দেয়ার মতো লোক থাকলে তো! যুগ যুগ ধরে যুদ্ধে সব হয় মরে শেষ, নয়তো দেশছাড়া। যে দু চারজন আছে তাদের পড়াশোনা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে কোন মাথা ঘামানোর সময় নেই। তারা বেঁচে ছিল, এটুকুই তাদের জন্য যথেষ্ট। আঙ্কর ওয়াটের আয়তন আট কিলোমিটার। আট কিলোমিটারজুড়ে এ বিশাল দুর্গে আছে প্রাসাদ, মন্দির। দুর্গের দুইভাগ অন্দরমহল ও বাহির মহল। বাহির মহলের প্রধানতম বিষয় হলো সৈন্যবাহিনীর জন্য ব্যারাক, প্রশিণ কেন্দ্র, অফিস, হাতিশাল, ঘোড়াশাল, অস্ত্র নির্মাণ কারখানা, কয়েদখানা ও রান্নাবাড়ি। আরও আছে ওয়াচ টাওয়ার, পাহরাদারদের জন্য পোস্ট। জেলখানা, টর্চাররম্নম অন্যদিকে। অন্দরমহলে থাকার ব্যবস্থা, রান্নাবাড়ি এসব। অন্দরমহল ও বাহির মহলের মাঝখানে রাজদরবার। প্রাসাদের বাহির মহল, অন্দরমহল ও রাজদরবার সবই জ্যামিতিকভাবে নির্মিত। আঙ্কর ওয়াটের ঠিক মাঝখানে বিশাল উঁচু বিরাট আকারের সূর্যমন্দির যা প্রাসাদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু প্রায় আটতলা সমান। তবে পুরো দুর্গ ধাপে ধাপে তৈরি। বাহির মহল থেকে উঁচু রাজদরবার অফিস, তার থেকে উঁচু ধাপে অন্দরমহল। সবচেয়ে উঁচু সূর্যমন্দির।
ঘন বনের মধ্যে বিরাণ জায়গায় আট কিলোমিটারজুড়ে এর অবস্থান, একদিনে ঘুরে দেখা অসম্ভব। পুরো আঙ্কর ওয়াটকে ঘিরে বড় চওড়া লেক। বোধহয় একেই পরিখা বলে। শত্রম্নর হাত থেকে রা পেতে রাজপ্রাসাদ দুর্গ ঘিরে এ রকম পরিখা বা লেক রাজা বাদশারা তৈরি করতেন। আমাদের উপমহাদেশের দুর্গ ঘিরেও পরিখা আছে দেখেছি। অনেকটা উঁচু ও চওড়া দেয়াল দিয়ে দুর্গ প্রাসাদ ঘেরা। অবশ্য অনেক জায়গায় দেয়াল ভেঙে পড়েছে। অযত্নের চিহ্ন সবখানে। প্রায় তিনতলা মতো সিঁড়ি ভেঙ্গে মূল চত্বরে এসে পেঁৗছালাম। আরও এক কিলোমিটার চওড়া পাথরের পথ হেঁটে দ্বিতীয় ধাপ মানে দুর্গের শুরম্ন। এই যাওয়ার পথের দুপাশে ছড়ানো কত যে সুন্দর সুন্দর মূর্তি! পুরো পথের দুধারে দারম্নণ কারম্নকাজ করা রেলিং। দূরে দূরে নানারকম দালান মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। পুরো আঙ্কর ওয়াট চৌকোনা। সূর্যমন্দিরকে ঘিরে চৌকোনো করে এক এক ধাপে নির্মাণ করা হয়েছে পুরো দুর্গ। এর মেঝে, দেয়াল, জানালা ও রেলিং সবই পাথরের। পাথর কেটে খোদাই করে নকশা করা হয়েছে। আসত্ম বড় পাথর কুঁদে ভাস্কর্য করা হয়েছে। আঙ্কর ওয়াটের প্রধান ফটকে বড় একটা শিলালিপি। স্থানীয় লোকেরা জানাল, পাথরে খোদাই করে লেখা শিলালিপিটি সংস্কৃত ভাষায় লেখা। দেখে আমরাও তাই মনে হয়েছিল। ফটক পার হতেই সারি সারি ছোট ছোট ঘর। এগুলো সব সৈনিকদের ব্যারাক। আবার একতলা নিচের দিকে নেমে বড় বড় হল আর সাথে নানা আকারের ঘর। হলগুলো দরবার ক, অন্য ঘরগুলো অফিস, পরের সারিতে ছোট বড় অনেকগুলো মন্দির।
মন্দিরের চাতাল পেরিয়ে মূল প্রসাদের শুরম্ন। রণাবেণের অভাবে অনেক কিছুই ভাঙ্গাচোরা। অনেক ভাস্কর্যের মাথা উধাও। কোনোটার শুধু নিচের অংশ আছে। হাজার হাজার ক েপূর্ণ প্রাসাদ। মাঝে মধ্যে পাথরের কুঁড়েঘর। আমাদের দেশের কুঁড়েঘরের ডিজাইনে ঘর দেখে আমি অবাক হই, এত দূরদেশে আমাদের মতো ঘর, সত্যিই বিস্ময়কর।
এবারে আবার সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠার পালা। প্রাসাদের ঠিক মাঝখানে মন্দির। মন্দিরের অবস্থান খানিকটা উঁচুতে। অনেকগুলো মন্দির আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো সূর্যমন্দির। মন্দিরে স্থাপিত মহামতি বুদ্ধ। মন্দিরগুলোতে বুদ্ধের সাথে মিলেমিশে আছে বিষ্ণু অপ্সরা নটরাজ। মন্দিরের চাতালে দাঁড়িয়ে পুরো প্রাসাদ দেখা যায়। আমি দেখে বিস্মিত হই, পুরো দুর্গ চৌকোনা। সব ঘর চৌকোনা। সব ধাপ চৌকোনা।
দুর্গের দেয়াল কারম্নকলাম-িত। পাথর খোদাই করে কারম্নকাজ করা হয়েছে। এমনকি ছাদ পর্যনত্ম খোদাই করে চিত্রিত। এসবের মধ্যে নারী মূর্তিগুলো নাচের মুদ্রায়। অপ্সরার মূর্তি হাজার হাজার। বিষ্ণুর মূর্তি শত শত। আর আছে নটরাজ। নটরাজের বিভিন্ন নৃত্য ভঙ্গিমায় গড়া পাথরের মূর্তি। এর মধ্যে রম্নদ্র, বলিতরম্ন, অপাপবিদ্ধ, লীন স্বসত্মিক, অঞ্চিতক, অঞ্চিত নিকঞ্চিত, ভূজঙ্গাঞ্চিত, ললাটতিলক গরম্নরপুক, এরকম নানা মুদ্রা। নটরাজের মতো অপ্সরার মূর্তিগুলোও নাচের ভঙ্গিমায়। মজার ব্যাপার হলো আঙ্কর ওয়াটের অপ্সরার মূর্তি দেখতে মোটেও কম্বোডিয়ার মেয়েদের মতো নয়। আকার আকৃতিতেও কম্বোডিয়ার মেয়েদের মতো নয়। বরং এসব মূর্তি অনেক বেশি অজনত্মা ইলোরার মূর্তির মতো। অর্থাৎ আমাদের উপমহাদেশের মেয়েদের মতো। পরিত্যক্ত প্রাসাদ দুর্গ। শুধু সূর্যমন্দিরে সীমিত আকারে পুজো হয় শুনলাম। একশ'র বেশি সিঁড়ি ভেঙে উঠলাম সূর্যমন্দিরে। এই বিশাল উঁচু সিঁড়িতে কোন ল্যান্ডিং স্পেস নেই। একেবারে টানা সিঁড়ি উপরে উঠে গেছে। ওপরে উঠে দাঁড়িয়ে বিস্ময়ে আমার মুখ দিয়ে আনন্দধ্বনি উচ্চারিত হলো নিজের অজানত্মেই। পুরো আঙ্কর ওয়াট দেখতে পাচ্ছি।
সামনের আঙ্কর ওয়াট পার হয়ে চোখের সামনে ঘন বন, উঁচু পাহাড় ও নীল আকাশ। সে এক অনন্য সাধারণ দৃশ্য। স্বপ্ন আর বাসত্মবের মেশামিশি হয়ে আছে আমার মনের পর্দায়।
খানিকণ ঘুরে ফিরে যখন নেমে আসব বলে নিচের দিকে তাকিয়েছিল, অমনি যেন জমে পাথর হয়ে গেলাম। সোজা খাঁড়া সিঁড়ি। তাও আবার ভাঙ্গাচোরা। অাঁতকে উঠলাম, অসম্ভব, আমি নামতে পারবো না! নিচে তাকানোর সাথে সাথে আমার হাত-পা কাঁপতে শুরম্ন করল। গলা শুকিয়ে কাঠ। বুকের মধ্যে ঢেঁকির পাড়। এর মধ্যে এক পুরোহিত এসে গল্প জুড়লো, মাত্র দুদিন আগে এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা এই সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে হাত ভেঙ্গেছে।
মোজাম্মেল তার মেয়েকে নিয়ে নেমে গেছে। আমি দাঁড়িয়ে আছি ফ্রিজ হয়ে। নিচ থেকে সবাই চেঁচিয়ে আমাকে সাহস দিচ্ছে। আমার কানে কিছুই ঢুকছে না। বারবার আফসোস হচ্ছে, মরতে কেন এখানে উঠলাম এই উপরে।
যা হোক, নামতে যখন হবেই ভেবে, আলস্নাহর নাম নিয়ে নামতে শুরম্ন করলাম। মনে মনে দোয়া দরম্নদ পড়ছি। কিছুদূর নামার পরে মনে হলো, পায়ে কোন জোড় পাচ্ছি না। বসে পড়লাম। এবার বসে বসে এক ধাপ এক ধাপ করে নামতে লাগলাম। ইতোমধ্যে আমার জানা সব সূরাই পড়ে ফেলেছি। ঠিকমতো পড়তে পারছি না। ভয়ে একটার সঙ্গে আর একটা গুলিয়ে ফেলেছি। এদিকে আমার দুরবস্থা ভেতরে যে কজন লোক দেখছিল, তারা সবাই এসে জড়ো হলো। সবাই অভয় দিচ্ছে উৎকণ্ঠিতভাবে। যখন শেষ পর্যনত্ম নেমে এলাম, মনে হলো_ কত যুগ যেন পার হয়ে গেছে।
আঙ্কর ওয়াট ও আঙ্কর থম প্রায় একশ' কিলোমিটার জায়গাজুড়ে। এত অল্পসময়ে সবখানে যাওয়া যায় না। আঙ্কর ওয়াট থেকে আঙ্কর থম কয়েক কিলোমিটার দূরে। পাথরের সড়ক। পথের দুপাশে অসংখ্য মূর্তি। মূর্তিগুলো এত কাছাকাছি যেন রেলিংয়ের মতো। আঙ্কর থমে কয়েক শত ছোট বড় নানা মাপের মন্দির। প্রায় সবই অযত্নে অবহেলায় ভাঙ্গাচোরা। আঙ্কর ওয়াট থেকে আঙ্কর থমের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ। টিলার উপর যেসব মন্দির, সেখানে ঢোকা যায় না। যাওয়ার পথ নেই। বন জঙ্গলে পূর্ণ। পথের দুপাশে মূর্তিগুলো সবই বিশাল বিশাল মূর্তি। এসব মূর্তির ওজন কয়েক টন হবে। তবে কয়েক টন ওজনের মূর্তিগুলোর অনেকগুলো চুরি হয়ে গেছে। বিরানব্বই সাল পর্যনত্ম চুরি হচ্ছিল। টুকরো টুকরো করে কেটে বিদেশে পাচার হচ্ছিল। পরে এটি সরকারী এবং জাতিসংঘের আওতায় এনে সুরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আঙ্কর থমের একটি মন্দিরে নটরাজের একটি মূর্তি আছে যেটি দেখতে হুবহু ইলোরার নটরাজের মতো। সব মন্দিরের মাথায় সাপের মূর্তি আছে। সিয়াম রিপের সব বুদ্ধের মাথার ওপর সাপের ফণা যা আর কোথাও দেখিনি। আঙ্কর থম থেকে সিয়াম রিপ ফেরার পথে রাসত্মার পাশে একটা বড় বন দেখে নামলাম একটু হাঁটব বলে। অনেণ এবড়োথেবড়ো পথে চলায় সবাই কানত্ম হয়ে পড়েছিলাম। রাসত্মার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে আমরা সবাই নামলাম। আমাদের সাথে দুজন পাকিসত্মানী ও একজন জার্মান ছেলে ছিল। জার্মান ছেলেটি পুরাতত্ত্বের ছাত্র। সে আমাদের সব বুঝিয়ে দিল। সবাই হাঁটাহাঁটি করছিল। অপরূপ বন। বড় বড় মোটা মোটা গাছের সমাহার। কত রকমের যে গাছ! পাতায় কত যে রঙের সমাহার! প্রকৃতির এই সুন্দরতার সামনে আমি কেমন যেন বিস্ময়াহত হয়ে যাই। গাছগুলো উঁচু হয়ে আকাশ ছুঁতে চাইছে। আমরা পায়ে চলা পথ ধরে বনের মধ্যে হাঁটছি। হঠাৎ প্রচ- জোরে বাতাস বইতে শুরম্ন করলো। আকাশে কোন মেঘ নেই। কিন্তু ঠা-া হাওয়া। ঝড় উঠল। চারিদিকে হাওয়ার শনশন শব্দ। একই সাথে লাখ লাখ পাতা উড়ছে। আমরা দাঁড়িয়ে আছি, আমাদের মাথার উপরে লাখ লাখ রংবেরঙের পাতা উড়ছে আর পায়ের নিচে শুকনো পাতাদের ওড়াওড়ি। এই সুন্দরতা শুধু কবিতার সাথেই তুলনা কর যায়। আমি বিমুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইলাম অপলক।
No comments