ফনিক্সের খোঁজে নাসা
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'নাসা' মঙ্গলগ্রহে গবেষণা চালানোর কাজে ২০০৮ সালের মে মাসে সেখানে একটি ল্যান্ডার বা অবতরণযান পাঠায়, যার নাম 'ফনিক্স'। কিন্তু ফনিক্স একই বছরের ২ নবেম্বর হঠাৎ করে পৃথিবীতে তথ্য পাঠানো বন্ধ করে দেয় অর্থাৎ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এর নিষ্ক্রিয়তার কারণ অনুসন্ধানে ফের মাঠে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা।
ফনিক্স মঙ্গলপৃষ্ঠের একটি এলাকায় স্টাডি চালায়। সেখানকার তথ্যউপাত্ত পৃথিবীতে পাঠায়। তার পরই আকস্মিকভাবে 'নীরব' হয়ে যায়। এর পর মঙ্গলপৃষ্ঠে শরৎ ও শীতকাল চলে গেছে। বসনত্মকালও যায় যায়। কিন্তু 'ফনিক্স' আর কথা বলছে না। সৌরশক্তি চালিত ফনিক্সের ভেতরকার ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি হয়ত ভেঙ্গে পড়েছে। কিংবা সেখানকার উষ্ণ আবহাওয়া সইতে না পেরে ফনিক্স শেষতক মারা পড়েছে। সবই অনুমানের কথা।নাসা বিজ্ঞানীরা ফনিক্সের 'চেতনা' পরখ করার জন্য সেখানে বেতার বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখনও কোন সাড়া মেলেনি। তবে তারা আশা ছাড়েনি। ফেব্রম্নয়ারি বা মার্চ নাগাদ তারা ফনিক্সের জবাব পেতে পারেন_ এই আশায় অপেৰা করছেন। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির মার্স এক্সপেস্নারেশন প্রোগ্রামের প্রধান টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী শাদ এডওয়ার্ডস বলেন, ফনিক্স কোন বেতার সঙ্কেত পাঠালে ওডিসি (গ্রাহকযন্ত্র) তা শুনতে পাবে। তিনি বলেন, আমরা ফনিক্সের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব। দফায় দফায় এই চেষ্টা চালানো হবে। শেষতক ফনিক্সের ফোন সাড়া না পেলে আমরা ধরে নেব যে, সে মারা গেছে।
ব্রিটেনের ইমপেরিয়াল কলেজের ডক্টর টম পাইক ফনিক্সের মাইক্রোস্কোপি স্টেশনের উন্নয়ন কাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ফনিক্স প্রাণ ফিরে পেলে অনত্মত একটি যন্ত্র সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, শীতের প্রভাবে ওর ব্যাটারিগুগো সম্ভবত বসে গেছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, শীতকালে সেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পেঁৗছেছিল। কার্বন-ডাই অক্সাইড সেস্না বা বরফ গঠনের জন্য এই ঠা-া যচেষ্ট। তিনি বলেন, ফনিক্স যদি সত্যিই জেগে ওঠে, তাহলে খুবই খুশি হব। তবে সেই সম্ভাবনা খুব কম। ফনিক্স মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণের পর রোবট সেখানে খনন কাজ চালায়। মঙ্গলের মাটিতে পানি আছে কি না, সেটা জীবনের অসত্মিত্বের জন্য উপযোগী কি না, সেটা পরীৰা করাই খনন কাজের এই মূল উদ্দেশ্য। তবে মাটির উপরিভাগের সামান্য নিচে বরফের অসত্মিত্ব পানির প্রমাণই বহন করে। আর এটা মঙ্গল অভিযানে বিজ্ঞানীদের এ পর্যনত্ম অর্জিত সবচেয়ে বড় সাফল্য।
মনিরা খাতুন
সূত্র : বিবিসি
No comments