এক বিশেষ প্রদর্শনী

 ৮ মার্চ থেকে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে শুরু হয়েছে এক বিশেষ প্রদর্শনী। ২০০৫ সালে শান্তিতে মনোনয়ন পান এক হাজার নারী। ওই সহস্র নারীর মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ১৬ জন নারী। নারী দিবসের শতবর্ষ পূর্তিতে নোবেল মনোনীত ১৬ জনকে নিয়েই এ বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন।
১৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। মহীয়সী এ ১৬ নারী হচ্ছেন_


হেনা দাস (১৯২৪) মাত্র ১৩ বছর বয়সেই যিনি অবিভক্ত ভারতে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। রক্ষণশীল সমাজে পর্দার অন্তরালে আবদ্ধ নারীদের ক্ষমতায়ন এবং অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন অগ্রজ।
এবাদন বিবি (১৯৪৫) একসময় ছিলেন দিনমজুর। ভূমিহীন নারীর অধিকার আদায়ে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বেগম রোকেয়া দিবস পালন শুরু হয় তার হাত ধরেই। তার আন্দোলনের ফলে গ্রামের ভূমিহীন নারীদের জীবনযাত্রা পাল্টে যায়।
নন্দারানী দাস (১৯৬০) নারী অধিকার রক্ষা ও ভূমিহীনদের অধিকার আদায়ে তার ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মহুয়া পাল (১৯৬১) মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তার গ্রামে নিরাশ্রয় প্রতিবন্ধী অসহায় নারীদের জন্য গড়ে তোলা সিআরপি মহিলা সেন্টারের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি।
বেগজাদী মাহমুদা নাসির। শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন তিনি। ১৯৫০ সালে তিনি নারী শিক্ষার ওপর কাজ শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে গড়ে তোলেন ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ এবং ১৯৯৩ সালে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন।
সন্ধ্যা রায়। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাহত সৈনিকদের সাহায্য করতে ১৭ বছর বয়সে ঘর ছাড়েন। এখনও মানুষের সেবা আর লিঙ্গবৈষম্য এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন।
আশালতা বৈদ্য। মুক্তিযুদ্ধে নারী গেরিলা দলের নেত্রী ছিলেন। তার গড়ে তোলা সূর্যমুখী সংস্থার মাধ্যমে ২ লাখেরও বেশি পরিবার সুবিধা পায়।
খুশী কবির (১৯৪৮)। বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন, গ্রামের শ্রমজীবীদের অধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার রক্ষার জন্য ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন।
অ্যাঞ্জেলা গোমেজ (১৯৫২)। দুস্থ নারীদের জন্য 'বাঁচতে শেখা' নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। সাতস গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি নারী এ সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। পাশাপাশি ২ লাখেরও বেশি নারী এখান থেকে পরোক্ষভাবে সুবিধা পাচ্ছেন।
রোকেয়া কবীর (১৯৫২)। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নারী আন্দোলনের সঙ্গে এ দেশের তৃণমূল নারীদের যোগসূত্র স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন প্রায় ২৫ বছর ধরে।
মনোয়ারা বেগম মুক্তিযোদ্ধা। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সরকারি ক্ষেত্রে এবং মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সমিতিতে একাগ্রচিত্তে কাজ করে চলেছেন।
শিরিন বানু। তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য গ্রামে গ্রামে কাজ করেছেন। ভূমিহীন নারীর প্রতি নির্যাতন ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।
রাহেলা খাতুন গরিব মানুষকে ভূমি থেকে উচ্ছেদের চক্রান্তে নামা চিংড়ি ঘেরের মালিকদের বিপক্ষে লড়াই করেছেন। তার মরণপণ সংগ্রামের কারণে তাদের এলাকা দখলদারমুক্ত হয়েছে।
রাফিজা বেগম গ্রামের দরিদ্র গৃহবধূ। পরিষদের নির্বাচন করার অপরাধে স্বামী তাকে ত্যাগ করে। এ অসহায় নারী প্রশিকা থেকে ঋণ নিয়ে নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি গ্রামের অনেক নারীর ভাগ্য বদলে অবিশ্বাস্য ভূমিকা রাখেন।
মাসুদা বানু রত্না প্রতিবন্ধীদের জন্য এসডিসি নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এখানে ফিজিওথেরাপি প্রশিক্ষণ ছাড়াও একটি স্কুল ও এতিমখানা গড়ে তুলেছেন তিনি।
সুফিয়া খাতুন 'নিজেরা করি' সংগঠনের মাধ্যমে গ্রামের অনেক নারীকে সচেতন করে তোলেন। তার এলাকাকে নারী নির্যাতনমুক্ত এলাকায় পরিণত করেন তিনি।
 

No comments

Powered by Blogger.