আসাদকে সরানোর সুযোগ নেই-রাশিয়া
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করানো যাবে না বলে উল্লেখ রাশিয়া। তবে তারা শনিবার জোর দিয়ে বলেছে সিরিয়ার দীর্ঘ ২১ মাসের সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার সুযোগ এখনও রয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ ও আরব লীগের বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি বলেছেন কোন রাজনৈতিক সমঝোতা চুক্তি ছাড়া সিরিয়া ‘নরকে’ পরিণত হবে। এএফপি জানিয়েছে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শান্তিদূত লাখদার ব্রাহিমি হুঁশিয়ারি দিয়ে শনিবার বলেছেন, সিরিয়াকে নরক যন্ত্রণা অথবা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার যে কোন একটি বাছাই করে নিতে হবে।
প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ নিহত হওয়া সংঘর্ষটি দ্রুত বন্ধে বছরের শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে মস্কোয় এ কথা বলেছেন ব্রাহিমি। রাশিয়া আসাদ সরকারের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষণ দেখা যাওয়ার প্রেক্ষিতে ব্যর্থ শান্তি প্রক্রিয়া পুনরায় শুরুর প্রচেষ্টা শুরু করেছেন ব্রাহিমি। তিনি বলেছেন, ২০১৩ সালের প্রথমেই এ সংঘর্ষ বন্ধ হওয়া অপরিহার্য। সার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, সরকার ও বিরোধী দুই পক্ষের উপর বিশ্বশক্তির চাপের কারণে এ বিষয়ে একটা ফল আসবে বলে তিনি ও ব্রাহিমি একমত হয়েছেন। স্বীকার করাটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক সমাধানের সুযোগ থাকার বিষয়ে আমরা একমত। সহিংসতা বন্ধে দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সিরিয়াকে তাড়া দেয়ার রাশিয়ার প্রতি প্রচণ্ড চাপ দিয়ে আসছিল পশ্চিমা দেশগুলো। বিদ্রোহীরা ক্রমে দামেস্কের দিকে অগ্রগতি বজায় রাখার প্রেক্ষাপটে এ চাপ আরও বৃদ্ধি পায়। তরপরও বিষয়টির সমাধানে এখনও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ গত সপ্তাহে নিজের সরে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই বলে লাখদার ব্রাহিমিকে জানিয়ে দিয়েছেন আসাদ। অন্যদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এসেছে সন্দেহজনক বক্তব্য। ব্রাহিমির সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ আবারও বলেছেন, শান্তি আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদের পদত্যাগ পূর্ব শর্ত হতে পারে না। বরং দামেস্কের সঙ্গে আলোচনার বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসাদ বিরোধীরাই শান্তি প্রক্রিয়া আটকে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত কয়েক মাসে আসাদ বিরোধীরা বেশ শক্ত অবস্থানে চলে এসেছে। তবে খুব সহজে বিদ্রোহীরা যুদ্ধে জয়ী হতে পারছে না। ল্যাভরভ বলেছেন প্রেসিডেন্ট আসাদের বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে ও বিশেষভাবে জানিয়েছেন যে তিনি সরছেন না। এর অর্থ তিনি স্বপদে বহাল থাকছেন। আর তার অবস্থান পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনাও নেই। জর্ডান ও লেবাননের কথা উল্লেখ করে ব্রাহিমি বলেছেন, এখনই এ দুই দেশে ১০ লাখ উদ্বাস্তু হামলে পড়েছে। যদি অবস্থা আরও খারাপ হয় তবে উদ্বাস্তুর সংখ্যা অনেক বাড়বে। ফলে সহিংসতা চলার চেয়ে রাজনৈতিক সমাধানই আমরা সবাই আশা করি। ল্যাভরভ অবশ্য হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সিরিয়ার ক্ষেত্রে এখন দুটি বিকল্প রয়েছে। একটি হলো-রাজনৈকিত সমাধান, অন্যটি সোমালিয়ার মতো ব্যর্থ ও গৃহযুদ্ধকবলিত দেশে পরিণত হওয়া। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। রাশিয়া মূলত ব্রাহিমির সঙ্গে সিরিয়ার বিরোধী জোটের নেতা আহমাদ মোয়াজ আল খাতিবকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তবে ল্যাভরভের বিভিন্ন বক্তব্যের কারণে তিনি যাননি। এ বিষয়ে ল্যাভরভ বলেছেন, আমি বুঝতে পারছি মোয়াজ আল খাতিব রাজনীতিতে খুব একটা পটু নয়। তার উচিত কোন কিছু মিডিয়ার কাছ থেকে না শুনে আমাদের কাছ থেকে সরাসরি শোনা। এদিকে চলমান সহিংসতায় শনিবার সিরিয়ায় ১৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে ৭৬ জন বেসামরিক নাগরিক। সিরিয়ার চলমান পরিস্থিতিতে মিশরের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুরসি বলেছেন, ভবিষ্যৎ সিরিয়ায় বর্তমান প্রশাসনের কোন স্থান দেখতে পারছেন না।
একদিনেই নিহত ৪০০
সিরিয়াতে শনিবার একদিনেই ৩৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২১ মাস আগে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর এক দিনেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কারণে একে সিরিয়ার জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ দিন বলে উল্লেখ করেছে সরকারবিরোধী লোকাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এলসিসি)। গতকাল সংগঠনটি এর ওয়েবসাইটে বলেছে শনিবার রাত নাগাদ এলসিসি ৩৯৭ জনের মৃত্যু লিপিবদ্ধ করেছে। নিহতদের মধ্যে ২০টি শিশু এবং ২০জন নারীও ছিলেন। এলসিসি বলেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী দেইর বালবাহ এলাকা পুনর্দখল করে নেয়ার পর সেখানে ২২০ জনকে হত্যা করেছে। সিএনএন জানিয়েছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর আটক সেনাদের কাছ থেকেই এ গণহত্যা সম্পর্কে জানা গেছে। সিরিযা সরকার অবশ্য এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। অবশ্য সরকারি টেলিভিশনে নিহতদের মৃতদেহ এবং একটি টানেল থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র দেখিয়ে বলা হযেছে সন্ত্রাসীরা এসব অস্ত্র ব্যবহার করতো।
একদিনেই নিহত ৪০০
সিরিয়াতে শনিবার একদিনেই ৩৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২১ মাস আগে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর এক দিনেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কারণে একে সিরিয়ার জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ দিন বলে উল্লেখ করেছে সরকারবিরোধী লোকাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এলসিসি)। গতকাল সংগঠনটি এর ওয়েবসাইটে বলেছে শনিবার রাত নাগাদ এলসিসি ৩৯৭ জনের মৃত্যু লিপিবদ্ধ করেছে। নিহতদের মধ্যে ২০টি শিশু এবং ২০জন নারীও ছিলেন। এলসিসি বলেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী দেইর বালবাহ এলাকা পুনর্দখল করে নেয়ার পর সেখানে ২২০ জনকে হত্যা করেছে। সিএনএন জানিয়েছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর আটক সেনাদের কাছ থেকেই এ গণহত্যা সম্পর্কে জানা গেছে। সিরিযা সরকার অবশ্য এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। অবশ্য সরকারি টেলিভিশনে নিহতদের মৃতদেহ এবং একটি টানেল থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র দেখিয়ে বলা হযেছে সন্ত্রাসীরা এসব অস্ত্র ব্যবহার করতো।
No comments