চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল- ভেতরে-বাইরে ব্যবসা by শিশির মোড়ল
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘিরে ফেলেছে রোগনির্ণয় কেন্দ্র, ওষুধের দোকান আর চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার। হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে হোটেল থেকে শুরু করে নানা সামগ্রীর দোকান। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ওপর নির্ভর করে চলছে হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরের এসব প্রতিষ্ঠান।
সম্প্রতি হাসপাতাল ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য হাসপাতালের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা দুর্বল। এ দুর্বলতা কাটানোর জন্য বেশ কিছু হাসপাতালে সেনা কর্মকর্তাদের পরিচালকের পদে বসানো হয়েছে। তাতে খুব লাভ হয়নি। তিনি বলেন, হাসপাতালের ভেতরে খাবার বা অন্য দোকান পরিবেশ নষ্ট করে। এটা বাঞ্ছনীয় নয়, উচ্ছেদ করতেই হবে।
হাসপাতাল ভবনে ঢুকলেই চোখে পড়ে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান ও দর্শনার্থীদের অনুমতিপত্র বিক্রয়কেন্দ্র। এরপর এক্সপ্রেস মানি, অগ্রণী ব্যাংক ও মানি ট্রান্সফার—এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। আছে মেডিকেল কলেজ ডাকঘর। আর খাতা-পেনসিল-কাগজ, সুতা, বিস্কুট বিক্রির ছোট একটি দোকান। মূল প্রবেশপথে হাসপাতালের তথ্য পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।
হাসপাতালে দর্শনার্থী যেকোনো সময় ঢুকতে পারে। সকাল সাড়ে নয়টার আগে ২০ টাকার টিকিট কিনতে হয় জরুরি বিভাগ থেকে। সাড়ে নয়টার পর টিকিটের দাম ১০ টাকা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দিনে আট শতাধিক টিকিট বিক্রি হয়।
টিকিট বিক্রির টাকার বড় অংশ ব্যবহার করা হয় পরিচ্ছন্নতার কাজে। এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানকে। বিভিন্ন তলা ঘুরলে বোঝার উপায় নেই, এ হাসপাতাল নিয়মিত কেউ পরিষ্কার করে।
কাগজ, ওষুধের মোড়ক, ডাব-কলা-আপেল-কমলার খোসা শুধু হাসপাতালে ঢোকার রাস্তায় নয়, পড়ে আছে বারান্দায়, বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনে-ভেতরে। আছে পানের পিকের দাগ। অধিকাংশ শৌচাগার নোংরা, পানি থাকে না, ব্যবহারের অনুপযোগী।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক কাজী সফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন না করে ৫০০ শয্যার হাসপাতালকে এক হাজার ১০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এখন দৈনিক রোগী ভর্তি থাকে গড়ে দুই হাজার ২০০। এ ছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী হাসপাতালে আসে। এত মানুষের চাপ নেওয়ার মতো অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা এ হাসপাতালে নেই।
হাসপাতালে ওয়াসার সাতটি পানি সরবরাহের লাইন আছে। দুটিতে কোনো দিন পানি সরবরাহ ছিল না। বাকি কোনো লাইনে সার্বক্ষণিক পানি থাকে না।
শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মো. রেজাউল করিম বলেন, রোগী দেখার পর হাত পরিষ্কার করার মতো পানিও পাওয়া যায় না। রোগীরা শৌচাগারে যেতে চায় না।
সেবা: দৈনিক গড়ে ৩০০ রোগী জরুরি বিভাগে আসে। তবে সেখানে কোনো সেবা দেওয়া হয় না। পর পর তিন দিন এ বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, রোগী এলে তার কাছ থেকে সমস্যা শুনে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসা করা হয় না। করার ব্যবস্থাও নেই।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যাপক জানান, অন্যের অনেকগুলো ওষুধ খেয়ে ফেলে তাঁর শিশুসন্তান। তিনি সন্তানকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুই ঘণ্টায় কোনো চিকিৎসক শিশুটিকে দেখেননি বা দেখার সময় পাননি। পরে শিশুটিকে বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়।
হূদেরাগ বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, কক্ষের মেঝেতে ও বারান্দায় রোগী গাদাগাদি করে শুয়ে আছে। প্রতি রোগীর সঙ্গে রয়েছে একাধিক দর্শনার্থী। এ বিভাগে ২৪ ডিসেম্বর ভর্তি হয়েছেন রাউজানের মো. হোসেন (৩৫)। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর ঠাঁই হয়েছে বিভাগে ঢোকার মুখের কলাপসিবল গেটের পাশে। সেখানে আরও অনেক রোগী।
হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার বন্ধ থাকায় পরদিন ডাক্তার দেখেছেন। এখান থেকে কিছু ট্যাবলেট দেওয়া হয়। আর প্রতিদিন দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এগুলো বাইরে থেকে কিনতে হয়। প্রতিটি ইনজেকশনের দাম ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া ট্রলিতে করে এখানে ওঠাতে নিয়েছে ৫০ টাকা।’
হাসপাতালের উপপরিচালক বলেন, হূদেরাগ বিভাগে শয্যাসংখ্যা ২০, রোগী ভর্তি থাকে ২০০-এর মতো। মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের নূর মোহাম্মদ (৪০)। ওয়ার্ডের বাইরে মেঝেতে তাঁর শয্যা। ডাকাতের কিরিচের কোপে তাঁর ডান হাতের পাঞ্জা কেটে যায়।
নূর মোহাম্মদের ভাই মো. রাসেল বলেন, ২২ ডিসেম্বর ভর্তি হওয়ার পর অস্ত্রোপচার করা হয়। এ জন্য বাইরে থেকে ওষুধ ও ব্যান্ডেজ কেনা বাবদ খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন ইনজেকশন ও ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ভেতরে দোকান: হাসপাতালের ভেতরে দোকানের কোনো অভাব নেই। পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকান ছাড়াও রয়েছে একাধিক হোটেল। আছে ফলের দোকান। প্লাস্টিকের থালা, বদনা, মগ, ঝাড়ুর দোকানও আছে। মূল ভবনের তিনতলায় চিকিৎসকদের জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া আছে। সেখানে খোলা জায়গায় চারটি বেঞ্চ আর দুটি টেবিলে দিব্যি হোটেল চলছে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।
রাত নয়টার দিকে জামা-কাপড়, লুঙ্গি, বিছানার চাদরের দোকান বসে হাসপাতাল চত্বরে। রাত দুইটা পর্যন্ত এ দোকানগুলো খোলা থাকে।
ব্যবসা বাইরেও: হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপারে ২২টি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র, ক্লিনিক ও ছোট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এসবের কোনো কোনোটি বহুতলবিশিষ্ট। আছে ৫০টির বেশি ওষুধের দোকান। আর আছে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রোগী বা রোগীর আত্মীয় ছাড়াও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মচারীদের এসব প্রতিষ্ঠানে ওষুধ কিনতে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যাওয়া-আসা করতে দেখা যায়। এ কাজের জন্য তাঁরা বাড়তি টাকা পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, অধিকাংশ ওয়ার্ডবয়কে সারা দিনেও পাওয়া যায় না। এঁরা টাকার বিনিময়ে রোগীর ওষুধ কেনা, হাসপাতালের বাইরে পরীক্ষা করানো, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে যোগাযোগ করিয়ে দিতে ব্যস্ত থাকেন। এ হাসপাতালের রোগী ব্যক্তিমালিকানাধীন ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপাতালে নিতে মধ্যস্থতাকারীর কাজ করেন।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রণব বল, নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম)
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য হাসপাতালের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা দুর্বল। এ দুর্বলতা কাটানোর জন্য বেশ কিছু হাসপাতালে সেনা কর্মকর্তাদের পরিচালকের পদে বসানো হয়েছে। তাতে খুব লাভ হয়নি। তিনি বলেন, হাসপাতালের ভেতরে খাবার বা অন্য দোকান পরিবেশ নষ্ট করে। এটা বাঞ্ছনীয় নয়, উচ্ছেদ করতেই হবে।
হাসপাতাল ভবনে ঢুকলেই চোখে পড়ে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান ও দর্শনার্থীদের অনুমতিপত্র বিক্রয়কেন্দ্র। এরপর এক্সপ্রেস মানি, অগ্রণী ব্যাংক ও মানি ট্রান্সফার—এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। আছে মেডিকেল কলেজ ডাকঘর। আর খাতা-পেনসিল-কাগজ, সুতা, বিস্কুট বিক্রির ছোট একটি দোকান। মূল প্রবেশপথে হাসপাতালের তথ্য পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।
হাসপাতালে দর্শনার্থী যেকোনো সময় ঢুকতে পারে। সকাল সাড়ে নয়টার আগে ২০ টাকার টিকিট কিনতে হয় জরুরি বিভাগ থেকে। সাড়ে নয়টার পর টিকিটের দাম ১০ টাকা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দিনে আট শতাধিক টিকিট বিক্রি হয়।
টিকিট বিক্রির টাকার বড় অংশ ব্যবহার করা হয় পরিচ্ছন্নতার কাজে। এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানকে। বিভিন্ন তলা ঘুরলে বোঝার উপায় নেই, এ হাসপাতাল নিয়মিত কেউ পরিষ্কার করে।
কাগজ, ওষুধের মোড়ক, ডাব-কলা-আপেল-কমলার খোসা শুধু হাসপাতালে ঢোকার রাস্তায় নয়, পড়ে আছে বারান্দায়, বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনে-ভেতরে। আছে পানের পিকের দাগ। অধিকাংশ শৌচাগার নোংরা, পানি থাকে না, ব্যবহারের অনুপযোগী।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক কাজী সফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন না করে ৫০০ শয্যার হাসপাতালকে এক হাজার ১০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এখন দৈনিক রোগী ভর্তি থাকে গড়ে দুই হাজার ২০০। এ ছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী হাসপাতালে আসে। এত মানুষের চাপ নেওয়ার মতো অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা এ হাসপাতালে নেই।
হাসপাতালে ওয়াসার সাতটি পানি সরবরাহের লাইন আছে। দুটিতে কোনো দিন পানি সরবরাহ ছিল না। বাকি কোনো লাইনে সার্বক্ষণিক পানি থাকে না।
শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মো. রেজাউল করিম বলেন, রোগী দেখার পর হাত পরিষ্কার করার মতো পানিও পাওয়া যায় না। রোগীরা শৌচাগারে যেতে চায় না।
সেবা: দৈনিক গড়ে ৩০০ রোগী জরুরি বিভাগে আসে। তবে সেখানে কোনো সেবা দেওয়া হয় না। পর পর তিন দিন এ বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, রোগী এলে তার কাছ থেকে সমস্যা শুনে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসা করা হয় না। করার ব্যবস্থাও নেই।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যাপক জানান, অন্যের অনেকগুলো ওষুধ খেয়ে ফেলে তাঁর শিশুসন্তান। তিনি সন্তানকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুই ঘণ্টায় কোনো চিকিৎসক শিশুটিকে দেখেননি বা দেখার সময় পাননি। পরে শিশুটিকে বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়।
হূদেরাগ বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, কক্ষের মেঝেতে ও বারান্দায় রোগী গাদাগাদি করে শুয়ে আছে। প্রতি রোগীর সঙ্গে রয়েছে একাধিক দর্শনার্থী। এ বিভাগে ২৪ ডিসেম্বর ভর্তি হয়েছেন রাউজানের মো. হোসেন (৩৫)। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর ঠাঁই হয়েছে বিভাগে ঢোকার মুখের কলাপসিবল গেটের পাশে। সেখানে আরও অনেক রোগী।
হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার বন্ধ থাকায় পরদিন ডাক্তার দেখেছেন। এখান থেকে কিছু ট্যাবলেট দেওয়া হয়। আর প্রতিদিন দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এগুলো বাইরে থেকে কিনতে হয়। প্রতিটি ইনজেকশনের দাম ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া ট্রলিতে করে এখানে ওঠাতে নিয়েছে ৫০ টাকা।’
হাসপাতালের উপপরিচালক বলেন, হূদেরাগ বিভাগে শয্যাসংখ্যা ২০, রোগী ভর্তি থাকে ২০০-এর মতো। মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের নূর মোহাম্মদ (৪০)। ওয়ার্ডের বাইরে মেঝেতে তাঁর শয্যা। ডাকাতের কিরিচের কোপে তাঁর ডান হাতের পাঞ্জা কেটে যায়।
নূর মোহাম্মদের ভাই মো. রাসেল বলেন, ২২ ডিসেম্বর ভর্তি হওয়ার পর অস্ত্রোপচার করা হয়। এ জন্য বাইরে থেকে ওষুধ ও ব্যান্ডেজ কেনা বাবদ খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন ইনজেকশন ও ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ভেতরে দোকান: হাসপাতালের ভেতরে দোকানের কোনো অভাব নেই। পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকান ছাড়াও রয়েছে একাধিক হোটেল। আছে ফলের দোকান। প্লাস্টিকের থালা, বদনা, মগ, ঝাড়ুর দোকানও আছে। মূল ভবনের তিনতলায় চিকিৎসকদের জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া আছে। সেখানে খোলা জায়গায় চারটি বেঞ্চ আর দুটি টেবিলে দিব্যি হোটেল চলছে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।
রাত নয়টার দিকে জামা-কাপড়, লুঙ্গি, বিছানার চাদরের দোকান বসে হাসপাতাল চত্বরে। রাত দুইটা পর্যন্ত এ দোকানগুলো খোলা থাকে।
ব্যবসা বাইরেও: হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপারে ২২টি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র, ক্লিনিক ও ছোট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এসবের কোনো কোনোটি বহুতলবিশিষ্ট। আছে ৫০টির বেশি ওষুধের দোকান। আর আছে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রোগী বা রোগীর আত্মীয় ছাড়াও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মচারীদের এসব প্রতিষ্ঠানে ওষুধ কিনতে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যাওয়া-আসা করতে দেখা যায়। এ কাজের জন্য তাঁরা বাড়তি টাকা পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, অধিকাংশ ওয়ার্ডবয়কে সারা দিনেও পাওয়া যায় না। এঁরা টাকার বিনিময়ে রোগীর ওষুধ কেনা, হাসপাতালের বাইরে পরীক্ষা করানো, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে যোগাযোগ করিয়ে দিতে ব্যস্ত থাকেন। এ হাসপাতালের রোগী ব্যক্তিমালিকানাধীন ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপাতালে নিতে মধ্যস্থতাকারীর কাজ করেন।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রণব বল, নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম)
No comments