চালকদের ভুয়া লাইসেন্স-সড়ক নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক
সড়ক দুর্ঘটনা এ দেশে নিত্যকার ঘটনা। প্রতিদিন রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ও দুর্ঘটনা বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য অনেক নাগরিকই সরব।
কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না, ক্ষেত্রবিশেষে দুর্ঘটনার হার বেড়ে চলেছে বলে অনেকে মনে করেন। দুর্ঘটনার জন্য একদিকে যেমন নাগরিকদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অসচেতনতা বা ট্রাফিক আইন প্রয়োগে শিথিলতা দায়ী, তেমনি চালকদের অসাবধানতাও এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দায়ী। শুধু অসাবধানতা শব্দটি দিয়ে চালকদের বিষয়টিকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা চলে না। দেখা যায়, যারা হাইওয়ে এমনকি শহরের ভেতর গাড়ি চালান, তাদের অনেকেরই বৈধ লাইসেন্স নেই। অর্থাৎ চালকদের অনেকেই কোনো পরীক্ষা পার না হয়েই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। ফলে অদক্ষ ও অপরীক্ষিত চালকরা রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটাবে, সেটিই স্বাভাবিক। অবশ্য বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষ অনেক চালকই বেপরোয়া গাড়ি চালাতে পারেন। যেখানে-সেখানে ওভারটেক ও টপকে যাওয়ার প্রবণতা এবং গাড়ির বেপরোয়া পাল্লার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবারের সমকালে ঢাকায় চালকদের অবৈধ লাইসেন্স নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা শহরের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। এখানে রীতিমতো অবৈধ লাইসেন্সের দৌরাত্ম্য চলছে। রাজধানী শহরে যেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশি, সেখানকার রাস্তায় যদি অবৈধ চালকদের দৌরাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত হয় তবে দেশের অন্যত্র কী অবস্থা, তা সহজেই বোধগম্য। ঢাকা শহরের রাস্তার সমস্যা ব্যাপক। অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও অপর্যাপ্ততা সমস্যাকে ব্যাপকতর করে তুলেছে। যানজটের অন্য কারণগুলোর সঙ্গে চালকদের অদক্ষতার বিষয়টি অনেক সময়ই নজর এড়িয়ে যায়। রাস্তায় ঘন ঘন লেনবদল, ওভারটেক, বেপরোয়া গাড়ি চালনা, অবৈধ পার্কিং, যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ইত্যাদি সমস্যা রাস্তাকে অসহনীয় করে তোলে। এ সমস্যাগুলোর মূলে চালকদের অদক্ষতা। আমরা মনে করি, রাজধানীতে সঠিকভাবে অভিযান চালালে অবৈধ চালকদের খুঁজে বের করা সম্ভব। ফলে এমন একটি অভিযান জরুরি। এ ধরনের অভিযান চললে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা ও দুর্ঘটনা থেকে সহজে রেহাই মিলতে পারে।
No comments