পবিত্র কোরআনের আলো-হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর পরিবারকে আল্লাহর রহমত ও বরকতপ্রাপ্ত পরম সম্মানিত বলে ঘোষণা প্রদান
৭৩। ক্বা-লূ আতা'জাবীনা মিন্ আমরিল্লা-হি রাহ্মাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহূ আ'লাইকুম আহ্লাল বাইতি; ইন্নাহূ হ্বামীদুম্ মাজীদ।
৭৪। ফালাম্মা- যাহাবা আ'ন ইব্রা-হীমার্ রাওউ' ওয়া জা-আতহুল বুশ্রা- ইউজা-দিলুনা- ফী ক্বাওমিন লূত্ব।
৭৪। ফালাম্মা- যাহাবা আ'ন ইব্রা-হীমার্ রাওউ' ওয়া জা-আতহুল বুশ্রা- ইউজা-দিলুনা- ফী ক্বাওমিন লূত্ব।
৭৫। ইন্না ইব্রা-হীমা লাহ্বালীমুন আওয়্যা-হুম্ মুনীব।
৭৬। ইয়া-ইব্রা-হীমু আ'রিদ্ব আ'ন হা-যা-; ইন্নাহূ ক্বাদ জা-আ আমরু রাবি্বকা; ওয়া ইন্নাহুম আ-তীহিম আ'যা-বুন গাইরু মারদূদ।
[সুরা : হুদ, আয়াত : ৭৩-৭৬]
অনুবাদ : ৭৩। ফিরিশতারা বললেন, আপনি কি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছেন? আপনাদের মতো সম্মানিত পরিবারের ওপর রয়েছে আল্লাহর রহমত ও বরকত। নিশ্চয়ই তিনি সর্বময় প্রশংসার হকদার ও অতি মর্যাদাবান।
৭৪। অতঃপর যখন ইব্রাহিমের সংশয় দূর হলো এবং তিনি সুসংবাদ লাভ করলেন, তখন তিনি লুতের সম্প্রদায় সম্পর্কে আমার সঙ্গে (সুপারিশ ও আবদারে) বচসা শুরু করে দিলেন।
৭৫। বস্তুত ইব্রাহিম অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান, সহনশীল এবং অত্যন্ত নরম মনের মানুষ, যিনি সর্বদা আমার প্রতি অবিনিবিষ্ট।
৭৬। (আমি তাঁকে বললাম), হে ইব্রাহিম, এ বিষয়টা থেকে আপনি বিরত থাকুন। এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবেই আপনার প্রতিপালকের নির্দেশ এসে গেছে। তাদের ওপর শাস্তি আসবেই, আর এ শাস্তি অপ্রতিরোধ্য।
ব্যাখ্যা : ৭৩ নম্বর আয়াতে হজরত ইব্রাহিমের পরিবারকে আল্লাহর রহমত ও বরকতপ্রাপ্ত পরম সম্মানিত পরিবার বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এটা মানবজাতির ইতিহাসে এক বিরল সম্মাননার ঘোষণা, যা এসেছে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবার বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ও পরিবারের নজির। এ ঘোষণাসহ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত তাঁর অবস্থানের ওপর ভিত্তি করেই আমরা নামাজের ভেতর রাসুলের (সা.) ওপর দরুদ পাঠের সময় নবীগণের পিতৃপুরুষ হজরত ইব্রাহিম, তাঁর পরিবার ও বংশধরদের উদাহরণ উল্লেখ করি। হজরত ইব্রাহিম (আ.) মানবসভ্যতায় সম্মান ও নির্ভরতার এক অনন্য স্তম্ভ।
৭৪ নম্বর থেকে পরবর্তী কতগুলো আয়াত এসেছে নবী লুতের অবাধ্য জাতি ও তাদের শাস্তি প্রদান প্রসঙ্গে। তবে এ কাহিনী শুরু করা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সম্পৃক্ততা দিয়ে। ইব্রাহিম-লুতের সম্পর্ক ও সামুদ জনপদে লুতকে পাঠানোর কথা আগের সংখ্যায় কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়েছে। নবী লুতের নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং পথভ্রষ্ট সামুদ জাতির প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তাদের সংশোধনের আশায় তিনি আল্লাহর কাছে জোর তদবির ও আবদার জানাচ্ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর এই মন-মানসিকতাকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন এবং ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তবে তাঁর সব আবদারই নাকচ করে দিয়েছেন। জানানো হয়েছে, অবাধ্য সেই জাতিকে শাস্তি দেওয়া হবে, কারণ শাস্তি নির্ধারিত হয়ে গেছে। তা আর কোনোভাবেই প্রতিরোধযোগ্য নয়।
৭৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহর সঙ্গে ইব্রাহিম (আ.)-এর 'জিদাল' বচসা বা ঝগড়ার কথা বলা হয়েছে। সেটা প্রকৃত বচসা বা ঝগড়া নয়। আদুরে ভাষায় সেটা বলা হয়েছে।
হজরত লুত (আ.) যে জাতিকে হেদায়াতের পথে আনতে প্রেরিত হয়েছিলেন, তারা শেষ পর্যন্ত হেদায়াতের পথে আসেনি। তারা ছিল এক অত্যাচারী পৌত্তলিক জাতি। তা ছাড়া সমকামিতার মতো এক বিশ্রী অনাচারে তারা লিপ্ত ছিল। নবী লুতের পথনির্দেশনায় তারা সুপথে আসতে ব্যর্থ হয়েছিল। সুতরাং ইব্রাহিম (আ.)-এর আবদার-অনুরোধ আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়নি, যদিও তিনি ছিলেন আল্লাহর অতি প্রিয়পাত্র। তবে আল্লাহ তাঁর শাস্তি থেকে নবী লুত ও তাঁর ইমানদার সঙ্গীদের ঠিকই রক্ষা করেছিলেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৭৬। ইয়া-ইব্রা-হীমু আ'রিদ্ব আ'ন হা-যা-; ইন্নাহূ ক্বাদ জা-আ আমরু রাবি্বকা; ওয়া ইন্নাহুম আ-তীহিম আ'যা-বুন গাইরু মারদূদ।
[সুরা : হুদ, আয়াত : ৭৩-৭৬]
অনুবাদ : ৭৩। ফিরিশতারা বললেন, আপনি কি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছেন? আপনাদের মতো সম্মানিত পরিবারের ওপর রয়েছে আল্লাহর রহমত ও বরকত। নিশ্চয়ই তিনি সর্বময় প্রশংসার হকদার ও অতি মর্যাদাবান।
৭৪। অতঃপর যখন ইব্রাহিমের সংশয় দূর হলো এবং তিনি সুসংবাদ লাভ করলেন, তখন তিনি লুতের সম্প্রদায় সম্পর্কে আমার সঙ্গে (সুপারিশ ও আবদারে) বচসা শুরু করে দিলেন।
৭৫। বস্তুত ইব্রাহিম অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান, সহনশীল এবং অত্যন্ত নরম মনের মানুষ, যিনি সর্বদা আমার প্রতি অবিনিবিষ্ট।
৭৬। (আমি তাঁকে বললাম), হে ইব্রাহিম, এ বিষয়টা থেকে আপনি বিরত থাকুন। এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবেই আপনার প্রতিপালকের নির্দেশ এসে গেছে। তাদের ওপর শাস্তি আসবেই, আর এ শাস্তি অপ্রতিরোধ্য।
ব্যাখ্যা : ৭৩ নম্বর আয়াতে হজরত ইব্রাহিমের পরিবারকে আল্লাহর রহমত ও বরকতপ্রাপ্ত পরম সম্মানিত পরিবার বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এটা মানবজাতির ইতিহাসে এক বিরল সম্মাননার ঘোষণা, যা এসেছে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবার বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ও পরিবারের নজির। এ ঘোষণাসহ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত তাঁর অবস্থানের ওপর ভিত্তি করেই আমরা নামাজের ভেতর রাসুলের (সা.) ওপর দরুদ পাঠের সময় নবীগণের পিতৃপুরুষ হজরত ইব্রাহিম, তাঁর পরিবার ও বংশধরদের উদাহরণ উল্লেখ করি। হজরত ইব্রাহিম (আ.) মানবসভ্যতায় সম্মান ও নির্ভরতার এক অনন্য স্তম্ভ।
৭৪ নম্বর থেকে পরবর্তী কতগুলো আয়াত এসেছে নবী লুতের অবাধ্য জাতি ও তাদের শাস্তি প্রদান প্রসঙ্গে। তবে এ কাহিনী শুরু করা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সম্পৃক্ততা দিয়ে। ইব্রাহিম-লুতের সম্পর্ক ও সামুদ জনপদে লুতকে পাঠানোর কথা আগের সংখ্যায় কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়েছে। নবী লুতের নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং পথভ্রষ্ট সামুদ জাতির প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তাদের সংশোধনের আশায় তিনি আল্লাহর কাছে জোর তদবির ও আবদার জানাচ্ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর এই মন-মানসিকতাকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন এবং ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তবে তাঁর সব আবদারই নাকচ করে দিয়েছেন। জানানো হয়েছে, অবাধ্য সেই জাতিকে শাস্তি দেওয়া হবে, কারণ শাস্তি নির্ধারিত হয়ে গেছে। তা আর কোনোভাবেই প্রতিরোধযোগ্য নয়।
৭৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহর সঙ্গে ইব্রাহিম (আ.)-এর 'জিদাল' বচসা বা ঝগড়ার কথা বলা হয়েছে। সেটা প্রকৃত বচসা বা ঝগড়া নয়। আদুরে ভাষায় সেটা বলা হয়েছে।
হজরত লুত (আ.) যে জাতিকে হেদায়াতের পথে আনতে প্রেরিত হয়েছিলেন, তারা শেষ পর্যন্ত হেদায়াতের পথে আসেনি। তারা ছিল এক অত্যাচারী পৌত্তলিক জাতি। তা ছাড়া সমকামিতার মতো এক বিশ্রী অনাচারে তারা লিপ্ত ছিল। নবী লুতের পথনির্দেশনায় তারা সুপথে আসতে ব্যর্থ হয়েছিল। সুতরাং ইব্রাহিম (আ.)-এর আবদার-অনুরোধ আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়নি, যদিও তিনি ছিলেন আল্লাহর অতি প্রিয়পাত্র। তবে আল্লাহ তাঁর শাস্তি থেকে নবী লুত ও তাঁর ইমানদার সঙ্গীদের ঠিকই রক্ষা করেছিলেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments