গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ আগেও দু’ বার সংশোধন হয়েছে

গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ এর আগে আরো দুবার সংশোধন করা হয়েছিল। ওই দুই সংশোধনীতে দেশের সর্ববৃহৎ এই ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির বোর্ডকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়।
সরকারী নথিতে দেখা যায়, ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিশেষ গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জারিকৃত এই


অধ্যাদেশ প্রথমবার ১৯৮৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই সংশোধন করা হয়।
তৃতীয় ও সর্বশেষ এই অধ্যাদেশটি জারি হয় গত ২০১২ সালের ২২ আগস্ট। এতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগে প্রয়োজনীয় কিছু সংশোধনী আনা হয়।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হওয়ার পর থেকেই মুহাম্মদ ইউনূস এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ১৯৮৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা বিন্যাস পরিবর্তন অধ্যাদেশ সংশোধন করেন পরবর্তী অর্থমন্ত্রী সায়ীদুজ্জামান।
প্রথম সংশোধনীতে প্রাথমিকভাবে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ক্ষমতা বাড়াতে তিনটি ধারায় বড় ধরনের পরিবর্তন করা হয়। ১৯৮৬ সালের সংশোধনীতে চেয়ারম্যানকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ দেয়া হলেও এতে বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ জনে উন্নীত করা হয়। এই মালিকানা বিন্যাস পরির্বতনের ফলে ৭৫ ভাগ গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা চলে যায় ঋণ গ্রহীতাদের কাছে এবং ৬০ শতাংশ থেকে সরকারের মালিকানা কমে দাঁড়ায় ২৫ শতাংশে। ওই অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ডের গঠনও পরিবর্তন করা হয়।
পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই গ্রামীণ ব্যাংক আইন সংশোধন করে এভাবে করা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেবে পরিচালনা পর্ষদ, সরকার নয়। যে কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব পালন করেন।
তবে সর্বশেষ আইন সংশোধন হলো ২২ আগস্ট। অবশ্য সরকার নতুন এমডি নিয়োগের জন্য এই আইন সংশোধন করেছে। গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশ ২০১২ নামে এই গেজেট জারি করা হয়। ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০১২-এর চূড়ান্ত খসড়ায় মূল আইনের ১৪ ধারায় তিনটি সংশোধনী আনা হয়েছে।
জারি করা অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, এমডি নিয়োগের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বোর্ডের পরামর্শ নিয়ে একটি ‘সিলেকশন কমিটি’ গঠন করবেন, যার সদস্য হবে তিন থেকে পাঁচ জন। এই কমিটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের জন্য তিন জনের একটি প্যানেল নির্বাচন করবে। তাদের মধ্য থেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন এমডি বেছে নেয়া হবে। পরে বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক মিলে নতুন এমডি নিয়োগ দিবে। তবে প্যানেল মনোনয়নের ক্ষেত্রে ‘মাইক্রো-ফাইন্যান্সিং’ বিষয়ে অভিজ্ঞ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে অধ্যাদেশে।

No comments

Powered by Blogger.