মানবাধিকার সংস্থার দাবি-কাচিন শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে চীন

মিয়ানমারের কাচিন নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠীর শরণার্থীদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে। মিয়ানমারে সংঘাতের মুখে কাচিন নৃগোষ্ঠীর এসব মানুষ চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশে আশ্রয় নিয়েছিল।


এইচআরডাব্লিউ জানায়, গত সপ্তাহে চীন অন্তত এক হাজার কাচিন শরণার্থীকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন প্রদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। ইউনান প্রদেশের শরণার্থী শিবির থেকে আরো চার হাজার শরণার্থীকে তারা দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। তবে এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউনানের প্রাদেশিক সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এইচআরডাব্লিউ এক বিবৃতিতে জানায়, ১৭ বছরের অস্ত্রবিরতি ভেঙে গত বছরের মাঝামাঝি আবার কাচিন ইনডিপেনডেন্ট আর্মি (কেআইএ) ও মিয়ানমার সরকারের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ১০ হাজারের বেশি কাচিন ইউনানে আশ্রয় নেয়।
এইচআরডাব্লিউর শরণার্থী প্রকল্পের পরিচালক বিল ফ্রিলিক বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মধ্যে কাচিন শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে চীন আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতাকে লঙ্ঘন করছে। অবিলম্বে চীনের এ ধরনের মনোভাবের পরিবর্তন এবং শরণার্থীদের সাময়িকভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য চীনের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।
কাচিন ইনডিপেনডেন্ট অর্গানাইজেশনের (কেআইও) মুখপাত্র লা নান বলেন, মিয়ানমারে ফিরে আসার জন্য ইউনান প্রদেশের কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরেই কাচিন শরণার্থীদের ওপর চাপ দিয়ে আসছিল। শরণার্থী শিবির থেকে এক হাজারের বেশি লোক দেশে ফেরত এসেছে।
চীন কাচিন শরণার্থীদের জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে বলে গত জুনে এইচআরডাব্লিউ অভিযোগ করেছিল। ওই সময় চীন এ অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা জানায়, ফেরত পাঠানো লোকজন কাচিনগোষ্ঠীর শরণার্থী নয়।
গত জুনে এইচআরডাব্লিউর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন কর্তৃপক্ষ ইউনান প্রদেশে আগে থেকে আশ্রয় নেওয়া ৭ থেকে ১০ হাজার কাচিন শরণার্থীদের সাময়িক নিরাপত্তা, খাদ্য, শিক্ষা বা অন্যান্য সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আরো বলেছে, এই শরণার্থীদের কাছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর যাওয়া অত্যন্ত জরুরি হলেও চীন সরকার তাতে বাধা দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, কাচিন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া এ সংঘাত মিয়ানমারের নতুন বেসামরিক সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.