মন্ত্রী-এমপিসহ ক্ষমতাসীনদের বেতনভাতা বাড়লঃ জনগণের কী হবে?
এবার ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তিদের বেতনভাতাও বাড়ল। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিদের বেতনভাতা প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। বর্তমান বেতনের সঙ্গে শতকরা ৮৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় এখন রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০, প্রধানমন্ত্রীর ৫৮ হাজার ৬০০, স্পিকারের ৫৭ হাজার ২০০, মন্ত্রীদের ৫৩ হাজার ১০০ এবং এমপিদের সম্মানী ২৭ হাজার ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া মন্ত্রীদের সরকারি বাসার আসবাবপত্র বাবদ খরচ দেড় লাখ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। সরকারি বাসায় না থাকলে বাসাভাড়া বাবদ আগের ২৫ হাজারের স্থলে এখন ৪৫ হাজার টাকা পাবেন। এতে তাদের খুশি উপচে পড়ছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিসহ বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি স্বাভাবিক হলে এদেশে অন্য যারা বসবাস করে, তাদের বিষয়টা বিবেচনায় না আনার দায় কাদের ওপর বর্তাবে, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
এর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন আগের তুলনায় সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এই বেতন বৃদ্ধি সাধারণত বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করেই বাড়ানো হয়ে থাকে। এ থেকে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তবে বাজারে শুধু সরকারি ক্ষমতাধররাই যান না, ক্ষমতাহীনরাও যান। তারাই সংখ্যায় বিপুল। দেশের শ্রমবাজারে বেসরকারি খাতের কর্মসংস্থান প্রায় ৯৫ শতাংশ। এখানে কর্মরতদের বেতন বৈষম্য যেমন তেমনই, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ফারাকও বিশাল। উদাহরণস্বরূপ গার্মেন্ট সেক্টরের কথা বলা যায়। সেখানে সরকারিভাবে নির্ধারিত ন্যূনতম বেতন ১ হাজার ৬৬২ টাকা। তাও ঠিকমত দেয়া হয় না। এই টাকায় বর্তমান বাজারে সংসার চালানো কত কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর বিশাল কৃষি খাতে নিয়োজিতদের বেশিরভাগেরই আয়ের ঠিক-ঠিকানা নেই। অনাহার-অর্ধাহার তাদের নিত্যসঙ্গী। এসব মানুষের ভোটেই নির্বাচিত হন এমপি-মন্ত্রীরা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের সেবক বলা হয়। আর এই জনগণকেই দেশের মালিক বলা হয়েছে সংবিধানে। অথচ দেখা যাচ্ছে, মালিকের প্রতিনিধি ও সেবকদেরই দিন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। খোদ মালিক উপেক্ষিত এখনও। কথায় বলে, আপনি বাঁচলে বাপের নাম। আওয়ামী মহাজোট সরকার সে পথেই এগুতে চাইছে, এটা বুঝতে অসুবিধা নেই।
যদিও সরকারের নেতানেত্রীরা বচনে-ভাষণে জনগণের সমস্যা ও দুর্দশা লাঘবে সোচ্চার। বাস্তবে এর দেখা না পাওয়া গেলে মানুষ বেশিদিন এ অবস্থা সহ্য নাও করতে পারে। দেশের অবস্থা যে সুখকর নয়, সেটা আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে দেশের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির বিপরীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে—এমন আশঙ্কা অনেকেই প্রকাশ করেছেন। এখন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) একই কথা বলছে। বিদেশি বিনিয়োগ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৭ শতাংশ কমে গেছে বলেও তারা সম্প্রতি জানিয়েছে। আর অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বন্ধ্যত্বের কথা তো সবার জানা। অর্থনীতির এমন অবস্থা দেশজুড়ে সৃষ্টি করেছে অস্থিরতা। প্রতিদিনকার সংবাদমাধ্যমে জনজীবনের যে চিত্র জানা যাচ্ছে, সেটা অন্ধকার ভবিষ্যতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।
আওয়ামী মহাজোট সরকারের দিনবদলের আসল মাজেজা এক বছর যেতে না যেতেই স্পষ্ট ধরা পড়তে শুরু করেছে। দেশ, জাতি ও জনগণ নয়, তারা নিজেদের দিনবদল নিয়েই ব্যস্ত। মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।
এর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন আগের তুলনায় সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এই বেতন বৃদ্ধি সাধারণত বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করেই বাড়ানো হয়ে থাকে। এ থেকে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তবে বাজারে শুধু সরকারি ক্ষমতাধররাই যান না, ক্ষমতাহীনরাও যান। তারাই সংখ্যায় বিপুল। দেশের শ্রমবাজারে বেসরকারি খাতের কর্মসংস্থান প্রায় ৯৫ শতাংশ। এখানে কর্মরতদের বেতন বৈষম্য যেমন তেমনই, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ফারাকও বিশাল। উদাহরণস্বরূপ গার্মেন্ট সেক্টরের কথা বলা যায়। সেখানে সরকারিভাবে নির্ধারিত ন্যূনতম বেতন ১ হাজার ৬৬২ টাকা। তাও ঠিকমত দেয়া হয় না। এই টাকায় বর্তমান বাজারে সংসার চালানো কত কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর বিশাল কৃষি খাতে নিয়োজিতদের বেশিরভাগেরই আয়ের ঠিক-ঠিকানা নেই। অনাহার-অর্ধাহার তাদের নিত্যসঙ্গী। এসব মানুষের ভোটেই নির্বাচিত হন এমপি-মন্ত্রীরা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের সেবক বলা হয়। আর এই জনগণকেই দেশের মালিক বলা হয়েছে সংবিধানে। অথচ দেখা যাচ্ছে, মালিকের প্রতিনিধি ও সেবকদেরই দিন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। খোদ মালিক উপেক্ষিত এখনও। কথায় বলে, আপনি বাঁচলে বাপের নাম। আওয়ামী মহাজোট সরকার সে পথেই এগুতে চাইছে, এটা বুঝতে অসুবিধা নেই।
যদিও সরকারের নেতানেত্রীরা বচনে-ভাষণে জনগণের সমস্যা ও দুর্দশা লাঘবে সোচ্চার। বাস্তবে এর দেখা না পাওয়া গেলে মানুষ বেশিদিন এ অবস্থা সহ্য নাও করতে পারে। দেশের অবস্থা যে সুখকর নয়, সেটা আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে দেশের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির বিপরীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে—এমন আশঙ্কা অনেকেই প্রকাশ করেছেন। এখন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) একই কথা বলছে। বিদেশি বিনিয়োগ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৭ শতাংশ কমে গেছে বলেও তারা সম্প্রতি জানিয়েছে। আর অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বন্ধ্যত্বের কথা তো সবার জানা। অর্থনীতির এমন অবস্থা দেশজুড়ে সৃষ্টি করেছে অস্থিরতা। প্রতিদিনকার সংবাদমাধ্যমে জনজীবনের যে চিত্র জানা যাচ্ছে, সেটা অন্ধকার ভবিষ্যতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।
আওয়ামী মহাজোট সরকারের দিনবদলের আসল মাজেজা এক বছর যেতে না যেতেই স্পষ্ট ধরা পড়তে শুরু করেছে। দেশ, জাতি ও জনগণ নয়, তারা নিজেদের দিনবদল নিয়েই ব্যস্ত। মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।
No comments