শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া-শিশুবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থা জরুরি
শতভাগ শিক্ষিত মানুষের দেশ গড়া এখনো কল্পনার বিষয়। সরকারের ইচ্ছা ও গৃহীত পদক্ষেপে বৈপরীত্য কমে এলেও শিক্ষিতের হার বাড়ানোর কার্যক্রম সফল- এমনটি বলার সুযোগ নেই। দারিদ্র্য, পুষ্টির অভাব, অভিভাবকের অসচেতনতা, পরিবেশের মতো আরো কিছু কারণ শিক্ষা সম্প্রসারণে বড় বাধা হিসেবে কাজ করে।
প্রতিটি সরকারই কম-বেশি এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য কাজ করে। তবে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ সম্ভব হচ্ছে না মূলত সমস্যা প্রকট হওয়ার কারণে। এর প্রতিফলন দেখা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই, অস্বাভাবিক হারে শিক্ষার্থীর স্কুল ত্যাগের মাধ্যমে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে এমনই একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। চলতি বছর যারা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছে, তাদের প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির পরিসংখ্যানকে ভিত্তি ধরে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে দেশে ১১ লাখ শিশু ঝরে পড়েছে। এর কারণ হিসেবে সরকারি কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ধারার শিক্ষায়তনে চলে যাওয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর লেখাপড়া থেকে সবাই সরে যায় না। কিন্তু বাস্তবতা তেমন নয়। ভিন্ন ধারার শিক্ষায়তন বলতে যদি কিন্ডারগার্টেনকে বোঝানো হয়ে থাকে, তাহলে তাদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হতে পারে না, তারাই সাধারণত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। সুতরাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে যারা ঝরে পড়ে, তাদের প্রায় সবাই শিক্ষা গ্রহণ থেকেও ঝরে পড়ে। ক্লাসে ফেল করে যদি আবার ওই ক্লাসে থেকে যায়, তাহলেও পাঁচ বছর শেষে ঝরে পড়ার সংখ্যা ১১ লাখে দাঁড়াত না। হালে মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থা অনেকটা আধুনিক হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই মাদ্রাসায় চলে যায়। যে কারণে মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় ত্যাগ করে- এমনটা সম্পূর্ণ মেনে নেওয়া যায় না।
দেশে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হলে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনের বড় প্রকল্প রয়েছে সরকারের। কিন্তু সেই কার্যক্রমে মোটামুটি সাফল্য এলেও অভিভাবকের সচেতনতা কম থাকার কারণে শিক্ষা সম্প্রসারণে এই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আবার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের বিশেষ কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। আগে অল্প কিছু বিজ্ঞাপনচিত্র দেখা গেলেও হালে তা চোখে পড়ছে না। শিক্ষাপদ্ধতির গুণগত পরিবর্তন আনাও জরুরি। শিক্ষার্থী শিশুর মানসিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে না পারার জন্য অনেকাংশে দায়ী। সে জন্য পাঠকার্যক্রমকে আকর্ষণীয় করার কোনো বিকল্প নেই। দুর্বোধ্য বই পরিহার করে সেখানে শিশুমানসের সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে এমন বই পাঠ্য করা উচিত। খেলা শিশুর মানসিক বিকাশে অন্যতম ভূমিকা পালন করে অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশেরই কোনো খেলার মাঠ নেই। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বললেই চলে। দিনব্যাপী ক্লাস করলেও দুপুরে তাদের খাবারের ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীর পাঠস্পৃহা না জন্মানোই স্বাভাবিক।
দেশে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হলে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনের বড় প্রকল্প রয়েছে সরকারের। কিন্তু সেই কার্যক্রমে মোটামুটি সাফল্য এলেও অভিভাবকের সচেতনতা কম থাকার কারণে শিক্ষা সম্প্রসারণে এই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আবার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের বিশেষ কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। আগে অল্প কিছু বিজ্ঞাপনচিত্র দেখা গেলেও হালে তা চোখে পড়ছে না। শিক্ষাপদ্ধতির গুণগত পরিবর্তন আনাও জরুরি। শিক্ষার্থী শিশুর মানসিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে না পারার জন্য অনেকাংশে দায়ী। সে জন্য পাঠকার্যক্রমকে আকর্ষণীয় করার কোনো বিকল্প নেই। দুর্বোধ্য বই পরিহার করে সেখানে শিশুমানসের সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে এমন বই পাঠ্য করা উচিত। খেলা শিশুর মানসিক বিকাশে অন্যতম ভূমিকা পালন করে অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশেরই কোনো খেলার মাঠ নেই। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বললেই চলে। দিনব্যাপী ক্লাস করলেও দুপুরে তাদের খাবারের ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীর পাঠস্পৃহা না জন্মানোই স্বাভাবিক।
No comments