উস্কানির হোতা বিএসএফঃ আতঙ্ক বাড়ছে জৈন্তাপুর সীমান্তে
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) উস্কানিতে আবার সে দেশের লোকজন অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে একটি বিল ও একটি হাওর থেকে জোর করে মাছ ধরে নিচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েক দফা বিএসএফ-বিডিআর গোলাগুলি হয়েছিল। এ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার কথা থাকলেও বিএসএফ কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি।
৮ মার্চ কিছু ভারতীয় দুর্বৃত্ত বিএসএফের মদদে সীমান্তের ২০০ গজ ভেতরে ঢুকে আলোচ্য বিল ও হাওরে মাছ ধরা শুরু করে। পূর্বাপরের মতো বিডিআরের কড়া প্রতিবাদে তারা ফিরে গেলেও বিএসএফ কোনো আলোচনায় বসতে উত্সাহ দেখায়নি। বরং নতুন করে সীমান্তের বিভিন্ন ক্যাম্পে সেনা ও ভারি অস্ত্র মজুত করছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা বিল-হাওরে মাছ ধরা তো দূরের কথা, মাঠে ফসল পরিচর্যা করারও ভরসা পাচ্ছেন না। স্বভাবতই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকার সর্বত্র।
জৈন্তাপুর উপজেলার মুক্তাপুর সীমান্তে বাংলাদেশী কৃষকরা ডিবি হাওর ও কেন্দ্রীয় বিলের জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েও মাছ ধরতে পারছেন না বিএসএফের বাধার মুখে। ফেব্রুয়ারি মাসে বিএসএফের সহযোগিতায় দুর্বৃত্তরা পাম্প লাগিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বিডিআর ও স্থানীয় জনগণ বাধা দিলে বিএসএফ গুলি চালায়। পরপর কয়েক দফা গোলাগুলির পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মাছ ধরা থেকে উভয় পক্ষকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় এবং দু’পক্ষের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। তার পরও শর্তভঙ্গ করে বিএসএফ পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সেই ঘটনার জের ধরে আবার জোর করে মাছ ধরে নেয়ার জন্য উক্ত হাওর ও বিলে প্রবেশ করে ভারতীয় জেলেরা। শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে গেলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ ঘটনার অজুহাতেই সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএসএফ বিভিন্ন ক্যাম্পে সেনা সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং মজুত করছে ভারি অস্ত্রশস্ত্র। এ ছাড়া সীমান্তের কাছাকাছি ঘন ঘন বাঙ্কারও খনন করছে বিএসএফের সদস্যরা। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন মৌসুমি ফসল তুলতে পারছেন না, পরিচর্যা করতে পারছেন না বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত। এ অবস্থায় এলাকার সাধারণ মানুষ এখন নয়াদিল্লিতে বিডিআর-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে যে বৈঠক শুরু হয়েছে তার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে দেশবাসী যথেষ্ট তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে বিএসএফের জবরদখলের উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। বিএসএফের সহযোগিতায় এর আগেও ভারতীয় নাগরিকরা অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। বহুবার সীমান্ত ইস্যুতে ফ্ল্যাগ মিটিং ছাড়াও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বিডিআর-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক। গত ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্ত বিরোধ মেটাতে বিস্তর আশ্বাস দিয়েছিলেন। সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেই আশ্বাস মিথ্যাচারে পর্যবসিত হয়েছে। গোলাগুলি, জবরদখলের উদ্যোগসহ হত্যাকাণ্ডও হয়েছে। এ অবস্থায় নয়াদিল্লির বৈঠক কী ফল বয়ে আনবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং তা থেকে পরিষ্কার হবে যে, বাংলাদেশের ভূমিতে ভারতীয় সামরিক-বেসামরিক নাগরিকদের জবরদখলের উদ্যোগ চলবে কী চলবে না। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা-কল্পনা চলছে। এদিকে তেঁতুলিয়ায় মহানন্দা নদীর সীমান্তে বাংলাদেশের সীমানা পিলারের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানেও সীমানা নির্ধারণের প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক দেখা দেয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
জানা গেছে, জৈন্তাপুর বিডিআর ক্যাম্প থেকে সীমান্ত এলাকার দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এখান থেকে সীমান্তের দেখভাল করা বিডিআরের পক্ষে কষ্টসাধ্য বৈকি। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিডিআর জওয়ানরা অনেক সময় অনাহারে-অর্ধাহারে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কোনো কোনো বাঙ্কারে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় কাদা-পানিতে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাদের। বস্তুত বিডিআর বিএসএফের অনৈতিক আচরণের মুখে যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। বিডিআর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিএসএফ যতই উস্কানিমূলক আচরণ করুক না কেন তা তারা ধৈর্যের সঙ্গেই মোকাবিলা করবেন। তারপরেও বিএসএফ যদি সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে, জবরদখলের পাঁয়তারার পাশাপাশি বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করে তাহলে স্বভাবতই সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা বেড়ে যাবে। জৈন্তাপুর সীমান্তে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভারি গোলাবারুদের মজুত তারই পূর্বাভাস। বিরাজমান এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সরকার পর্যায়ে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে কার্যকর আলোচনা জরুরি। এ ব্যাপারে ভারতকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত। কারণ সীমান্তের প্রতিটি গোলযোগে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীই প্রথম পক্ষ। দেশবাসীর প্রত্যাশা, বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত দু’ দেশের জনগণের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ সহ-অবস্থানের স্বার্থে বিএসএফের অবৈধ তত্পরতা বন্ধ করে সীমান্তে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের পুনরাবৃত্তি করবে না।
জৈন্তাপুর উপজেলার মুক্তাপুর সীমান্তে বাংলাদেশী কৃষকরা ডিবি হাওর ও কেন্দ্রীয় বিলের জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েও মাছ ধরতে পারছেন না বিএসএফের বাধার মুখে। ফেব্রুয়ারি মাসে বিএসএফের সহযোগিতায় দুর্বৃত্তরা পাম্প লাগিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বিডিআর ও স্থানীয় জনগণ বাধা দিলে বিএসএফ গুলি চালায়। পরপর কয়েক দফা গোলাগুলির পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মাছ ধরা থেকে উভয় পক্ষকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় এবং দু’পক্ষের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। তার পরও শর্তভঙ্গ করে বিএসএফ পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সেই ঘটনার জের ধরে আবার জোর করে মাছ ধরে নেয়ার জন্য উক্ত হাওর ও বিলে প্রবেশ করে ভারতীয় জেলেরা। শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে গেলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ ঘটনার অজুহাতেই সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএসএফ বিভিন্ন ক্যাম্পে সেনা সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং মজুত করছে ভারি অস্ত্রশস্ত্র। এ ছাড়া সীমান্তের কাছাকাছি ঘন ঘন বাঙ্কারও খনন করছে বিএসএফের সদস্যরা। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন মৌসুমি ফসল তুলতে পারছেন না, পরিচর্যা করতে পারছেন না বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত। এ অবস্থায় এলাকার সাধারণ মানুষ এখন নয়াদিল্লিতে বিডিআর-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে যে বৈঠক শুরু হয়েছে তার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে দেশবাসী যথেষ্ট তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে বিএসএফের জবরদখলের উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। বিএসএফের সহযোগিতায় এর আগেও ভারতীয় নাগরিকরা অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে। বহুবার সীমান্ত ইস্যুতে ফ্ল্যাগ মিটিং ছাড়াও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বিডিআর-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক। গত ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্ত বিরোধ মেটাতে বিস্তর আশ্বাস দিয়েছিলেন। সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেই আশ্বাস মিথ্যাচারে পর্যবসিত হয়েছে। গোলাগুলি, জবরদখলের উদ্যোগসহ হত্যাকাণ্ডও হয়েছে। এ অবস্থায় নয়াদিল্লির বৈঠক কী ফল বয়ে আনবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং তা থেকে পরিষ্কার হবে যে, বাংলাদেশের ভূমিতে ভারতীয় সামরিক-বেসামরিক নাগরিকদের জবরদখলের উদ্যোগ চলবে কী চলবে না। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা-কল্পনা চলছে। এদিকে তেঁতুলিয়ায় মহানন্দা নদীর সীমান্তে বাংলাদেশের সীমানা পিলারের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানেও সীমানা নির্ধারণের প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক দেখা দেয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
জানা গেছে, জৈন্তাপুর বিডিআর ক্যাম্প থেকে সীমান্ত এলাকার দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এখান থেকে সীমান্তের দেখভাল করা বিডিআরের পক্ষে কষ্টসাধ্য বৈকি। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিডিআর জওয়ানরা অনেক সময় অনাহারে-অর্ধাহারে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কোনো কোনো বাঙ্কারে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় কাদা-পানিতে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাদের। বস্তুত বিডিআর বিএসএফের অনৈতিক আচরণের মুখে যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। বিডিআর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিএসএফ যতই উস্কানিমূলক আচরণ করুক না কেন তা তারা ধৈর্যের সঙ্গেই মোকাবিলা করবেন। তারপরেও বিএসএফ যদি সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে, জবরদখলের পাঁয়তারার পাশাপাশি বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করে তাহলে স্বভাবতই সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা বেড়ে যাবে। জৈন্তাপুর সীমান্তে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভারি গোলাবারুদের মজুত তারই পূর্বাভাস। বিরাজমান এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সরকার পর্যায়ে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে কার্যকর আলোচনা জরুরি। এ ব্যাপারে ভারতকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত। কারণ সীমান্তের প্রতিটি গোলযোগে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীই প্রথম পক্ষ। দেশবাসীর প্রত্যাশা, বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত দু’ দেশের জনগণের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ সহ-অবস্থানের স্বার্থে বিএসএফের অবৈধ তত্পরতা বন্ধ করে সীমান্তে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের পুনরাবৃত্তি করবে না।
No comments