পুলিশের সামনে সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর বাড়ি দখল করে নিলেন আ’লীগ নেতা -ভয়ে তটস্থ সাংবাদিকরাও
পটুয়াখালীর দশমিনা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সামনে ফিল্মি স্টাইলে সেনাবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্ত্রীর প্রায় অর্ধকোটি টাকার বাড়িসহ জায়গা দখল করে নিয়েছে সরকার দলীয় এক নেতা। থানা পুলিশের চোখের সামনে এ দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, দশমিনা শহরের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সামনে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ ইব্রাহিম সিকদারের স্ত্রী নাজনিন নাহার স্থানীয় আলীম তালুকদারের স্ত্রী নাজনে আরা আলীমের কাছ থেকে ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ সালে ৮৪ নং জেএল এসএ ৪৩৭ দাগ নং ২৪০১ আর এস আই ১৭৩নং খতিয়ানের সোয়া ৮ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি মূলে ক্রয় করে সেখানে আধা পাকা একটি দোতলা ঘর করেন। বর্তমানে জায়গাসহ ওই ঘরের মূল্য এখন প্রায় অর্ধকোটি টাকা। রবিবার সকালে দশমিনা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউপির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৩০/৪০ জন ক্যাডার নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে ওই বাড়িটি দখল করেন। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী বাধা দিলে তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দরজায় তালা মেরে দেয়া হয় এবং ওইদিনই সন্ধ্যার দিকে লিটন পুনরায় শতাধিক শ্রমিক এনে বাড়িটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করেন। সারা রাত চলে এ ভাঙ্গার কাজ। অবসর প্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী নাজনিন নাহার বলেন, তিনি বিষয়টি জানিয়ে ওইদিনই দশমিনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং পুলিশের উপস্থিতিতে লিটনের ভাড়াটে লোকজন তার চোখের সামনে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ সময় লিটন বাহিনীর লোকজন তার ঘর থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, টিভি, ফ্রিজ, স্টিলের আলমারি, সোকেজ, খাট, ড্রাইসিন টেবিলসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায় এবং সোমবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা লিটন দখলকৃত জায়গায় পাকা ভবন ও দেয়াল নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। লিটনের পেশিশক্তির ভয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে যেতে সাহস পাননি। আওয়ামী লীগ নেতা লিটন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারের স্ত্রী নাজনিন নাহারের কাছ থেকে ওই জমি জোর করে রেজিস্ট্রি করে নেয়ার হুমকি দিলে তিনি সোমবার সকালে দশমিনা থেকে পালিয়ে বাউফলে তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইকবাল মাহমুদ লিটনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
No comments