তিন সপ্তাহ সময় পেলেন রাজা পারভেজ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির দুর্নীতিসংক্রান্ত একটি মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে সুইজারল্যান্ডের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে আরও তিন সপ্তাহ সময় পেলেন। গতকাল সোমবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) এ সময় বেঁধে দেন। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।


প্রধানমন্ত্রী রাজা আশরাফকে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে আদালতে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই গতকাল আদালতে হাজির হন। রাজা আশরাফ বিচারপতি আসিফ সাইদ খোসার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চের কাছে ছয় সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করেন। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সময় বাড়ানোর দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বার বার আবেদন করায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিচারপতি খোসা বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো ধরনের টালবাহানা না করে আদালতের নির্দেশ পালনে বাধ্য। তিনি নিজে ওই চিঠি না লিখে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেন। এটি জটিল কোনো বিষয় নয়। কিন্তু অকারণে এটিকে জটিল করে তোলা হচ্ছে। চিঠি লিখতে আরও বিলম্ব হলে বিষয়টি আরও জটিল হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আদালতকে বলেন, তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তাঁর আন্তরিক চেষ্টা রয়েছে। তবে সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে তাঁর কিছুটা সময় প্রয়োজন। কারণ, এ ক্ষেত্রে আইনি ও সাংবিধানিক বিষয় যুক্ত রয়েছে। আদালতের যথাযথ সম্মান অবশ্যই অক্ষুণ্ন রাখা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই আশ্বাসের জন্য আদালত তাঁকে ধন্যবাদ দেন। আদালতকে উদ্দেশ্য করে সমালোচনামূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে সরকার ও গভর্নরদের বিরত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন আদালত।
প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাটি নিষ্পত্তির ব্যাপারে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছিলেন। এ ঘটনায় আদালত তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন। গিলানির পদত্যাগের পর রাজা আশরাফ নতুন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। নতুন প্রধানমন্ত্রীও ওই মামলার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের দায়মুক্তির অজুহাত দেখানো হচ্ছে। মামলাটি নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকারি আইনজীবীরা গত মাসে বলেন, সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’। কারণ, এতে সংবিধানের লঙ্ঘন হয়। সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট যেকোনো আদালতে বিচারের ঊর্ধ্বে।
অভিযোগ রয়েছে, সুইস ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন জারদারি। এই অভিযোগে সুইজারল্যান্ডে তাঁর বিরুদ্ধে ওই মামলা হয়। এএফপি, রয়টার্স, ডন ও দ্য হিন্দু।

No comments

Powered by Blogger.