আর বিকিনি নয়ঃ দীপিকা
বিকিনি। দু-টুকরো কাপড় মাত্র। কিন্তু শুনলেই কান-মাথা-শরীর কেমন যেন ঝিমঝিম করে ওঠে তাই না? বিশেষত হৃদয়হরিণীকে বিকিনিতে কামনা করে, কত পুরুষ যে বুকে হাত বুলিয়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু এরই মাঝে বিকিনি নিয়ে হাতবোমা ফেললেন দীপিকা পাডুকোন।
ঢাকঢোল পিটিয়ে সাফসাফ বলছেন তিনি, আর বিকিনি নয়। সে কী কথা! ডিপস যদি আর বিকিনি নাই পরেন, কী হবে তাহলে তার ভক্তদের? আর কীই বা হবে পুরনো প্রেমিকদের? মন আর শরীর খারাপের মাঝে ওই ডিপ বিকিনির মধ্যে ডিপসের ছবিই তো তাদের সান্ত্বনা! তা, কেন এমনতরো বলছেন নায়িকা?
নিজে বিকিনি পরে, এদিক-ওদিক হিল্লোল তুলে ডিপস বলেন কিনা, ভারতীয় মেয়েদের শরীর নাকি বিকিনির উপযোগী একেবারেই নয়? এ শুনে বেশ খেপেছেন মুম্বাইয়ের কয়েকজন বিকিনি গার্ল থেকে আমজনতাও। নাই বা হলো কণামাত্র মেদহীন দুধসাদা শরীর, তাই বলে কি বিকিনি পরা যাবে না? ভারতীয় পুরুষ বলে কি সাধের প্রতিমাকে অমন সাজে দেখার সাধটুকু থাকতে নেই?
দীপিকা অবশ্য এ বিতর্কে যাচ্ছেন না মোটেই, শুধু জানাচ্ছেন, তার 'ককটেল'-এ ছিপছিপে বিকিনি বেবস হয়ে তিনি সামনে আসলেও, আদতে মোটেই ভালো লাগেনি তার। কেবলই মনে হয়েছে এ ভারতীয় নারীত্ব আর শরীর নিয়ে বিকিনি-টিকিনি ক্যারি করতে পারছেন না তিনি। বাকি সুন্দরীরা, 'হুঁহ! ঢং' বলে মুখ বেঁকালেও পুরুষদের হতাশ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। মেয়ে বলে দিয়েছেন, বিকিনি পরে আর কোনো ছবি নাকি তিনি করবেনই না। যা গায়ে দেওয়া যায় না, সে সব নিয়ে প্রশংসাও গায়ে মাখতে চান না তিনি।
কিন্তু বিকিনি খারাপ কী? এখন তো বিগ বাজেট বলিউড ছবি মানেই নায়িকার অঙ্গে বিকিনি পাকা! 'ধুম ২'-এ ঐশ্বর্যার কাঠি শরীরে বিকিনির বাহার কেমন জমল, তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মেলা কথা উঠেছিল। বিপস-এর বিকিনি বিলাস নিয়ে পঞ্চমুখ ছিলেন সব বলিউডিরাই। এখন আবার সানির বিকিনি-যাপন অন্য বাতাস বইয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সব বিকিনি বেবস একটা বিষয়ে একমত, শরীরে চর্বি-মাংস একেবারে বাদ দিয়ে চলতে হবে। ছবি মানেই তো নায়িকার বিকিনি-থং ছাড়া প্রোডিউসাররা ভাবতে পারছেন না। যেমন, দীপিকাকে দেখা যাবে 'ককটেল'-এ। এখন বিকিনি যদি নাই পরেন, প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাবেন না তিনি?
ডিপসের অবশ্য বিকিনি বিমুখতার কারণটা একটু আলাদা রকমের! বিকিনিতে নিজেকে ম্যানেজ করতে গিয়ে মেয়েকে কম খেসারত দিতে হয়নি। এমনিতেই ছবির জগতে নাম লেখালে খাওয়া-দাওয়া শিকেয় তুলে বিস্বাদ মুখে পাঁচন টাইপস জিনিস গিলতে হয়, তাতে আবার ওয়র্কআউট থাকে। ঝুলিতে বিকিনি আবদার থাকলে তো এ গোদের ওপর বিষফোঁড়া।
দীপিকা জানাচ্ছেন, “আসলে বিকিনি এমন একটা পোশাক যে, শরীরে সামান্য মেদও ভীষণ খারাপ লাগে। আমি ককটলের জন্য আমার ওয়র্কআউট বাড়িয়ে দিয়েছিলাম অনেক। মাঝে মাঝে ডিনার সুইচ অফ করতাম। অন-স্ক্রিন নিজেকে একদম ফিট লাগাটা যে খুব জরুরি। আমি কোনও পার্টিতে গেলেও কিছু খেতাম না। তবে আমার যেটা মনে হয়েছে, ভারতীয়দের জন্য এই পোশাক একেবারেই নয়। আমাদের ভারতীয় মেয়েদের শরীর বিদেশিদের তুলনায় সামান্য হলেও মেদবহুল। সেটা বিকিনিতে বেশ খারাপ লাগে। অত কষ্ট করে বিকিনি পরারই বা কী দরকার? সেক্সি ভারতীয় পোশাক তো কম কিছু নেই। আমি ঠিক করেছি, এরপরে বিকিনি পরে আর কোনো শ্যুট করব না।”
নায়িকার বিকিনিতে ভারতীয়ত্বের খোঁটা শুনে বেশ খচেছেন আর এক বিকিনি গার্ল, বিপস থুড়ি বিপাশা বসু। বলছেন, “দেশি-বিদেশি শরীর বলে কিছু হয় না। পুরোটাই ক্যারি করার ওপর নির্ভর করে। বিদেশে অনেকেই পৃথুলা শরীর নিয়েও বিকিনি পরেন। আমার মতে পুরোটাই নির্ভর করে অ্যাটিটিউডের ওপর।”
আবার, ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রী নিকিতা শর্মার মতে, “পুরাণের যুগে বা কালিদাসের কাব্যে ভারতীয় নারী কখনওই কাঠি শরীরের নয়। তাতেও তারা কাঁচুলি পরতেন। তবে, এখনকার মেয়েরা কেন নয়? আমি যদি আমার পোশাকের ওপর কনফিডেন্ট থাকি, তাহলে শরীর মেদ এসবে কিছু যায় আসে না।”
সে যাই হোক। দীপিকার এ মন্তব্যে মনে ব্যথা পেয়েছেন পুরুষকুলই। অমন মাখন শরীরে দু-টুকরো কাপড়ে ঢাকা অঙ্গের আর যদি নাই দেখা মেলে? সে না মিলুক, কিন্তু এ বাক্যে সাড়া দিয়ে আর কোনো মেয়ে যদি বিকিনিকে আড়ি করেন? সে নিয়ে কোনো কথা দীপিকা বলতে চান না। মেয়ের সাফ জবাব, যে যা ইচ্ছা করুক, তার কী? তিনি শুধু নিজের মত প্রকাশ করেছেন। সূত্র: ওয়েবসাইট।
No comments