ইত্যাদি-দুরন্ত প্রতিভা! by হারুনুর রশিদ
অনন্ত-দুরন্ত দুই যমজ বোন। ওদের ভালো নাম ফারহান সাঈদ ও রায়ান সাঈদ। দুজনেই ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসে। অনন্তর প্রিয় রং লাল আর দুরন্তর প্রিয় হলুদ ও সবুজ। বাকি সবকিছুতেই ওদের ভারি মিল! মাঝেমধ্যে অবশ্য দুজনের খুনসুটি লাগে, আবার নিমেষেই ভাবও হয়ে যায়।
এ ছাড়া ওদের কম্পিউটারে গেম খেলতে ভালো লাগে, সিনেমা দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খেতে আর বেড়াতে। দুজনের অনেক ভালো না লাগাও কিন্তু আছে। কেউ হয়তো জোর করে ওদের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করল বা কথা বলতে চাইল—এটা ওদের একেবারেই ভালো লাগে না। কেউ আদর করলে বা হুট করে ছুঁয়ে দিলে খুব রেগে যায়। সবার সামনেই জোরে চেঁচিয়ে ওঠে। ওদের এই ভালো না লাগা আর রেগে যাওয়ার উপসর্গগুলো সাধারণত অটিজমের আওতায় পড়ে। সবে ১৪-এ পা দেওয়া অনন্ত-দুরন্ত দুই অটিস্টিক শিশু।
অনন্ত-দুরন্তর মতো আরও প্রায় পঞ্চাশ শিশু-কিশোরের আঁকা ছবি নিয়ে রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে ২২ থেকে ২৮ জুন হয়ে গেল ওদের ছবি নিয়ে একটি চিত্রপ্রদর্শনী । নানা রঙে, নানা ঢঙে আঁকা মনোরম সব ছবি। কেউ এঁকেছে নদী-নৌকো, দুই ধারে কাশবন। কেউবা ফুলের ছবি, পাখির ছবি। আয়োজক হ্যান্স (HANS)। হ্যালো অ্যাসোসিয়েশন ফর নিওফাইট স্টুডেন্টস। কথা হলো হ্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কায়েস আহমেদের সঙ্গে। বললেন, ‘আমাদের এক বন্ধুর ভাই ছিল অটিস্টিক। সমাজে তার অবস্থানটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। দেখতাম সবাই, এমনকি নিকটাত্মীয় পর্যন্ত তাকে প্রতিবন্ধী বা পাগল হিসেবে বিবেচনা করত। সবার ধারণা, এরা আসলে কিছু পারে না। কিন্তু ওরাও যে নানামুখী সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে পারে, মূলত এটা মানুষের সামনে নিয়ে আসা এবং পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমরা এ সংগঠনটি করার কথা ভাবি।’
কথা হলো অনন্ত-দুরন্তর সঙ্গে। বলা ভালো, অনন্তর সঙ্গে। দুরন্ত তো কথাই বলবে না, অনন্তকে তবু বলে-কয়ে রাজি করানো গেল! কিন্তু সে শুধু কেমন আছো জিজ্ঞেস করেই আর কথা না বলার গোঁ ধরল। শেষে তাদের প্রিয় মামণি নাসরিন আহমেদকেই বলতে হলো বাকি কথা। বললেন, ‘দেখলেন তো, এ রকমই করে ওরা। তবে একবার যদি বুঝতে পারে যে কেউ ওদের সঙ্গে খুব আন্তরিকভাবে মেশার চেষ্টা করছে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে আপন করে নেয়। সাড়ে পাঁচ বছর থেকেই ওদের এসব প্রবণতা স্পষ্ট হতে থাকে। একদম কথা বলত না। ইশারায় সবকিছু চাইত। প্রথমদিকে আমি ইশারাগুলো ধরতে পারতাম না। ওরা তো ভয়ংকর রেগে যেত। আমারও খুব কষ্ট হতো। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ওদের আচার-আচরণ নিয়ে নানা খারাপ কথা বলত। আমার খুব খারাপ লাগত, কিন্তু কিছুই কানে নিতাম না। সব সময় ওদের পাশে থেকেছি। ওদেরকে ওদের মতোই বড় হতে দিয়েছি।’
অনন্ত-দুরন্ত পড়াশোনার বেলায়ও খুব লক্ষ্মী। ওরা পড়ছে ঢাকার স্কুল ফর গিফটেড চিলড্রেন স্কুলে।
তেরো বছর বয়সী আকিবের আঁকা মাছ আর জলপরির ছবি দেখতে দেখতেই কথা হলো মা শারমিন ইসলামের সঙ্গে। এবার আর আকিবকে পাওয়া গেল না। সে ঢাকার অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। তার কাছ থেকেই জানলাম, আকিব বাউলের ছবি আঁকতে খুব পছন্দ করে, এ জন্য ওর প্রিয় রংও হলুদ। উপদেষ্টা কায়েস বলছিলেন , ‘ঢাকায় অটিস্টিক স্কুল আছে প্রায় ১০টি। আমরা সব স্কুল ঘুরে ঘুরে প্রায় ৭০টির মতো ছবি সংগ্রহ করেছি। সব ছবিই বিক্রয়যোগ্য। ন্যূনতম বিনিময় মূল্য তিন হাজার টাকা। প্রদর্শনী ছাড়াও যে কেউ চাইলে ছবি কিনতে পারবে।’
অনন্ত-দুরন্তর মতো আরও প্রায় পঞ্চাশ শিশু-কিশোরের আঁকা ছবি নিয়ে রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে ২২ থেকে ২৮ জুন হয়ে গেল ওদের ছবি নিয়ে একটি চিত্রপ্রদর্শনী । নানা রঙে, নানা ঢঙে আঁকা মনোরম সব ছবি। কেউ এঁকেছে নদী-নৌকো, দুই ধারে কাশবন। কেউবা ফুলের ছবি, পাখির ছবি। আয়োজক হ্যান্স (HANS)। হ্যালো অ্যাসোসিয়েশন ফর নিওফাইট স্টুডেন্টস। কথা হলো হ্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কায়েস আহমেদের সঙ্গে। বললেন, ‘আমাদের এক বন্ধুর ভাই ছিল অটিস্টিক। সমাজে তার অবস্থানটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। দেখতাম সবাই, এমনকি নিকটাত্মীয় পর্যন্ত তাকে প্রতিবন্ধী বা পাগল হিসেবে বিবেচনা করত। সবার ধারণা, এরা আসলে কিছু পারে না। কিন্তু ওরাও যে নানামুখী সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে পারে, মূলত এটা মানুষের সামনে নিয়ে আসা এবং পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমরা এ সংগঠনটি করার কথা ভাবি।’
কথা হলো অনন্ত-দুরন্তর সঙ্গে। বলা ভালো, অনন্তর সঙ্গে। দুরন্ত তো কথাই বলবে না, অনন্তকে তবু বলে-কয়ে রাজি করানো গেল! কিন্তু সে শুধু কেমন আছো জিজ্ঞেস করেই আর কথা না বলার গোঁ ধরল। শেষে তাদের প্রিয় মামণি নাসরিন আহমেদকেই বলতে হলো বাকি কথা। বললেন, ‘দেখলেন তো, এ রকমই করে ওরা। তবে একবার যদি বুঝতে পারে যে কেউ ওদের সঙ্গে খুব আন্তরিকভাবে মেশার চেষ্টা করছে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে আপন করে নেয়। সাড়ে পাঁচ বছর থেকেই ওদের এসব প্রবণতা স্পষ্ট হতে থাকে। একদম কথা বলত না। ইশারায় সবকিছু চাইত। প্রথমদিকে আমি ইশারাগুলো ধরতে পারতাম না। ওরা তো ভয়ংকর রেগে যেত। আমারও খুব কষ্ট হতো। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ওদের আচার-আচরণ নিয়ে নানা খারাপ কথা বলত। আমার খুব খারাপ লাগত, কিন্তু কিছুই কানে নিতাম না। সব সময় ওদের পাশে থেকেছি। ওদেরকে ওদের মতোই বড় হতে দিয়েছি।’
অনন্ত-দুরন্ত পড়াশোনার বেলায়ও খুব লক্ষ্মী। ওরা পড়ছে ঢাকার স্কুল ফর গিফটেড চিলড্রেন স্কুলে।
তেরো বছর বয়সী আকিবের আঁকা মাছ আর জলপরির ছবি দেখতে দেখতেই কথা হলো মা শারমিন ইসলামের সঙ্গে। এবার আর আকিবকে পাওয়া গেল না। সে ঢাকার অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। তার কাছ থেকেই জানলাম, আকিব বাউলের ছবি আঁকতে খুব পছন্দ করে, এ জন্য ওর প্রিয় রংও হলুদ। উপদেষ্টা কায়েস বলছিলেন , ‘ঢাকায় অটিস্টিক স্কুল আছে প্রায় ১০টি। আমরা সব স্কুল ঘুরে ঘুরে প্রায় ৭০টির মতো ছবি সংগ্রহ করেছি। সব ছবিই বিক্রয়যোগ্য। ন্যূনতম বিনিময় মূল্য তিন হাজার টাকা। প্রদর্শনী ছাড়াও যে কেউ চাইলে ছবি কিনতে পারবে।’
No comments