বর্ষবরণ-রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বর্ণিল প্রস্তুতি by মাসুম আলী
চৈত্রের শেষভাগে এসে বদলেছে আবহাওয়ার মেজাজ। মেঘলা আকাশ। হালকা বৃষ্টিও হচ্ছে রাজধানীতে। তবে তাতে নববর্ষ বরণ উৎসবের প্রস্তুতি থমকে যায়নি। চারুকলা অনুষদে উৎসবমুখর পরিবেশ। তুমুল কর্মব্যস্ততা। জয়নুল গ্যালারির সামনে থরে থরে সাজানো চিত্রিত সরা। দেয়ালে শোভা পাচ্ছে জলরঙের চিত্রকর্ম।
প্রাঙ্গণে নবীন শিক্ষার্থীরা কাজে মেতে আছেন। কেউ বাঁশ-কাঠ কাটাকুটি করছেন, কেউ কাগজ কাটছেন বিভিন্ন আকৃতির। হাতে সময় আর বেশি নেই। নববর্ষ কড়া নাড়ছে দ্বারে। বাঙালির প্রাণের এই আয়োজনকে বর্ণাঢ্য করে তুলতে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বরাবরের মতোই নিয়েছেন ব্যাপক প্রস্তুতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মূল দরজার ভেতর দিয়ে ঢুকেই মাটির সরা, জলরঙের চিত্রকর্ম ও মুখোশের যে প্রদর্শনী দেখা গেল, সেটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্যাপনের তহবিল গঠনের জন্য। প্রস্তুতির এই মহাযজ্ঞের তদারক করছেন চারুকলার শিক্ষক ও শিল্পী আবুল বারক আলভী, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য্যসহ অনেকে।
শিল্পী নিসার হোসেন বললেন, ‘গত বছর আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল ভাবনা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। এবারের ভাবনা বাংলার সমুদ্রসীমা বিজয়কে নিয়ে। বাংলার রূপকথায় সমুদ্র বিজয় বলতে সাতসমুদ্দুর তেরো নদী পেরিয়ে যাওয়াকে বোঝানো হয়েছে। আমরা তাই মিয়ানমারের বিপক্ষে যে মামলায় জিতে সমুদ্রসীমা জয় করেছি, সেই বিজয় বোঝাতে ময়ূরপঙ্খী নাওয়ের আদলে বড় সাম্পান তৈরি করা হবে।’ এ ছাড়া থাকবে ‘হাতির পিঠে লাঠি হাতে মাহুত’, থাকবে লোকজ পুতুল, বাঘ, ঘোড়া, বাংলার ক্রিকেট-বীরদের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি প্রভৃতি। আর চিরায়ত বাংলার স্মারক তো থাকবেই।
শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘প্রতিবছরই চারুকলা অনুষদ এই উৎসবটি করে থাকে কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তা ছাড়াই। এবারও তা-ই হচ্ছে। ছবি, সরা ও মুখোশ বিক্রি করে খরচ উঠছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নিজেরাও কিছু কিছু অর্থ দিয়ে তহবিল গঠন করছে। শিক্ষকেরাও ছবি দিয়ে সহায়তা করছেন।’
এরই মধ্যে শিল্পী ও শিক্ষক সমরজিৎ রায়চৌধুরী, রণজিৎ দাস, শেখ মনিরুজ্জামান, সুকুমার পাল, শহীদ কাজী, কামারুজ্জামান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ শিক্ষক ছবি জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া মতলুব আলী, বীরেন সোম, নিসার হোসেন সরা দিয়েছেন বিক্রির জন্য। শিক্ষকদের চিত্রকর্ম সর্বনিম্ন আড়াই হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি এক হাজার ও ৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লোকজ নকশা আঁকা সরার দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং মুখোশ ৬০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
চারুকলা অনুষদের অনুষ্ঠান হবে তিন দিন। বকুলতলায় বছরের শেষ দিন হবে (১৩ এপ্রিল) চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান। এতে থাকবে লোকসংগীত। পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে টিএসসি ঘুরে আবার চারুকলা অনুষদে ফিরে আসবে। পরের দিন সন্ধ্যায় হবে যাত্রাপালা।
শহরজুড়ে আয়োজন: ধানমন্ডি লেকের পাশে গতকাল দেখা গেল ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা নির্মাণ করছেন বিভিন্ন রকমের ভাস্কর্য। প্রতিবছরের মতো এবারও ইউডার চারুকলা অনুষদ নানা রঙের মুখোশ ও রকমারি লোকজ আঙ্গিকের পুতুল তৈরি করছে। সহকারী অধ্যাপক শিল্পী মাহবুব হাসান খান জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডির ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে আবার একই জায়গায় শেষ হবে। শোভাযাত্রা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ ছাড়া রাজধানীতে পোশাক-আশাকের দোকানগুলোতে বেড়েছে উৎসবের জন্য তৈরি লাল-সাদা নকশার পোশাক ও অলংকারের বিক্রি। মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর কদরও বেড়েছে। শিশু একাডেমীর সামনে দেখা গেল, মাটির সামগ্রী বিক্রির অস্থায়ী দোকানগুলোতে প্রচণ্ড ভিড়। একাডেমীর গেটের পাশে বিক্রেতা জানান, বৈশাখের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ততই বাড়ছে। বছরের এই সময়টাতে বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মূল দরজার ভেতর দিয়ে ঢুকেই মাটির সরা, জলরঙের চিত্রকর্ম ও মুখোশের যে প্রদর্শনী দেখা গেল, সেটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্যাপনের তহবিল গঠনের জন্য। প্রস্তুতির এই মহাযজ্ঞের তদারক করছেন চারুকলার শিক্ষক ও শিল্পী আবুল বারক আলভী, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য্যসহ অনেকে।
শিল্পী নিসার হোসেন বললেন, ‘গত বছর আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল ভাবনা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। এবারের ভাবনা বাংলার সমুদ্রসীমা বিজয়কে নিয়ে। বাংলার রূপকথায় সমুদ্র বিজয় বলতে সাতসমুদ্দুর তেরো নদী পেরিয়ে যাওয়াকে বোঝানো হয়েছে। আমরা তাই মিয়ানমারের বিপক্ষে যে মামলায় জিতে সমুদ্রসীমা জয় করেছি, সেই বিজয় বোঝাতে ময়ূরপঙ্খী নাওয়ের আদলে বড় সাম্পান তৈরি করা হবে।’ এ ছাড়া থাকবে ‘হাতির পিঠে লাঠি হাতে মাহুত’, থাকবে লোকজ পুতুল, বাঘ, ঘোড়া, বাংলার ক্রিকেট-বীরদের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি প্রভৃতি। আর চিরায়ত বাংলার স্মারক তো থাকবেই।
শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘প্রতিবছরই চারুকলা অনুষদ এই উৎসবটি করে থাকে কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তা ছাড়াই। এবারও তা-ই হচ্ছে। ছবি, সরা ও মুখোশ বিক্রি করে খরচ উঠছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নিজেরাও কিছু কিছু অর্থ দিয়ে তহবিল গঠন করছে। শিক্ষকেরাও ছবি দিয়ে সহায়তা করছেন।’
এরই মধ্যে শিল্পী ও শিক্ষক সমরজিৎ রায়চৌধুরী, রণজিৎ দাস, শেখ মনিরুজ্জামান, সুকুমার পাল, শহীদ কাজী, কামারুজ্জামান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ শিক্ষক ছবি জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া মতলুব আলী, বীরেন সোম, নিসার হোসেন সরা দিয়েছেন বিক্রির জন্য। শিক্ষকদের চিত্রকর্ম সর্বনিম্ন আড়াই হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি এক হাজার ও ৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লোকজ নকশা আঁকা সরার দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং মুখোশ ৬০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
চারুকলা অনুষদের অনুষ্ঠান হবে তিন দিন। বকুলতলায় বছরের শেষ দিন হবে (১৩ এপ্রিল) চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান। এতে থাকবে লোকসংগীত। পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে টিএসসি ঘুরে আবার চারুকলা অনুষদে ফিরে আসবে। পরের দিন সন্ধ্যায় হবে যাত্রাপালা।
শহরজুড়ে আয়োজন: ধানমন্ডি লেকের পাশে গতকাল দেখা গেল ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা নির্মাণ করছেন বিভিন্ন রকমের ভাস্কর্য। প্রতিবছরের মতো এবারও ইউডার চারুকলা অনুষদ নানা রঙের মুখোশ ও রকমারি লোকজ আঙ্গিকের পুতুল তৈরি করছে। সহকারী অধ্যাপক শিল্পী মাহবুব হাসান খান জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডির ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে আবার একই জায়গায় শেষ হবে। শোভাযাত্রা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ ছাড়া রাজধানীতে পোশাক-আশাকের দোকানগুলোতে বেড়েছে উৎসবের জন্য তৈরি লাল-সাদা নকশার পোশাক ও অলংকারের বিক্রি। মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর কদরও বেড়েছে। শিশু একাডেমীর সামনে দেখা গেল, মাটির সামগ্রী বিক্রির অস্থায়ী দোকানগুলোতে প্রচণ্ড ভিড়। একাডেমীর গেটের পাশে বিক্রেতা জানান, বৈশাখের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ততই বাড়ছে। বছরের এই সময়টাতে বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়।
No comments