সন্ত্রাসীর প্রত্যাবর্তন-আতঙ্কের ছায়া

ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই অংশের মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা যখন পরিবর্তনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করছেন, তখন পুরান ঢাকার পলাতক সন্ত্রাসীদের এলাকায় ফেরার খবর আশার আগুনে আতঙ্কের পানিই ঢেলে দেয়। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাচ্ছে, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ইতিমধ্যে


হানাহানিও শুরু হয়েছে। গত এক মাসেই খুন হয়েছে চারজন। আমাদের বুঝতে কষ্ট হয় না যে, প্রভাবশালী প্রার্থীরাই নির্বাচনে পেশিশক্তির সুযোগ নেওয়ার জন্য বহু মামলা মাথায় নিয়ে ফেরারি সন্ত্রাসীদের স্বাগত জানাচ্ছে। সন্ত্রাসের মদদদাতা এসব প্রার্থী আর কী পরিবর্তন আনবে? আশার কথা হচ্ছে, সমাজবিরোধী এই মুখগুলো ভোটারদের কাছে অপরিচিত নয়। আমরা আশা করি, আসন্ন নির্বাচনে বুলেটের বদলে ব্যালটেরই জয় হবে। কিন্তু ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি ও সুরক্ষার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষেরই। রাজনৈতিক দলগুলোও দায় এড়াতে পারে না। সিটি করপোরেশন যদিও স্থানীয় সরকারের অধীন, ওই নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অলিখিত মনোনয়ন এখন ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করি, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির স্থানীয় নেতাকর্মীরাই হাইকমান্ডের পছন্দের শীর্ষে থাকবেন। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলকেই বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকার ও প্রশাসনের সবুজ সংকেত ছাড়া সমাজবিরোধীরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। সন্ত্রাসীর মদদদাতারা যাতে প্রার্থীই হতে না পারে, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনও কি উদ্যোগী হতে পারে না? বড় কথা, পুরান ঢাকায় সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা যতটা না সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে, তার চেয়ে অনেক বেশি সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বার্থেই অগ্রহণযোগ্য। ইতিমধ্যে ওই এলাকায় ছিনতাই-রাহাজানিও বেড়ে গেছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি না হওয়া পর্যন্ত কি কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে না? আমরা আশা করি, অবিলম্বেই সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় নয়। প্রশাসন আন্তরিক হলে তা কঠিন হতে পারে না। আমরা চাই, ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকায় সন্ত্রাস নয়, সোনালি সম্ভাবনাই সংবাদ শিরোনাম হোক।

No comments

Powered by Blogger.