আর্থিক খাতে ঝুঁকি আরও বাড়বে-রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংক
শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের অনুমোদন দিল। বাংলাদেশ ব্যাংক গত রোববার এই অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে। এ কথা ঠিক যে, এক যুগের ব্যবধানে দেশের অর্থনীতির আয়তন ও পরিধি যেমন বেড়েছে,
তেমনি কিছু গুণগত পরিবর্তনও এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার যৌক্তিকতাও দাঁড় করানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নানা তথ্য-পরিসংখ্যানের মাধ্যমে নতুন ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছে। কিন্তু কিছু বাস্তবসম্মত কারণেই এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ আছে, আছে উদ্বিগ্ন হওয়ার।
প্রথমত, নতুন ব্যাংকের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের তালিকা দেখলে এ বিষয়ে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক যতই অস্বীকার করুক। দলীয় তহবিলের আয়তন বাড়ানোর বিষয়টিই এখানে কাজ করেছে। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ছাড়া এই প্রবণতা থেকে সহজে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না।
দ্বিতীয়ত, অধিকতর প্রতিযোগিতা করে ব্যাংক সেবার মানে উৎকর্ষ আনয়নের যে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, সেটা কাম্য হলেও বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। প্রতিযোগিতা কতটা সুস্থ ও বিধিসম্মত হবে, সেটা বিবেচনার দাবি রাখে। পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক সুবিধাভোগী বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপে গত তিন বছরে দেশের আর্থিক খাতকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যা সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ ক্ষুণ্ন করেছে। মুনাফা বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় ব্যাংকগুলো প্রতিযোগিতার নামে নানা অনিয়মে লিপ্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক এলে কীভাবে ও কতটা সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে, তা ভেবে দেখা দরকার।
তৃতীয়ত, আর্থিক খাতের ওপর নজরদারি ক্রমশ নাজুক হয়ে পড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বলতাও স্পষ্ট। ঢাকঢোল পিটিয়ে কৃষিঋণ বিতরণসহ কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় মনোযোগ দিলেও সামগ্রিকভাবে বিধিবিধান অনুসরণে কঠোরতার ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আর সেই সুযোগে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর, বিশেষ করে ব্যাংকগুলোর পরিচালকেরা নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। ব্যাংকগুলো বিধিবহির্ভূত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে জড়িয়ে পড়েছে।
চতুর্থত, বাজার অর্থনীতির সূত্র মেনেই যদি নতুন ব্যাংককে যৌক্তিকতা দেওয়া হয়, তাহলে দুর্বল বা পিছিয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে কি বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে? সম্ভব কি হবে পুরোনো অথচ ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া একাধিক ব্যাংককে একীভূত করার কিংবা পুনর্গঠনের?
বস্তুত, নতুন ব্যাংকগুলো কার্যক্রম শুরু করলে গোটা আর্থিক খাতের পরিধি আরও বেড়ে যাবে। সেই বিস্তৃত পরিধিতে দুর্বল নজরদারি আর্থিক খাতের ঝুঁকিও বাড়াবে। অন্যদিকে জোরালো রাজনৈতিক খুঁটি থাকায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ আরও কঠিন হবে। সরকার এই বিষয়গুলো কীভাবে মোকাবিলা করে, সেটাই দেখার বিষয়। তবে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুস্থ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে শিল্প-বাণিজ্য অর্থায়নকে মসৃণ করা এবং অধিকতর মানুষকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনার ইতিবাচক প্রয়াসের সুফল পেতে হলে এ বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বসহকারে মনোযোগ দিতে হবে।
প্রথমত, নতুন ব্যাংকের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের তালিকা দেখলে এ বিষয়ে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক যতই অস্বীকার করুক। দলীয় তহবিলের আয়তন বাড়ানোর বিষয়টিই এখানে কাজ করেছে। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ছাড়া এই প্রবণতা থেকে সহজে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না।
দ্বিতীয়ত, অধিকতর প্রতিযোগিতা করে ব্যাংক সেবার মানে উৎকর্ষ আনয়নের যে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, সেটা কাম্য হলেও বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। প্রতিযোগিতা কতটা সুস্থ ও বিধিসম্মত হবে, সেটা বিবেচনার দাবি রাখে। পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক সুবিধাভোগী বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপে গত তিন বছরে দেশের আর্থিক খাতকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যা সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ ক্ষুণ্ন করেছে। মুনাফা বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় ব্যাংকগুলো প্রতিযোগিতার নামে নানা অনিয়মে লিপ্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক এলে কীভাবে ও কতটা সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে, তা ভেবে দেখা দরকার।
তৃতীয়ত, আর্থিক খাতের ওপর নজরদারি ক্রমশ নাজুক হয়ে পড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বলতাও স্পষ্ট। ঢাকঢোল পিটিয়ে কৃষিঋণ বিতরণসহ কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় মনোযোগ দিলেও সামগ্রিকভাবে বিধিবিধান অনুসরণে কঠোরতার ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আর সেই সুযোগে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর, বিশেষ করে ব্যাংকগুলোর পরিচালকেরা নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। ব্যাংকগুলো বিধিবহির্ভূত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে জড়িয়ে পড়েছে।
চতুর্থত, বাজার অর্থনীতির সূত্র মেনেই যদি নতুন ব্যাংককে যৌক্তিকতা দেওয়া হয়, তাহলে দুর্বল বা পিছিয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে কি বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে? সম্ভব কি হবে পুরোনো অথচ ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া একাধিক ব্যাংককে একীভূত করার কিংবা পুনর্গঠনের?
বস্তুত, নতুন ব্যাংকগুলো কার্যক্রম শুরু করলে গোটা আর্থিক খাতের পরিধি আরও বেড়ে যাবে। সেই বিস্তৃত পরিধিতে দুর্বল নজরদারি আর্থিক খাতের ঝুঁকিও বাড়াবে। অন্যদিকে জোরালো রাজনৈতিক খুঁটি থাকায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ আরও কঠিন হবে। সরকার এই বিষয়গুলো কীভাবে মোকাবিলা করে, সেটাই দেখার বিষয়। তবে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুস্থ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে শিল্প-বাণিজ্য অর্থায়নকে মসৃণ করা এবং অধিকতর মানুষকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনার ইতিবাচক প্রয়াসের সুফল পেতে হলে এ বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বসহকারে মনোযোগ দিতে হবে।
No comments