আগাম সতর্কতাই রক্ষাকবচ-ডায়রিয়া বাড়ছে

দূষিত পানি ও গরম আবহাওয়া—দুটো মিলে প্রতিবছর এ সময়টায় ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। গত কয়েক দিনে রাজধানীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন শুধু আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি) শ পাঁচেক রোগীর ভর্তি হওয়ার বিষয়টি পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হিসেবেই ধরে নিতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সামনের কয়েক দিনে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।


মূলত দূষিত পানি ও খাবার ডায়রিয়ার জন্য দায়ী। ফলে এ দুটি ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমানো যায়। খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধোয়া, বিশুদ্ধ পানি পান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা ও পচা-বাসি বা খোলা খাবার না খাওয়া—এই কয়েকটি বিষয়ে সচেতন হলেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। ঢাকা শহরে ওয়াসার সরবরাহ করা পানির মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ সরবরাহ লাইনের কারণে বাইরের দূষিত পানি ওয়াসার লাইনে ঢুকে যায়। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার বিরুদ্ধে। ডায়রিয়ার সঙ্গে এই পানি সমস্যার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে যেকোনো মূল্যে পানি ফুটিয়ে পান করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। বিকল্প হিসেবে ফিটকিরি দিয়ে পানি পরিষ্কার করে বা চারপর্দা পরিষ্কার কাপড়ে পানি ছেঁকে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আইসিডিডিআরবি থেকে।
খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার বিষয়টিও খুবই জরুরি। যে খাবার খাচ্ছেন, তা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া উচিত। আমাদের দেশে রাস্তাঘাটে যেসব খাবার বিক্রি হয়, অধিকাংশই মানসম্মত নয়। তা ছাড়া খোলা অবস্থায় যেভাবে তা বিক্রির জন্য রাখা হয়, তাতে ধুলাবালিতে তা দূষিত হয়ে পড়ার আশঙ্কাই বেশি। এ ধরনের খাবার পরিহার করা জরুরি। শিশুরাই বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়, তাই এ সময়টায় তাদের ব্যাপারেও বিশেষ সতর্কতা জরুরি।
ডায়রিয়া হয়ে গেলে এর চিকিৎসা পদ্ধতি অবশ্য খুব কঠিন নয়। ডায়রিয়ার লক্ষণ ধরা পড়ার পর খাবার স্যালাইন দেওয়া গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। কোনো ক্ষেত্রে কাজ না হলে হেলাফেলা না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই। তবে আমাদের কথা হচ্ছে, কিছু বিষয়ে সাবধান থাকলে যেহেতু ডায়রিয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়, তাই আমরা আগাম সতর্কতার ওপরই বেশি জোর দিতে চাই।

No comments

Powered by Blogger.