সময়ের প্রতিবিম্ব-সংবিধান সংশোধন নিয়ে অলীক ভাবনা by এবিএম মূসা

সংবিধান সংশোধন নিয়ে বিজ্ঞজন ও বিশেষজ্ঞদের আলোচনা ও আমার মতো অভাজনদের অংশগ্রহণে বিতর্ক বেশ জমে উঠেছে। সংশোধনী প্রস্তাবকেরা আদিতে একবাক্যে বলেছিলেন, ‘বাহাত্তরটি’ হুবহু দাঁড়ি-কমা-সেমিকোলনসহ অবিকলভাবে ফিরিয়ে আনা হবে। বর্তমানে সংশোধনীগুলো বিবেচনায় বিষয়াদি বিস্তৃততর হয়েছে।


চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে, এক কথা থেকে আরেক কথার সূত্রপাত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি উচ্চতম আদালতে গড়িয়েছে। রায়ের ভিত্তিতে একটি বইও ছেপে ফেলেছে আইন মন্ত্রণালয়। তা ছাড়া রায়টি আদালতের পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তার পরও কেন এত আলোচনা, বৈঠক ও বিতর্ক, তা আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বুঝতে পারছি না।
আলোচনায় একটুখানি অতীতে যাব। বাহাত্তরের সংবিধান যে গণপরিষদে গৃহীত হয়েছিল তার গঠন ছিল বিচিত্র ধরনের। সেই বৈচিত্র্য ছিল (১) পাকিস্তানের, বাংলাদেশের নয়; সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠন করতে সত্তরের নির্বাচনে দুই অঞ্চলের ৩০০ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। (২) স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদ গঠিত হয়েছিল রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে। সেই গণপরিষদে দুই ধরনের সদস্য ছিলেন। প্রধানত সত্তরে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় পরিষদের পূর্ব পাকিস্তানের সদস্য ও ভিন্ন উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল সেই গণপরিষদ। তবে এই গঠন-প্রক্রিয়ায় দুই পরিষদের সদস্যদের যাঁরা রাজাকার-আলবদর ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, যার মধ্যে স্বল্পসংখ্যক আওয়ামী লীগারও ছিলেন, তাঁদের সদস্যপদ আগেই বাতিল করা হয়েছিল। তাঁরা সংবিধান প্রণয়নে অংশ নেননি।
আবার সুদূর অতীতে পাকিস্তানের একটি গণপরিষদ প্রথমেই মোটামুটি সর্বজনগৃহীত ১৯৫৪ সালে সংবিধান প্রণয়ন করেছিল। সংবিধানটি বাতিল করলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খানের সমর্থন নিয়ে সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা গ্রহণকারী গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যাঁরা বর্তমানে নতুন সংবিধানে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা গ্রহণ করলে শাস্তির বিধান রাখার কথা বলছেন, তাঁরা অনুধাবন করছেন না, ক্ষমতা গ্রহণকারী ক্ষমতায় এসে প্রথমেই সেই সংবিধানটি ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের জাতীয় পরিষদও একটি সংবিধান রচনা করেছিল, যা ইয়াহিয়া খান বাতিল করেন। তাই বলছিলাম, সংবিধানে শাস্তির বিধান রেখে নয়, একমাত্র রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও রাজনীতিবিদদের গণতান্ত্রিক সদাচারই স্বেচ্ছাচারীর আগমন রোধ করতে পারে।
স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদ নতুন দেশের একটি সংবিধান স্বল্পতম সময়ে রচনা করে ইতিহাস সৃষ্টি করল। বর্তমানে সংশোধনী নিয়ে আলোচনায় সেই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদটি উদ্ধৃত হচ্ছে। কারণ, শেষ পর্যন্ত যেকোনো সংশোধন এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শৃঙ্খলিত সংসদ সদস্যদের দ্বারাই গৃহীত বা প্রত্যাখ্যাত হতে হবে।
প্রথমে আলোচনা করব বিচারপতিদের বিচার, যা আগেও সীমিত আকারে করেছি। পুনরালোচনার খাতিরে চর্বিতচর্বণ করছি। দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতার সাংঘর্ষিক অবস্থান। ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, একই গাছে আম ও আমড়া দুই-ই ফলানো অর্থাৎ সহ-অবস্থান। তৃতীয়ত বিবেচ্য হলো বিচারকদের বিচার-সম্পর্কিত ৯৬ অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপন। এ ছাড়া আলোচিত হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ অথবা রূপ পরিবর্তন। বর্ণিত প্রতিটি বিষয় নিয়ে একেকটি বিস্তারিত নিবন্ধ রচনা করা যায়। স্থানাভাবে সামগ্রিক নয়, প্রতিটি বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি।
আদালতের বিচারপতিদের বিচারসম্পর্কীয় সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রবক্তারা অতিমাত্রায় তৎপর ও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞ, আইনজ্ঞ ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ—সবাই যাঁর যাঁর মতো বক্তব্য দিচ্ছেন। একমাত্র বেচারা বিচারপতিরা কিছু বলতে পারছেন না, যদিও দু-একটি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁরাই। সংসদীয় কমিটির অতি উৎসাহের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬, বিশেষ করে উপ-অনুচ্ছেদ ৪ ও ৫। বিচারপতির বিচার করবেন কারা, সেই উপ-অনুচ্ছেদে বিস্তারিত বলা হয়েছে। বিচারপতির শারীরিক ও মানসিক অসামর্থ্য নির্ধারণ, অসদাচরণের বিচারভার বাহাত্তরে সংসদের ওপর ন্যস্ত ছিল। সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ সালে পুনঃস্থাপিত বিধান হচ্ছে, ‘একটি জুডিশিয়াল কাউন্সিল থাকিবে। প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী যে দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া এই কাউন্সিল গঠিত হইবে।’ এই কাউন্সিল বিচারকদের বিচার করবেন। বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল কোনো ‘কাউন্সিলে বিচার নয় সংসদে অভিশংসন তথা ইমপিচ করা হবে’। বর্তমান বিধান হচ্ছে, যে ক্ষেত্রে ‘কাউন্সিল অথবা অন্য কোন সূত্র হইতে প্রাপ্ত তথ্যে এইরূপ বুঝিবার কারণ থাকে যে বিচারক অসামর্থ্য হয়েছেন তবেই রাষ্ট্রপতি কাউন্সিলকে তদন্ত করতে বলবেন।’ আমি ‘অন্য কোন সূত্র’ শব্দত্রয়কে গুরুত্ব দেব। কারণ, এতে যেকোনো নাগরিক অভিযোগকারী হতে পারেন। এই অনুচ্ছেদ বাহাত্তরের সংবিধানের পূর্বাবস্থায় ফিরে গেলে শুধু সংসদ সদস্যরা হবেন অভিযোগকারী, সংক্ষুব্ধ কোনো নাগরিকের সরাসরি অভিযোগ করার সুযোগ নেই। অভিযোগকারী সংসদ সদস্যরাই বিচার করবেন। অভিশংসনের পর অপসারণের কাজটি শেষ পর্যন্ত দুই ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রপতিই করবেন। এ ক্ষেত্রে স্বল্পজ্ঞান নিয়ে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, অভিশংসনের ও রাষ্ট্রপতির ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য্যকর করিবেন।’ ৪৮(৩) অনুচ্ছেদটি অভিশংসন ও কাউন্সিলে বিচার উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তা হলে ৯৬ এবং ৪৮(৩) সাংঘর্ষিক মনে হয় না কি?
যুক্তিতর্ক পেশের আগে প্রশ্ন করা যেতে পারে, আচম্বিতে বিচারকদের বিচারের বিষয়টি সংসদীয় কমিটিতে এত প্রাধান্য পাচ্ছে কেন? অভাজনের নিবেদন ছিল, বিচারপতিদের বিচার তাঁরাই করবেন। অন্যের হাতে গেলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ভাবনাটি আমার মগজে ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে তা হলো, বিরোধী দল যে বলে বর্তমানের অধিকাংশ বিচারক আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হওয়ার কারণে আদালত নিরপেক্ষ হতে পারছেন না—কথাটি কি তবে সত্য নয়? তাঁদের নিয়োগকৃত বিচারপতিরা ‘কথা শুনছেন না’ বলেই কি দলীয় সরকার তাঁদেরই নিযুক্ত, বিএনপির মতে পক্ষপাতদুষ্ট, বিচারকদের নিয়েও স্বস্তিতে নেই। তাই অভিশংসনের ব্যবস্থা করে ঘুড়ির লাটাই পুরোপুরি কবজা করতে চান? আগেও বলেছি, এখনো বলছি, আমি বিচারপতিদের অভিশংসনের উদ্যোক্তা ও সমর্থকদের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। কারণ, সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ অসংশোধিত থাকলে দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য তাঁদের নেতা বা নেত্রীর নির্দেশ মেনেই শুধু অভিশংসন করতে অথবা রায় দিতে পারবেন। আগের প্যারাতে বলেছি, স্বাধীনভাবে কোনো সদস্য নন, দুই-তৃতীয়াংশ সংসদীয় দলের নেতা বা নেত্রীর কাছে ‘প্রতীয়মান’ হতে হবে অসামর্থ্যতা অথবা অসদাচরণের কারণে কোন বিচারকের বিচার করতে হবে, কাকে দোষী বা নির্দোষ বলতে হবে। আরেকটি ভাবনাও রয়েছে। যদি কোনো জমানার সংসদে কোনো দলের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য না থাকেন, তবে বিচারপতিরা বর্ণিত অপরাধ করেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন।
সংবিধান প্রণয়নে প্রধান ভূমিকা পালনকারী ড. কামাল হোসেন বলেছেন, যখন ৭০ অনুচ্ছেদটি লেখা হয় তখন সংসদের যে চেহারা-সুরত ছিল, সেটি এখন নেই। সেই কারণে তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল-ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষপাতী। ‘চেহারা-সুরত’ বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন, তা আমার মনে হয় পাঠকের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কামাল হোসেন যে সংসদ সদস্যদের চরিত্রের কথা বলছেন, দূরদর্শী ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু তাঁদের কারণেই ৭০ অনুচ্ছেদ যুক্ত করেছিলেন। সৎ ও নির্ভীক রাজনীতিক, আইনজীবী, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী নিয়ে গঠিত সংসদ সদস্যদের ওপরই স্বয়ং বঙ্গবন্ধু আস্থা রাখতে পারেননি। আর এখন অধিকাংশ ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বেচাকেনায় অভিজ্ঞ সদস্য সমন্বিত সংসদের হাতে বিচারপতিদের বিচারের ভার দেওয়া সঠিক হবে কি? অনুজ সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান সংবিধান বিষয়ে আমার চেয়ে অধিকতর অভিজ্ঞ। তিনি ও অন্য অনেক বিশেষজ্ঞ ওপরে উত্থাপিত আমার ভাবনার বিপরীতে মনে করেন, বিচারকদের জবাবদিহির ও স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাঁকে প্রশ্ন করেছি, সংসদ সদস্যদের নিজেদের জবাবদিহি আছে কি না, থাকলে কার কাছে। জনগণের কাছে আছে বটে, সে তো পাঁচ বছর পর পর।
এরপর আলোচনা হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী অবস্থান (অনুচ্ছেদ ২৮-১-৩) ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নির্ধারণ (অনুচ্ছেদ ২-ক) সাংঘর্ষিক কি না। এ নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই, আলোচনাও হবে অর্থহীন। বর্তমান সরকার যেখানে এক আমিনীকে নিয়েই বেকায়দায় পড়েছে, হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে; সে ক্ষেত্রে দুই ধারার বিষয়ের কোনোটিই তারা সুরাহা করবে বলে মনে হয় না। মহামান্য আদালতও বিষয়টি পাশ কাটিয়ে গেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থার কী হবে? বিষয়টি স্বল্প পরিসরে বিস্তারিত আলোচনা করলাম না। একটিমাত্র প্রশ্ন, যাঁরা বিচারপতিদের পরিবর্তে ‘একজন নিরপেক্ষ’ ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে চান তাঁদের কাছে। কোথায় পাবেন এই অমূল্য রতন? যদি খুঁজে পানও, নির্বাচনে হেরে গেলে প্রস্তাবক দলই বলবে, তিনি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের ভাগ্যবিড়ম্বনার বিষয়টি স্মরণ করুন।
সংবিধান সংশোধন নিয়ে অভাজনের আলোচনায় সর্বশেষ বাস্তবভিত্তিক মন্তব্য হচ্ছে, বৃথা এত ভাবনা। নিরর্থক এত বিতর্ক, সেমিনার, মতবিনিময়, বিরোধী দলের সমালোচনা। জানতে হবে, একমাত্র গুরুত্ব দিতে হবে—ক্ষমতাসীন সরকার তথা দল ও দলীয় সাংসদদের নেত্রী কী ভাবছেন। সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে সংসদে তিন-চতুর্থাংশ আসনের অধিকারী দলের নেত্রী সংসদীয় কমিটির যুগ্ম সভাপতিকে কী বলেন, তা জানতে হবে। সরকার কি উচ্চতম আদালতপ্রদত্ত মতকেই চূড়ান্ত মনে করে, নাকি জাতীয় সংসদে কোনো সংশোধনী প্রস্তাব বিল আকারে পেশ করবে? যদি তা-ই করে, সেটির রূপ দেখার পরই সঠিক আলোচনা করা যাবে। এখন সব আলোচনা, বিতর্ক অসার অথবা প্রিম্যাচিউর, আগাম নিরর্থক ভাবনা বলা যায়। তবে একটি ইতিবাচক ভাবনাও প্রাধান্য পেতে পারে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো আলোচনা, বৈঠক, বিতর্কের সূচনা করে কোনো চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে ‘জনমত যাচাই’ করছে। তা যদি হয়, তবে তা হবে বাস্তবসম্মত। এই সব ভাবনা-চিন্তার দ্বন্দ্বের কারণে সংশোধন নিয়ে সব বিতর্ক ও আলোচনা হবে শুধু ‘ফিউটাল এক্সারসাইজ অর ইন্টারেস্টিং পাসটাইম,’ বৃথা আলোচনায় সময় কাটানো, গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসানো। আমিও বোধ হয় এতক্ষণ কলম চালিয়ে তা-ই করলাম।
এবিএম মূসা: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

No comments

Powered by Blogger.