লোডশেডিং বাড়বেঃ বিলম্বিত পদক্ষেপের খেসারত
বেজে উঠেছে মাঘের বিদায় ঘণ্টা। ফাল্গুন আসতে আর মাত্র ক’দিন বাকি। সকাল-সন্ধ্যায় শীতের আভাস পাওয়া গেলেও বাকি সময় গরম কাপড়ের প্রয়োজন আপাতত ফুরিয়েছে। এরই মধ্যে ফ্যান চলছে বাসাবাড়িতে, অফিস-আদালতে।
আঁচ করা যাচ্ছে, এবার গরম পড়বে ফাল্গুনের শুরু থেকেই। সেই সঙ্গে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়বে সারা দেশ, তারও আলামত স্পষ্ট। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এখন পাঁচ থেকে আট দফা লোডশেডিং হচ্ছে। গরম পড়লে বিদ্যুতের চাহিদা স্বভাবতই বাড়বে, কিন্তু বিদ্যুতের সরবরাহ যে বাড়বে না এরই মধ্যে তার খবর হয়ে গেছে। কারণ বিদ্যুতের উত্পাদন তিন মাস আগের তুলনায় কমে গেছে পাঁচশ’ মেগাওয়াট। বাড়বে এমন সম্ভাবনা অনিশ্চিত।
এবার শীত মৌসুমে বিদ্যুতের স্বাভাবিক উত্পাদন ধরে রাখা যায়নি। ফলে লোডশেডিং চলছে প্রায় নির্বিচারে। শীত মৌসুমে চাহিদা কম থাকায় তা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল। বসন্তের সূচনাপর্বেই লোডশেডিং আর দুর্ভোগ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বর্তমানে ঢাকা শহরের গ্যাসের চুলো ঠিকমত চলছে না, বাল্ব এই জ্বলছে—এই নিভছে। বিদ্যুত্ না থাকায় এরই মধ্যে আসন্ন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীরা মোম-হারিকেন জ্বালিয়ে পড়ালেখা করছে। এদিকে বিদ্যুতের অভাবে পানি সরবরাহেও এলাকাবিশেষে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন নগরবাসী।
এর আগে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, গ্রীষ্মের সেচ মৌসুমে শহরাঞ্চলে বিদ্যুত্ সরবরাহ কমিয়ে সেচের চাহিদা মেটানো হবে। শহরের মানুষের বিদ্যুত্ কষ্ট বাড়লেও সেচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ দেবে সরকার। যদি তাই হয়, তাহলে লোডশেডিং কতটা অসহনীয় পর্যায়ে যাবে তা অনুমান করতেও ভয় হয়। কারণ সবার জানা, সরকার বিদ্যুত্ উত্পাদন তো বাড়ায়ইনি, বরং এখন আগের চেয়ে কমেছে। কাজেই এক গর্তের মাটি দিয়ে অন্য গর্ত ভরাট করা ছাড়া বিকল্পই বা কী আছে! বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেয়ার সময় যে পরিমাণ উত্পাদন ছিল, এখন তা থেকেও কমে গেছে চারশ’ মেগাওয়াট। অথচ সেচ মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে ১৫শ’ মেগাওয়াট। বিদ্যুত্ প্রতিমন্ত্রীও সম্প্রতি এই অতিরিক্ত চাহিদার কথা এবং শহরে লোডশেডিং বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে সেচে বিদ্যুত্ সরবরাহ বাড়বে। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, গরম বাড়ার শুরুতেই শহরে লোডশেডিং দুঃসহ অবস্থার দিকে ধাবিত হবে। সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বিদ্যুত্ সঙ্কট আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে।
বাস্তবতা হচ্ছে, গরম মৌসুমে লোডশেডিং মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগ মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। সময়ের কাজ অসময়ে শুরু করায় এ অবস্থা বেশি করে প্রকট হয়েছে। জানা গেছে, সেচ মৌসুমের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকার ফার্নেস তেল চালিত ৮টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র এবং ১০টি পিকিং প্লান্টের (সান্ধ্যকালীন পিক আওয়ারে) টেন্ডার আহ্বান করেছিল। ৫৩০ মেগাওয়াটের আটটি কেন্দ্রের পাঁচটির দরপত্র মন্ত্রিসভা বৈঠকের অনুমোদন পায় গত ২৩ ডিসেম্বর। এসব বিদ্যুত্ ইউনিট স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের নির্ধারিত তারিখ ছিল ৩০ ডিসেম্বর। কিন্তু মাত্র তিনটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত ৪ ফেব্রুয়ারি। বিলম্বিত চুক্তির কারণে তার ফলভোগের সম্ভাবনা পিছিয়ে গেছে। অর্থাত্ এই ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত্ গরমকালে পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত। পিডিবি এখনও অন্যান্য চুক্তির দিনক্ষণ জানাতে পারছে না। এদিকে গতকাল চাঁদপুর ও সিলেটে দেড়শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেন্দ্রের নির্ধারিত চুক্তি হয়ে থাকলেও তা থেকে বিদ্যুত্ পেতে অপেক্ষা করতে হবে কয়েক বছর। পিকিং প্লান্ট স্থাপনের প্রক্রিয়াও চলছে শম্বুকগতিতে। পিডিবি’র মূল্যায়নের কাজই নাকি এ পর্যন্ত শেষ হয়নি। অন্যান্য সম্ভাবনার দুয়ারেও খিল এঁটে আছে। এ অবস্থায় অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে গরমের বহুমাত্রিক আঁচ বেশি মাত্রায়ই সইতে হবে রাজধানীসহ দেশবাসীকে। কৃষিমন্ত্রী ঘোষিত শহরবাসীর ‘বিদ্যুত্-কষ্ট’ আক্ষরিক অর্থেই দুঃসহ হয়ে দেখা দেবে।
বিদ্যুত্ উত্পাদনে ঘাটতি, ক্রমবর্ধিত লোডশেডিং এবং এর ভোগান্তি একটি জ্বলন্ত সমস্যা। ক্রমান্বয়ে এই সমস্যা লাঘব হওয়ার কথা। এটি জাতীয় উন্নয়নের একটি সূচক বটে। এক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা, বিলম্বিত পদক্ষেপ যে কোনো বিবেচনায় হতাশাব্যঞ্জক। এই হতাশা থেকে উদ্ভূত সঙ্কট দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
এবার শীত মৌসুমে বিদ্যুতের স্বাভাবিক উত্পাদন ধরে রাখা যায়নি। ফলে লোডশেডিং চলছে প্রায় নির্বিচারে। শীত মৌসুমে চাহিদা কম থাকায় তা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল। বসন্তের সূচনাপর্বেই লোডশেডিং আর দুর্ভোগ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বর্তমানে ঢাকা শহরের গ্যাসের চুলো ঠিকমত চলছে না, বাল্ব এই জ্বলছে—এই নিভছে। বিদ্যুত্ না থাকায় এরই মধ্যে আসন্ন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীরা মোম-হারিকেন জ্বালিয়ে পড়ালেখা করছে। এদিকে বিদ্যুতের অভাবে পানি সরবরাহেও এলাকাবিশেষে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন নগরবাসী।
এর আগে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, গ্রীষ্মের সেচ মৌসুমে শহরাঞ্চলে বিদ্যুত্ সরবরাহ কমিয়ে সেচের চাহিদা মেটানো হবে। শহরের মানুষের বিদ্যুত্ কষ্ট বাড়লেও সেচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ দেবে সরকার। যদি তাই হয়, তাহলে লোডশেডিং কতটা অসহনীয় পর্যায়ে যাবে তা অনুমান করতেও ভয় হয়। কারণ সবার জানা, সরকার বিদ্যুত্ উত্পাদন তো বাড়ায়ইনি, বরং এখন আগের চেয়ে কমেছে। কাজেই এক গর্তের মাটি দিয়ে অন্য গর্ত ভরাট করা ছাড়া বিকল্পই বা কী আছে! বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেয়ার সময় যে পরিমাণ উত্পাদন ছিল, এখন তা থেকেও কমে গেছে চারশ’ মেগাওয়াট। অথচ সেচ মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে ১৫শ’ মেগাওয়াট। বিদ্যুত্ প্রতিমন্ত্রীও সম্প্রতি এই অতিরিক্ত চাহিদার কথা এবং শহরে লোডশেডিং বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে সেচে বিদ্যুত্ সরবরাহ বাড়বে। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, গরম বাড়ার শুরুতেই শহরে লোডশেডিং দুঃসহ অবস্থার দিকে ধাবিত হবে। সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বিদ্যুত্ সঙ্কট আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে।
বাস্তবতা হচ্ছে, গরম মৌসুমে লোডশেডিং মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগ মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। সময়ের কাজ অসময়ে শুরু করায় এ অবস্থা বেশি করে প্রকট হয়েছে। জানা গেছে, সেচ মৌসুমের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকার ফার্নেস তেল চালিত ৮টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র এবং ১০টি পিকিং প্লান্টের (সান্ধ্যকালীন পিক আওয়ারে) টেন্ডার আহ্বান করেছিল। ৫৩০ মেগাওয়াটের আটটি কেন্দ্রের পাঁচটির দরপত্র মন্ত্রিসভা বৈঠকের অনুমোদন পায় গত ২৩ ডিসেম্বর। এসব বিদ্যুত্ ইউনিট স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের নির্ধারিত তারিখ ছিল ৩০ ডিসেম্বর। কিন্তু মাত্র তিনটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত ৪ ফেব্রুয়ারি। বিলম্বিত চুক্তির কারণে তার ফলভোগের সম্ভাবনা পিছিয়ে গেছে। অর্থাত্ এই ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত্ গরমকালে পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত। পিডিবি এখনও অন্যান্য চুক্তির দিনক্ষণ জানাতে পারছে না। এদিকে গতকাল চাঁদপুর ও সিলেটে দেড়শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেন্দ্রের নির্ধারিত চুক্তি হয়ে থাকলেও তা থেকে বিদ্যুত্ পেতে অপেক্ষা করতে হবে কয়েক বছর। পিকিং প্লান্ট স্থাপনের প্রক্রিয়াও চলছে শম্বুকগতিতে। পিডিবি’র মূল্যায়নের কাজই নাকি এ পর্যন্ত শেষ হয়নি। অন্যান্য সম্ভাবনার দুয়ারেও খিল এঁটে আছে। এ অবস্থায় অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে গরমের বহুমাত্রিক আঁচ বেশি মাত্রায়ই সইতে হবে রাজধানীসহ দেশবাসীকে। কৃষিমন্ত্রী ঘোষিত শহরবাসীর ‘বিদ্যুত্-কষ্ট’ আক্ষরিক অর্থেই দুঃসহ হয়ে দেখা দেবে।
বিদ্যুত্ উত্পাদনে ঘাটতি, ক্রমবর্ধিত লোডশেডিং এবং এর ভোগান্তি একটি জ্বলন্ত সমস্যা। ক্রমান্বয়ে এই সমস্যা লাঘব হওয়ার কথা। এটি জাতীয় উন্নয়নের একটি সূচক বটে। এক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা, বিলম্বিত পদক্ষেপ যে কোনো বিবেচনায় হতাশাব্যঞ্জক। এই হতাশা থেকে উদ্ভূত সঙ্কট দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
No comments