আইভরি কোস্ট এখন কোন পথে? by মার্ক ওপেন হাইমার
আইভরি কোস্টের শক্তিশালী ব্যক্তি লঁরা বাগবোকে অবশেষে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়নসহ প্রায় সবার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে পশ্চিমে বাগবোর কিছু সমর্থক দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, বিশেষ করে প্রভাবশালী রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ানরা।
বুঝতে পারা অসম্ভব যে তাঁরা বাগবোকে সমর্থন দিচ্ছেন শুধু তিনি ক্রিশ্চিয়ান বলে কি না। নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আলাসানে ওয়াতারা একজন মুসলমান। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে ওকলাহামার সিনেটর জেমস এম ইনহোফে, ক্রিশ্চিয়ান ব্রডকাস্টার রেভারেন্ড প্যাট রবার্টসন, ফঙ্ নিউজ টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব গ্লেন বেকের মন্তব্য থেকে মনে হয়, তাঁকে সমর্থন জানানোর পেছনে ধর্ম কাজ করেছে। সিনেটের আর্ম সার্ভিস ও ফরেন রিলেশন কমিটির সদস্য হিসেবে এই রিপাবলিকান সিনেটরের আফ্রিকার ব্যাপারে অধিক আগ্রহ আছে বলে সবাই জানেন। তিনি ৯ বার আইভরি কোস্ট ভ্রমণ করেছেন এবং লঁরা বাগবো ও তাঁর স্ত্রী সিমন তাঁর সুপরিচিত। ৩০ মার্চ ওবামা প্রশাসন যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগ দিয়ে বাগবোকে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন তখন সিনেটর ইনহোফে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটনের কাছে একটি চিঠি পাঠান। সে চিঠিতে তিনি আইভরি কোস্টে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানান এবং ইনহোফে উল্লেখ করেন, গত নভেম্বরের নির্বাচন ছিল প্রতারণাপূর্ণ।
সিনেটরের এ আগ্রহ সম্পর্কে মুখপাত্র জেয়ার্ড ইয়ুং গত শুক্রবার বলেছেন, সিনেটর এবং আফ্রিকার এ নেতা একত্রিত হয়েছিলেন সিনেটরের বহির্বিশ্বে ভ্রমণকালে। বাগবো যখন ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে যোগদান করেছিলেন তখন সিনেটর ইনহোফে এই ব্রেকফাস্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
১৯৫৩ সাল থেকে প্রতিবছর এই ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট হয়ে থাকে। ফেলোশিপ নামে একটি গোপন ক্রিশ্চিয়ান সংগঠন এর তদারক করে থাকে। ২০১০ সালে সিটিজেন ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস ইন ওয়াশিংটন নামের সরকারের একটি ওয়াচডগ গ্রুপ প্রেসিডেন্ট ওবামা ও কংগ্রেস নেতাদের এ অনুষ্ঠান এড়িয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি।
পরে শুক্রবার টেলিফোনে সিনেটর ইনহোফে বাগবো সম্পর্কে বলেছেন, 'আমরা দুজনই ক্রিশ্চিয়ান এটা ঠিক, তবে বিশ্বের অনেক মুসলমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।'
এরপর সিনেটর ইনহোফেকে জিজ্ঞেস করা হয়, কোন মুসলমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আছে? তিনি প্রায় এক মিনিট চিন্তা করে দুজন আফ্রিকান প্রেসিডেন্টের নাম বলেন। তাঁর একজন হলেন তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জাকায়া কিকওতে। ইনহোফে বলেন, তিনি একজন মুসলমান এবং আমার সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
আইভরি কোস্টে বাগবোর সেনা সমর্থকরা নৃশংসতা চালিয়েছে, এমন অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আমি এটা বিশ্বাস করি না। আপনি যদি ওই মানুষগুলো সম্পর্কে জানেন এবং বুঝতে চেষ্টা করেন তাহলে নিজেই এর সমাধান পাবেন।'
রবার্টসন ১৯৮৮ সালে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্যাট রবার্টসন ক্রিশ্চিয়ান ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্ক বা সিবিএন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাগবোর একজন সমর্থনকারী। গত মঙ্গলবার তিনি সিবিএনের একটি প্রোগ্রামে বলেছেন, বাগবো ভোট প্রতারণার শিকার। তিনি বলেছেন, 'জাতিসংঘ বলেছে যে অন্য লোক জয়লাভ করেছে। ভালো কথা। সেটা হয়তো হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, এ দেশটি কি এখন একজন ক্রিশ্চিয়ান প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে মুসলমানদের হাতে চলে যাবে? আরো একটি মুসলমান দেশ মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে শরিয়াহ আইনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে।'
ফঙ্ নিউজের মি. বেক একজন চার্চ সদস্য। তিনিও বাগবোর ব্যাপারে ধর্মকে টেনে এনেছেন। গত সপ্তাহে বাগবোর ভাগ্য যখন অনিশ্চিত তখন বারাক ওবামার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা জানি আমাদের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট ওয়াতারাই হলেন আসল মানুষ।
আইভরি কোস্ট দেশটির উত্তরে বিপুলসংখ্যক মুসলমান এবং দক্ষিণে অনেক ক্রিশ্চিয়ানের বসবাস। এ কারণে ধর্ম এখানে একটি ইস্যু হতে পারে। লঁরা বাগবো নিজেকে ক্রিশ্চিয়ান পদপ্রার্থী হিসেবে আইভরি কোস্টের ভেতরে ও বাইরের দেশে পরিচিত করে তুলেছিলেন। রিপোর্ট আছে, নভেম্বরের নির্বাচনের পর বাগবো ও তাঁর স্ত্রীকে ক্রিশ্চিয়ান পাস্তোররা বুঝিয়েছিলেন, একমাত্র ঈশ্বর তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেন, আর কেউ নয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে ঈষৎ সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
সিনেটরের এ আগ্রহ সম্পর্কে মুখপাত্র জেয়ার্ড ইয়ুং গত শুক্রবার বলেছেন, সিনেটর এবং আফ্রিকার এ নেতা একত্রিত হয়েছিলেন সিনেটরের বহির্বিশ্বে ভ্রমণকালে। বাগবো যখন ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে যোগদান করেছিলেন তখন সিনেটর ইনহোফে এই ব্রেকফাস্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
১৯৫৩ সাল থেকে প্রতিবছর এই ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট হয়ে থাকে। ফেলোশিপ নামে একটি গোপন ক্রিশ্চিয়ান সংগঠন এর তদারক করে থাকে। ২০১০ সালে সিটিজেন ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস ইন ওয়াশিংটন নামের সরকারের একটি ওয়াচডগ গ্রুপ প্রেসিডেন্ট ওবামা ও কংগ্রেস নেতাদের এ অনুষ্ঠান এড়িয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা সেটা করেননি।
পরে শুক্রবার টেলিফোনে সিনেটর ইনহোফে বাগবো সম্পর্কে বলেছেন, 'আমরা দুজনই ক্রিশ্চিয়ান এটা ঠিক, তবে বিশ্বের অনেক মুসলমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।'
এরপর সিনেটর ইনহোফেকে জিজ্ঞেস করা হয়, কোন মুসলমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আছে? তিনি প্রায় এক মিনিট চিন্তা করে দুজন আফ্রিকান প্রেসিডেন্টের নাম বলেন। তাঁর একজন হলেন তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জাকায়া কিকওতে। ইনহোফে বলেন, তিনি একজন মুসলমান এবং আমার সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
আইভরি কোস্টে বাগবোর সেনা সমর্থকরা নৃশংসতা চালিয়েছে, এমন অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আমি এটা বিশ্বাস করি না। আপনি যদি ওই মানুষগুলো সম্পর্কে জানেন এবং বুঝতে চেষ্টা করেন তাহলে নিজেই এর সমাধান পাবেন।'
রবার্টসন ১৯৮৮ সালে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্যাট রবার্টসন ক্রিশ্চিয়ান ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্ক বা সিবিএন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাগবোর একজন সমর্থনকারী। গত মঙ্গলবার তিনি সিবিএনের একটি প্রোগ্রামে বলেছেন, বাগবো ভোট প্রতারণার শিকার। তিনি বলেছেন, 'জাতিসংঘ বলেছে যে অন্য লোক জয়লাভ করেছে। ভালো কথা। সেটা হয়তো হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, এ দেশটি কি এখন একজন ক্রিশ্চিয়ান প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে মুসলমানদের হাতে চলে যাবে? আরো একটি মুসলমান দেশ মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে শরিয়াহ আইনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে।'
ফঙ্ নিউজের মি. বেক একজন চার্চ সদস্য। তিনিও বাগবোর ব্যাপারে ধর্মকে টেনে এনেছেন। গত সপ্তাহে বাগবোর ভাগ্য যখন অনিশ্চিত তখন বারাক ওবামার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা জানি আমাদের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট ওয়াতারাই হলেন আসল মানুষ।
আইভরি কোস্ট দেশটির উত্তরে বিপুলসংখ্যক মুসলমান এবং দক্ষিণে অনেক ক্রিশ্চিয়ানের বসবাস। এ কারণে ধর্ম এখানে একটি ইস্যু হতে পারে। লঁরা বাগবো নিজেকে ক্রিশ্চিয়ান পদপ্রার্থী হিসেবে আইভরি কোস্টের ভেতরে ও বাইরের দেশে পরিচিত করে তুলেছিলেন। রিপোর্ট আছে, নভেম্বরের নির্বাচনের পর বাগবো ও তাঁর স্ত্রীকে ক্রিশ্চিয়ান পাস্তোররা বুঝিয়েছিলেন, একমাত্র ঈশ্বর তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেন, আর কেউ নয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে ঈষৎ সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
No comments