ঘুষ-দুর্নীতির মহোৎসব-এভাবে দেশ চলতে পারে না
চারদিকে যেন ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাটের মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। এমন কোনো সরকারি বা আধাসরকারি সংস্থা নেই, যেখানে ঘুষ-দুর্নীতির রমরমা কারবার নেই। আর এগুলো থামানোর কিংবা দুর্নীতিবাজদের শাস্তিদানের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঘুষ-দুর্নীতি এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে।
শনিবার কালের কণ্ঠে ঢাকা ওয়াসা এবং ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানির (ডেসকো) নিয়োগ ও ঠিকাদারি নিয়ে যে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা পড়লে যে কেউ এসব প্রতিষ্ঠানের ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপকতা কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে রাজধানীর খালগুলোতে থাকা অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, খাল খনন ও পাড় বাঁধাইয়ের জন্য সরকার সাড়ে আট কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেল সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার কাজ শতাধিক ঠিকাদারের মধ্যে ক্ষুদ্র প্যাকেজের মাধ্যমে প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করে। এ জন্য পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। ওয়াসার দুজন কর্মকর্তা প্রতিটি প্যাকেজের জন্য দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আদায় করেন। তাঁদের বোঝানো হয়, আড়াই লাখ টাকা ঘুষের পর এক লাখ টাকার কাজ করলেই চলবে। এর পরও ঠিকাদারদের এক থেকে সোয়া লাখ টাকা লাভ থাকবে। শাবাশ বাংলাদেশ! সরকার জনগণের পাঁচ লাখ টাকা খরচ করবে, আর জনগণ কাজ পাবে এক লাখ টাকার। এর ফলে জলাবদ্ধতা দূর হবে কি? ঘরের ভেতর হাঁটুপানি নিয়ে মানুষ বসবাস করবে কিংবা রাস্তায় মানুষ সাঁতার কাটলেই তাদের কি কিছু যায়-আসে? এক কর্মকর্তা সেই টাকায় উত্তরায় ১০ তলা ভবন বানাচ্ছেন। আরেকটি সেবাদানকারী সংস্থা হচ্ছে ডেসকো। সেখানে কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। একেকটি পদের বিপরীতে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। এর আগে রেলওয়ের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে অনেক হৈচৈ হয়েছে। এগুলোর প্রায় সবই দুর্ঘটনাবশত ফাঁস হয়ে যায়, খবরের কাগজে শিরোনাম হয়। প্রকৃত চিত্র তো আরো ভয়াবহ। কোনো দেশ বা সমাজে যখন 'চেক অ্যান্ড ব্যালান্স' না থাকে কিংবা নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তখন অবস্থার দিন দিন অবনতিই হয়। বাংলাদেশেও তা-ই ঘটেছে। সংস্থাগুলোর প্রশাসনে কোনো চেক অ্যান্ড ব্যালান্স নেই। প্রশাসনে দলীয়করণ করা হয়। আর দলীয় পাণ্ডাদের তো কাউকে তোয়াক্কা করার প্রয়োজন হয় না। দুর্নীতি ও লুটপাট তখন হয়ে পড়ে অবশ্যম্ভাবী এবং ফ্রি-স্টাইল। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন ছিল, সেসব নিয়ন্ত্রণও নেই। নিধিরাম সর্দার হিসেবে যে দুদক আছে, সেটি রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়া এ পর্যন্ত তেমন কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কি? ১০ তলা ভবন নির্মাণ করছেন যে কর্মকর্তা, তাঁর আয়-ব্যয়ের হিসাবটা আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর মিলিয়ে দেখতে পারত। কিন্তু এমন কোনো দৃষ্টান্ত আমরা নিকট অতীতে দেখেছি বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় দুর্নীতিবাজরা ফ্রি-স্টাইল হবে না কেন?
মহাজোট ক্ষমতায় এসে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বেমালুম ভুলে গেছে। আওয়ামী লীগ সম্ভবত তাদের বিগত নির্বাচনের ইশতেহার আগামী নির্বাচনে পুনরায় ব্যবহারের জন্য যত্ন করে তুলে রেখেছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তাদের আর কী-ই বা করার আছে। ওয়াসার কল্যাণে আমরা জলাবদ্ধতায় ভুগব, ময়লা পানি পান করব। সিস্টেম লসের নামে চুরির মাসুল দেব অতিরিক্ত দামে বিদ্যুৎ কিনে। কিন্তু এর কি কোনো শেষ নেই? বর্তমান সরকারকে বিষয়গুলো ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে রাজধানীর খালগুলোতে থাকা অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, খাল খনন ও পাড় বাঁধাইয়ের জন্য সরকার সাড়ে আট কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেল সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার কাজ শতাধিক ঠিকাদারের মধ্যে ক্ষুদ্র প্যাকেজের মাধ্যমে প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করে। এ জন্য পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। ওয়াসার দুজন কর্মকর্তা প্রতিটি প্যাকেজের জন্য দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আদায় করেন। তাঁদের বোঝানো হয়, আড়াই লাখ টাকা ঘুষের পর এক লাখ টাকার কাজ করলেই চলবে। এর পরও ঠিকাদারদের এক থেকে সোয়া লাখ টাকা লাভ থাকবে। শাবাশ বাংলাদেশ! সরকার জনগণের পাঁচ লাখ টাকা খরচ করবে, আর জনগণ কাজ পাবে এক লাখ টাকার। এর ফলে জলাবদ্ধতা দূর হবে কি? ঘরের ভেতর হাঁটুপানি নিয়ে মানুষ বসবাস করবে কিংবা রাস্তায় মানুষ সাঁতার কাটলেই তাদের কি কিছু যায়-আসে? এক কর্মকর্তা সেই টাকায় উত্তরায় ১০ তলা ভবন বানাচ্ছেন। আরেকটি সেবাদানকারী সংস্থা হচ্ছে ডেসকো। সেখানে কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। একেকটি পদের বিপরীতে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। এর আগে রেলওয়ের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে অনেক হৈচৈ হয়েছে। এগুলোর প্রায় সবই দুর্ঘটনাবশত ফাঁস হয়ে যায়, খবরের কাগজে শিরোনাম হয়। প্রকৃত চিত্র তো আরো ভয়াবহ। কোনো দেশ বা সমাজে যখন 'চেক অ্যান্ড ব্যালান্স' না থাকে কিংবা নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তখন অবস্থার দিন দিন অবনতিই হয়। বাংলাদেশেও তা-ই ঘটেছে। সংস্থাগুলোর প্রশাসনে কোনো চেক অ্যান্ড ব্যালান্স নেই। প্রশাসনে দলীয়করণ করা হয়। আর দলীয় পাণ্ডাদের তো কাউকে তোয়াক্কা করার প্রয়োজন হয় না। দুর্নীতি ও লুটপাট তখন হয়ে পড়ে অবশ্যম্ভাবী এবং ফ্রি-স্টাইল। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন ছিল, সেসব নিয়ন্ত্রণও নেই। নিধিরাম সর্দার হিসেবে যে দুদক আছে, সেটি রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়া এ পর্যন্ত তেমন কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কি? ১০ তলা ভবন নির্মাণ করছেন যে কর্মকর্তা, তাঁর আয়-ব্যয়ের হিসাবটা আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর মিলিয়ে দেখতে পারত। কিন্তু এমন কোনো দৃষ্টান্ত আমরা নিকট অতীতে দেখেছি বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় দুর্নীতিবাজরা ফ্রি-স্টাইল হবে না কেন?
মহাজোট ক্ষমতায় এসে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বেমালুম ভুলে গেছে। আওয়ামী লীগ সম্ভবত তাদের বিগত নির্বাচনের ইশতেহার আগামী নির্বাচনে পুনরায় ব্যবহারের জন্য যত্ন করে তুলে রেখেছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তাদের আর কী-ই বা করার আছে। ওয়াসার কল্যাণে আমরা জলাবদ্ধতায় ভুগব, ময়লা পানি পান করব। সিস্টেম লসের নামে চুরির মাসুল দেব অতিরিক্ত দামে বিদ্যুৎ কিনে। কিন্তু এর কি কোনো শেষ নেই? বর্তমান সরকারকে বিষয়গুলো ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
No comments