নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার আছে by এবনে গোলাম সামাদ
গণতন্ত্র কেবল মুক্তভাবে ভোট প্রদানে সীমিত নয়। গণতন্ত্রে থাকতে হয় নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার। দেশের সরকার কী করছে, আর কেন করছে—যে কোনো খাঁটি গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষ থেকে তা অবহিত রাখতে হয় নির্বাচকমণ্ডলীকে। কারণ গণতন্ত্র একটা মুক্ত শাসন ব্যবস্থা।
এখানে গোপনীয়তা বাঞ্ছনীয় নয়। তবে রাষ্ট্র এমন একটি প্রতিষ্ঠান যে এর কিছু কিছু কার্যকলাপে গোপনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কিন্তু এই কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া আর সব ক্ষেত্রে যা হচ্ছে অথবা যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে সম্বন্ধে দেশবাসীকে অবহিত করা একটা দেশে গণতন্ত্রী সরকারের আবশ্যক কর্তব্য। এক সময় মনে করা হতো, রাষ্ট্রের অংশ হলো তিনটি : আইন পরিষদ (খবমরংষধঃঁত্ব), শাসন বিভাগ (ঊীবপঁঃরাব) এবং বিচার বিভাগ (ঔঁফরপরধত্ু)। কিন্তু এর সঙ্গে এখন অনেক রাষ্ট্রচিন্তাবিদ যোগ করতে চান আরেকটি অংশকে। এই চতুর্থ অংশ হলো নির্বাচকমণ্ডলী (ঊষবপঃড়ত্ধঃব), যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। নির্বাচকমণ্ডলীর কথা বিবেচনায় না নিলে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বরূপ আমাদের কাছে সুস্পষ্ট হতে চায় না। নির্বাচকমণ্ডলীর রাজনৈতিক চেতনার ওপর নির্ভর করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সফলতা। আর তাই নির্বাচকমণ্ডলীকে জ্ঞাত থাকতে হয় সরকারের কার্যকলাপ ও নীতি সম্পর্কে। গণতান্ত্রিক সরকারের একটি স্বীকৃত ভিত্তি হলো : নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার। নির্বাচকমণ্ডলীকে অন্ধকারে রেখে গণতান্ত্রিক সরকার সাফল্য পেতে পারে না। গণতন্ত্র হয়ে ওঠে মেকি গণতন্ত্র। আমাদের দেশের বর্তমান সরকার চাচ্ছে না নির্বাচকমণ্ডলীকে তার নীতি ও কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত রাখতে। ফলে গণতন্ত্র হয়ে উঠতে চাচ্ছে মেকি গণতন্ত্র। দেশের মানুষ এখন অনেক কিছু জানতে চাচ্ছে, কিন্তু পারছে না জানতে; সরকারের অনুসৃত নীরবতা ও গোপনীয়তার কারণে। সরকার পারছে না দেশবাসীকে বিশ্বাস করতে। পক্ষান্তরে দেশবাসী পারছে না সরকারের প্রতি আস্থাশীল থাকতে। যার পরিণতিতে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট। সবচেয়ে যা সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হলো সরকারের পররাষ্ট্রনীতি। বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। এদেশের মানুষের মনে জমে আছে ভারতীয় আধিপত্যের ভীতি। ভারতের সঙ্গে অতি বন্ধুত্ব করতে গিয়ে ঘটেছিল ১৯৭৪-এ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। সীমান্ত হাটের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়ে গিয়েছিল এদেশ থেকে ধান-চাল। দেশে ঘটেছিল ভয়াবহ খাদ্যাভাব। আবার হতে যাচ্ছে অবাধ সীমান্ত বাণিজ্য। এর ফল কী দাঁড়াবে তার কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষভাবে অনুমানেরই বিষয়। ভারতভীতির আরও কারণ আছে। ভারত সরকার ভাবছে, বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রেখে উত্তর-পূর্ব ভারতে যে স্বাধীনতার ইচ্ছা প্রবল হয়ে উঠেছে, তাকে প্রশমিত করবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বর্তমান অবস্থা ভারত-বাংলাদেশ নীতিকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে। শোনা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার নাকি ভারত সরকারের সঙ্গে একটা গোপন চুক্তি করেছে। যার ফলে প্রয়োজনে ভারত সরকার উত্তর-পূর্ব ভারতের যে কোনো অংশে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পাঠাতে পারবে সৈন্য, রসদ ও সামরিক সাজ-সরঞ্জাম। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে মোটেও নিশ্চিত নই। হতে পারে যা শুনছি তা কেবলই গুজব; কিন্তু যদি এরকম কোনো গোপন চুক্তি ভারত সরকারের সঙ্গে হয়েই থাকে, তবে বাংলাদেশে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে গেরিলা যোদ্ধারা এসে যুদ্ধ শুরু করবে। আর যার পরিণতিতে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে একটা সমর অঞ্চল। আমরা তাই বিষয়টি নিয়ে ভাবিত না হয়ে পারি না। আসামের উলফা নেতা অরবিন্দ রাজখোয়াকে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার তুলে দিয়েছে ভারত সরকারের হাতে। এটা কেন করা হয়েছে, আমরা তা জানি না। কিন্তু এতে উলফারা যে খুশি হতে পেরেছে তা নয়। শোনা যাচ্ছে, অরবিন্দ রাজখোয়া, শশধর চৌধুরী ও চিত্রবন হাজরীকাসহ বেশ কয়েকজন প্রথম শ্রেণীর উলফা নেতা চাচ্ছেন দিল্লির সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসতে। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। আর এ কারণেই নাকি বাংলাদেশ সরকার রাজখোয়াকে যেতে দিয়েছে আসামে। কিন্তু অন্যদিকে আলোচনায় বসতে রাজি নয় উলফা কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া ও তার সহযোগীরা। পরেশ বড়ুয়া চাচ্ছেন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আসামকে একটি পুরাপুরি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত করতে। পরেশ বড়ুয়াকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তি আলোচনা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। জনশ্রুতি, পরেশ বড়ুয়া আসামে নেই। তিনি আছেন চীনে। আসামকে নিয়ে একটা চীন-ভারত সংঘাত শুরু হওয়া অসম্ভব নয়। ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো গোপন সামরিক চুক্তি হয়ে থাকলে সেটা চীনকে নিশ্চয়ই ক্ষুব্ধ করছে। আমরা গিয়ে পড়ছি চীন-ভারত সংঘাতের মধ্যেও।
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব নিহত হওয়ার পর হাসিনা গিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। সেখানে তিনি থাকেন প্রায় ছয় বছর। হাসিনা স্বীকার করেছেন, মায়ের মতোই ভারত দিয়েছিল আশ্রয় তাকে। তিনি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু এই কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কোনো গোপন চুক্তি করা যুক্তিযুক্ত বলে গ্রহণ করা যায় না। ভারতের প্রতি তার ব্যক্তিগত আবেগ যত প্রবলই হোক, বাংলাদেশ ও ভারতের স্বার্থ পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একসূত্রে গাঁথা নয়। বাংলাদেশের নীতি হওয়া উচিত সশস্ত্র নিরপেক্ষতা। চীন-ভারত দ্বন্দ্বের মধ্যে জড়িয়ে পড়া নয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের নীতির ফলে সেটাই যেন ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভাগ্যে। আমরা এ বিষয়ে ভাবিত হয়ে পড়ছি। ভারতের পাক্ষিক দেশ পত্রিকায় (১৭ জানুয়ারি, ২০১০) বলা হয়েছে—ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার বিভিন্ন কর্মসূচি ভারতের পক্ষে লাভজনক হয়েছে। যেমন—বাংলাদেশের মাটিতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘাঁটি ভেঙে দেয়া এবং ভারতকে বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদান। শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছে ভারতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা। বলা হচ্ছে, এবার শেখ হাসিনার ক্ষমতা লাভ ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সূচনা করছে এক নতুন অধ্যায়। আমরা এই নতুন অধ্যায়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাই। আমাদের এ বিষয়ে অবহিত করা হোক সংসদে আলোচনার মাধ্যমে। গণতন্ত্রে নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার আছে। আর তারা এটা জ্ঞাত হতে পারে নির্বাচিত পার্লামেন্টে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলে। কিন্তু এখনও তেমন কোনো আলোচনার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার নিয়ে। নির্বাচকমণ্ডলী আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে তাদের নির্বাচনী ওয়াদাকে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেসব ওয়াদা পূরণ না করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এখন দেশকে নিয়ে ফেলছে উলফা-ভারত সংঘাতের মধ্যে। দেশকে জড়িয়ে ফেলছে ভারত-চীন দ্বন্দ্বে। যেটা হতে দেয়া যায় না। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। এই নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ছিল, সে প্রশ্ন এখন তুলে আর লাভ নেই। কিন্তু একটা নির্বাচনই শেষ নির্বাচন নয়। দেশের রাজনীতির শেষ কথা নয়। ক্ষমতাসীন দলকে এই সহজ সত্যটা স্মরণে রাখতে হবে। নির্বাচকমণ্ডলীকে অবহেলা করা তাই হতে যাচ্ছে না সুবুদ্ধির কাজ। আজকের দিনে দেশবাসীকে চটিয়ে দেশ চালানো যায় না। জনমতকে পক্ষে নিয়ে চালাতে হয় দেশ।
হাসিনা এবার দিল্লিতে গিয়ে চুক্তি করে এসেছেন, ২০১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী একসঙ্গে উদ্যাপন করা হবে। আমরা জানি না, এর ফলে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হতে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষায় লিখেছেন। বাংলা আমাদেরও ভাষা। কিন্তু রবীন্দ্র রাজনৈতিক দর্শন আর আমাদের রাজনৈতিক দর্শন এক নয়। রবীন্দ্রনাথ স্বপ্ন দেখেছেন, বৈদিক মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক ভারত গড়তে। কিন্তু আমরা গড়েছি একটা পৃথক স্বাধীন বাংলাদেশ। যেরকম দেশ গড়ার কথা রবীন্দ্র ভাবনায় কোনোদিন স্থান পায়নি। ইংরেজি ভাষায় কথা বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। কিন্তু তাই বলে তারা শেক্সপিয়রকে ভাবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কবি হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষার কবি, কিন্তু তিনি আমাদের পৃথক রাষ্ট্রিক চেতনার কবি নন। একথা উপলব্ধির সময় এখন এসেছে।
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব নিহত হওয়ার পর হাসিনা গিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। সেখানে তিনি থাকেন প্রায় ছয় বছর। হাসিনা স্বীকার করেছেন, মায়ের মতোই ভারত দিয়েছিল আশ্রয় তাকে। তিনি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু এই কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কোনো গোপন চুক্তি করা যুক্তিযুক্ত বলে গ্রহণ করা যায় না। ভারতের প্রতি তার ব্যক্তিগত আবেগ যত প্রবলই হোক, বাংলাদেশ ও ভারতের স্বার্থ পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একসূত্রে গাঁথা নয়। বাংলাদেশের নীতি হওয়া উচিত সশস্ত্র নিরপেক্ষতা। চীন-ভারত দ্বন্দ্বের মধ্যে জড়িয়ে পড়া নয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের নীতির ফলে সেটাই যেন ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভাগ্যে। আমরা এ বিষয়ে ভাবিত হয়ে পড়ছি। ভারতের পাক্ষিক দেশ পত্রিকায় (১৭ জানুয়ারি, ২০১০) বলা হয়েছে—ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার বিভিন্ন কর্মসূচি ভারতের পক্ষে লাভজনক হয়েছে। যেমন—বাংলাদেশের মাটিতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘাঁটি ভেঙে দেয়া এবং ভারতকে বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদান। শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছে ভারতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা। বলা হচ্ছে, এবার শেখ হাসিনার ক্ষমতা লাভ ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সূচনা করছে এক নতুন অধ্যায়। আমরা এই নতুন অধ্যায়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাই। আমাদের এ বিষয়ে অবহিত করা হোক সংসদে আলোচনার মাধ্যমে। গণতন্ত্রে নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার আছে। আর তারা এটা জ্ঞাত হতে পারে নির্বাচিত পার্লামেন্টে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলে। কিন্তু এখনও তেমন কোনো আলোচনার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম নির্বাচকমণ্ডলীর জানার অধিকার নিয়ে। নির্বাচকমণ্ডলী আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে তাদের নির্বাচনী ওয়াদাকে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেসব ওয়াদা পূরণ না করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এখন দেশকে নিয়ে ফেলছে উলফা-ভারত সংঘাতের মধ্যে। দেশকে জড়িয়ে ফেলছে ভারত-চীন দ্বন্দ্বে। যেটা হতে দেয়া যায় না। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। এই নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ছিল, সে প্রশ্ন এখন তুলে আর লাভ নেই। কিন্তু একটা নির্বাচনই শেষ নির্বাচন নয়। দেশের রাজনীতির শেষ কথা নয়। ক্ষমতাসীন দলকে এই সহজ সত্যটা স্মরণে রাখতে হবে। নির্বাচকমণ্ডলীকে অবহেলা করা তাই হতে যাচ্ছে না সুবুদ্ধির কাজ। আজকের দিনে দেশবাসীকে চটিয়ে দেশ চালানো যায় না। জনমতকে পক্ষে নিয়ে চালাতে হয় দেশ।
হাসিনা এবার দিল্লিতে গিয়ে চুক্তি করে এসেছেন, ২০১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী একসঙ্গে উদ্যাপন করা হবে। আমরা জানি না, এর ফলে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হতে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষায় লিখেছেন। বাংলা আমাদেরও ভাষা। কিন্তু রবীন্দ্র রাজনৈতিক দর্শন আর আমাদের রাজনৈতিক দর্শন এক নয়। রবীন্দ্রনাথ স্বপ্ন দেখেছেন, বৈদিক মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক ভারত গড়তে। কিন্তু আমরা গড়েছি একটা পৃথক স্বাধীন বাংলাদেশ। যেরকম দেশ গড়ার কথা রবীন্দ্র ভাবনায় কোনোদিন স্থান পায়নি। ইংরেজি ভাষায় কথা বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। কিন্তু তাই বলে তারা শেক্সপিয়রকে ভাবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কবি হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষার কবি, কিন্তু তিনি আমাদের পৃথক রাষ্ট্রিক চেতনার কবি নন। একথা উপলব্ধির সময় এখন এসেছে।
No comments