সরকার আসলেই কি সংস্থাটি সচল রাখতে চায়?-বসে যাওয়া বিমান
একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ বিমান যে চলছে না, চলতে পারছে না, তা আমরা সম্পাদকীয় কলামে এরই মধ্যে কয়েকবার উল্লেখ করেছি। বিমান অব্যাহতভাবে সেই প্রমাণ রেখেই চলেছে। কিন্তু যাঁদের এ নিয়ে মাথাব্যথা হওয়ার কথা, তাঁরা যেন নির্বিকারভাবে বিষয়টি মেনে নিচ্ছেন। কেন?
যে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে লোকসান করে আসছিল, তা মাঝে দুই বছর লাভের মুখ দেখেছিল। তার একটি হিসাব বের হয়েছিল প্রথম আলো পত্রিকায়। বিমানের বর্তমান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, সে সময়ে আসলে লাভের পরিমাণ কত কম হয়েছিল তা প্রমাণে। ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি ও অদক্ষতার বিষয়টি তাঁরা আমলেই নিতে চাননি। এরপর হঠাৎ তাঁরা লোকসান কমাতে উদ্যোগী হলেন। তাঁদের এই ‘উদ্যোগ’ বিমানের শুধু সর্বনাশ নয়, মহা সর্বনাশ করেছে। বিমানের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যে কতটা অপেশাদার এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কত অদক্ষ, তার প্রমাণ আবার তাঁরা রাখলেন। লোকসান কমাতে তাঁরা যে সহজ পথটি বেছে নিলেন, তা হচ্ছে বিমানের টিকিটের দাম বাড়ানো। আর কোনো আগপিছ তাঁদের বিবেচনায় ছিল না। আর এমনভাবে ভাড়া বাড়ালেন, যার সঙ্গে একই রুটে চলাচল করে এমন অন্য এয়ারলাইনসের ভাড়ার কোনো মিলই নেই। টিকিটের দাম বাড়ানোর ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে ব্যাপকভাবে। তখন আবার টনক নড়েছে বিমান কর্তৃপক্ষের; আবার ভাড়া কমাতে শুরু করেছে তারা। ভাড়া বাড়ানোর এই অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে মাত্র দিন দশেকে, এক হিসাব অনুযায়ী, বিমানের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষের হটকারী সিদ্ধান্তের ফলে যে যাত্রীরা বিমানবিমুখ হলো, সে দায় কে নেবে?
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি বিমানের ব্যবস্থাপনাগত অদক্ষতা ও অপেশাদারির একটি দিক। এ রকম অসংখ্য অপেশাদারি কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্ত আর দুর্নীতিতে বিমান বসে গেছে। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংসদীয় কমিটি কিংবা পরিচালনা বোর্ডের বিরোধ তো ওপেন সিক্রেট। এসব দূর করতে না পারলে জাতীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটি মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল বিমানের বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট আবার চালু করা। এখন দেখা যাচ্ছে, ঢাকা-লন্ডন রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উড়োজাহাজের অভাবে। একের পর এক রুট বন্ধ হয়ে গেলে সংস্থাটি রাখার কী প্রয়োজন?
এসব কারণেই বিমানের ব্যবস্থাপনাকাঠামো বদলাতে হবে; সামরিক-বেসামরিক আমলা দিয়ে বিমানের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চলছে না, চলতে পারে না। বিশ্বের কোনো বাণিজ্যিক এয়ারলাইনস এভাবে চলে না। আমরা বিষয়টির প্রতি সরকারের মনোযোগ আনার ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ বিমানের বিষয়ে সরকার কানে যে তুলা দিয়ে রেখেছে, তা না সরানো পর্যন্ত কিছুতেই কিছু হবে বলে মনে হয় না।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি বিমানের ব্যবস্থাপনাগত অদক্ষতা ও অপেশাদারির একটি দিক। এ রকম অসংখ্য অপেশাদারি কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্ত আর দুর্নীতিতে বিমান বসে গেছে। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংসদীয় কমিটি কিংবা পরিচালনা বোর্ডের বিরোধ তো ওপেন সিক্রেট। এসব দূর করতে না পারলে জাতীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটি মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল বিমানের বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট আবার চালু করা। এখন দেখা যাচ্ছে, ঢাকা-লন্ডন রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উড়োজাহাজের অভাবে। একের পর এক রুট বন্ধ হয়ে গেলে সংস্থাটি রাখার কী প্রয়োজন?
এসব কারণেই বিমানের ব্যবস্থাপনাকাঠামো বদলাতে হবে; সামরিক-বেসামরিক আমলা দিয়ে বিমানের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চলছে না, চলতে পারে না। বিশ্বের কোনো বাণিজ্যিক এয়ারলাইনস এভাবে চলে না। আমরা বিষয়টির প্রতি সরকারের মনোযোগ আনার ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ বিমানের বিষয়ে সরকার কানে যে তুলা দিয়ে রেখেছে, তা না সরানো পর্যন্ত কিছুতেই কিছু হবে বলে মনে হয় না।
No comments