সমন্বিত ব্যবস্থা নেওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জরুরি দায়িত্ব-দূতাবাসে এমআরপি-জটিলতা

সমস্যাটা ছোটই, কিন্তু ভোগান্তি বিরাট। শনিবারের প্রথম আলোর একটি সংবাদের শিরোনামই সব বলে দিচ্ছে: বেশির ভাগ দূতাবাসে এমআরপি চালু হয়নি, ভোগান্তিতে প্রবাসীরা। এই প্রবাসীদের মধ্যে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, ভাগ্যসন্ধানী অভিবাসী সবাই আছেন। প্রবাসে পাসপোর্ট আর ভিসাই তাঁদের সম্বল।


কিন্তু বেশির ভাগ দূতাবাসে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট চালু না হওয়ায় তাঁদের এই ‘সম্বল’ নিরর্থক হয়ে দাঁড়ায়। নাগরিক মাত্রই সরকারি সেবা পাওয়ার অধিকারী, প্রবাসে তা না পাওয়া নাগরিকের বঞ্চনা যেমন, তেমনি তা সরকারের বিরাট গাফিলতি।
এমআরপির প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১১ সালে। মূলত আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতায়সরকার তড়িঘড়ি করে এ নীতি নিলেও আনুষঙ্গিক আয়োজন করতে ব্যর্থহয়। সে সময়ের পর করা নতুন সব পাসপোর্ট যন্ত্রে পাঠযোগ্য করাও বাধ্যতামূলক হয়। একই সঙ্গে ভিসা ও অন্যান্য বিষয়েরও ডিজিটালকরণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ৪৬ বিদেশি মিশনের ২৪টিতেই এমআরপি চালু হয়নি।
দায়িত্বটা মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাদের দিক থেকে ব্যাখ্যার অভাব নেই। প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদে ওই মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, সব কটি মিশনের নিজস্ব ভবন না থাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ-সুবিধাও থাকে না। কিন্তু এমআরপি চালু করতে হলে ইন্টারনেটের নিবিড় সংযোগ প্রয়োজন। এটাই কি এমআরপি চালু করার বড় বাধা? দেশের মতো প্রবাসেও বিদ্যুতের অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিতীয়ত, এমআরপি চালুর সময়ই এই সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কেন ভাবেননি? সফল পরিকল্পনার সামর্থ্য যাঁদের নেই, কীভাবে তাঁরা বিদেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভরসাস্থল হবেন? কীভাবেই বা বিদেশিদের সঙ্গে লেনদেনে আস্থা কাড়বেন? আমাদের সার্বিক দায়িত্বহীনতার এই ‘আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী’ উপেক্ষার বিষয় হতে পারে না।
আশা করি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত সমাধানের বন্দোবস্ত করবে। যে সমস্যায় নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়, সেই সমস্যা জরুরি প্রতিকার দাবি করে।

No comments

Powered by Blogger.