বিচ্ছিন্ন অঞ্চল-বাঞ্ছারামপুরবাসীর বঞ্চনা by মোঃ সিরাজুল ইসলাম
এখন প্রশ্ন হলো, এমনি একটি ভৌগোলিক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হলো কী করে? জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে নবীনগর বাঞ্ছারামপুর মিলে এক থানা ছিল মেঘনা-তিতাস বিধৌত বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আমার জন্ম, এখানেই বড় হয়েছি। এখানকার ভালো কিছু দেখলে ভালো লাগে, মন্দ কিছু দেখলে অন্তর বেদনায় নীল হয়।
সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাই যখন দেখি একবিংশ শতাব্দীতেও বাঞ্ছারামপুরের অসহায় মানুষগুলো প্রয়োজনের তাগিদে সামান্য কাজে পরচা-নকশা জোগাড় করতে, মামলা-মোকদ্দমায় হাজির হতে, সাক্ষ্য দিতে, চাকরির ইন্টারভিউ দিতে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জেলা সদরে বিভিন্ন সভায় উপস্থিত হতে হাবুডুবু খেয়ে এক-দেড়শ' কিলোমিটারের ঘোরপথে পাড়ি দিতে হয়। নদীপথে গেলে ৫-৬ ঘণ্টা, স্থলপথে যেতে হলে নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, দুটি জেলার ৭০-৭৫ কিলোমিটার অথবা কুমিল্লা জেলার হোমনা, মুরাদনগর উপজেলা পার হয়ে তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর। একদিকে সময়ের অপচয়, অন্যদিকে অন্য উপজেলাবাসীর চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি অর্থ ব্যয়। দিনাদিন কাজ সেরে ফিরে আসা সম্ভব হয় না। অবিশ্বাস্য বিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক অবস্থান। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে কয়েকটি জেলায় চাকরি করেছি। ভোলার মনপুরাসহ চরাঞ্চলের দু'একটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা ছাড়া সমতল ভূমির অন্য কোনো জেলা সদরের সঙ্গে কোনো উপজেলার যোগাযোগ বা বিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক অবস্থান বাঞ্ছারামপুরের মতো নেই। জেলা সদরের চিকিৎসাসেবা প্রায় শূন্য। কোনো অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে সদরে আসতে হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোতেও জেলা সদরে বাঞ্ছারামপুরের কোনো ভূমিকা নেই। সবসময় অবহেলিত নামকাওয়াস্তে দু'একজনের নাম রাখা হয়। শিক্ষা-দীক্ষা, খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষ্টি-কালচারে যথেষ্ট অগ্রসর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্য উপজেলার যথা (সদর ছাড়া) আশুগঞ্জ, সরাইল, কসবা, নাসিরনগর, বিজয়নগর, নবীনগর উপজেলার লোকজন দিনাদিন সব কাজ সেরে সদর থেকে ফিরে আসতে পারে। বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামের কথা নাইবা বললাম। যেতে-আসতে ৭০০ কিলোমিটার পথ। অথচ বাঞ্ছারামপুরের লোকজনের চলাচল ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-দীক্ষা, চিকিৎসাসেবা, কৃষ্টি-কালচার, আত্মীয়তা সবই নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ বা রাজধানী ঢাকার সঙ্গে। নরসিংদী যেতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র আধঘণ্টার পথ। বিভাগীয় সদর ঢাকা মহানগরী মাত্র ৫০ কিলোমিটারের পথ।
আমি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা দিতে ১৯৫৬ সালে প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে যাই। অতঃপর কলেজে অধ্যাপনা করার সময় ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জেলা সদরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করার জন্য ১৫ বছর পর দ্বিতীয়বার সদরে আসি। বাঞ্ছারামপুরের সাধারণ মানুষজন কেউ জেলা সদরে আসে না। আসার প্রয়োজন হয় না। শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ মানুষ জেলা সদরে কখনো আসে না।
এখন প্রশ্ন হলো, এমনি একটি ভৌগোলিক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হলো কী করে? জানা যায় ব্রিটিশ আমলে নবীনগর-বাঞ্ছারামপুর মিলে এক থানা ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদ আ ক ম জাকারিয়ার (সাবেক সিএসপি ও সচিব) মতে, ১৯১০ সালে বাঞ্ছারামপুর আলাদা পুলিশ স্টেশন হয়। কেউ কেউ বলেন, ১৯২৫ সালে বাঞ্ছারামপুর নবীনগর থেকে আলাদা হয়ে পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তখন এ অঞ্চলে নৌকা ছাড়া বিকল্প কোনো যানবাহন ছিল না। বিকল্প সৃষ্টিকর্তার দান পদযুগল। গয়না নৌকা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে হতো। সঙ্গে থাকত দু'দিন চলে এমন পরিমাণ চিড়া, মুড়ি, গুড়। মেঘনা নদী ছিল ভয়ঙ্কর। প্রমত্ত সর্বনাশা মেঘনা। কাছের হলেও মেঘনা পাড়ি দিয়ে নরসিংদী বা নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত সহজ ছিল না। তাই হয়তো বাঞ্ছারামপুর-নবীনগরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। আজকের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। মেঘনার সে ভয়ঙ্কর রূপ আর নেই। স্পিডবোটে ৩০ মিনিটে নরসিংদী। নারায়ণগঞ্জ যেতে ১ ঘণ্টা। স্পিডবোটে নরসিংদী যেতে ১০০ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা, খরচ হয় ৬০০ টাকা।
বাঞ্ছারামপুরের রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়টি কখনও গভীরভাবে বিবেচনায় এনেছেন বলে আমার মনে হয় না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেমন আমাদের নিজেদের যোগ্যতার বলে টিকে থাকতে হয়_ তেমনি অন্য কোনো জেলার সঙ্গে সংযুক্তি ঘটলে সেখানেও তো যোগ্যতার বলেই আমরা আমাদের যোগ্যতম স্থানটি দখল করে টিকে থাকব। জাতীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষা-দীক্ষা খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সঙ্গীত, কৃষ্টি-কালচার বাঞ্ছারামপুরবাসীর যে অবদান তা তাদের যোগ্যতার বলেই অর্জন হয়েছে। তাহলে বাঞ্ছারামপুরবাসী কেন যুগ যুগ ধরে জিম্মি হয়ে থাকবে?
প্রশাসনিক ইউনিট সৃষ্টি করা হয় মানুষের কাছে সহজে সেবা পেঁৗছে দেওয়ার জন্য। তাই তো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দুটি বিভাগ বর্তমানে সাতটি হয়েছে। ১৭টি জেলা ৬৪টি জেলায় ভাগ হয়েছে। উপজেলা হয়েছে প্রায় ৪৮৬টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি উপজেলা এখন ৯টি। এই তো আমাদের বাঞ্ছারামপুরের কাছেই হোমনা ও দাউদকান্দি ভেঙে নতুন দুটি উপজেলা তিতাস ও মেঘনা স্বদম্ভে তাদের জনগণের কাছে সহজে সেবা পেঁৗছে দিচ্ছে। আমাদের বেলায় বাধা কোথায়। নরসিংদী সবচেয়ে কাছে ও সুযোগ-সুবিধা সবই সহজে পাওয়া যাবে। এর জন্য প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। শতাব্দীর বঞ্চনার হিসাবটি ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে, তাহলেই বাঞ্ছারামপুরের প্রকৃত কল্যাণের নতুন বাতাবরণ খুঁজে পাওয়া যাবে। মানুষ সত্যিকারের কল্যাণের পথ খুঁজে পাবে, সাপ মোচন ঘটবে। ছেলেবেলায় সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লিখতাম জেলা ত্রিপুরা, অতঃপর ১৯৫৮ সালের পর কুমিল্লা, বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এতে কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়নি।
শুরুতেই বলেছি, বাঞ্ছারামপুর আমার বড় ভালো লাগে। এর প্রতিটি ধূলিকণা, কাদামাটি, তরুলতা, পশুপাখি সব আমার অতি প্রিয়। এখানে জন্মেছি, এখানেই মরতে চাই, শেষ শয়ানও যেন এখানে হয়।
সবকিছুর শেষে শুধু এটুকুই বলব, অশুভ লগ্নে বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সমবেত চেষ্টায় বা কোনো মহৎ প্রাণের মহান প্রচেষ্টায় তার যেন অবসান হয়। নবদিগন্তের যেন শুভ সূচনা হয়। এ ধরাধাম থেকে শেষ বিদায় নেওয়ার আগে শত বছরের বঞ্চনার অবহেলার ইতিটুকু যেন দেখে যাওয়ার সুযোগ পাই এটুকু প্রার্থনা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। তাহলেই কেবল বাঞ্ছারামপুরবাসীর প্রকৃত কল্যাণ হবে, সময়ের অপচয় হবে, অর্থের অপচয় থেকে মুক্তি পাবে। জেলা সদরে সুযোগ-সুবিধা সহজলভ্য হবে, যোগাযোগ নিবিড় হবে।
মোঃ সিরাজুল ইসলাম : চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, বাঞ্ছারামপুর
রাজনৈতিক দলগুলোতেও জেলা সদরে বাঞ্ছারামপুরের কোনো ভূমিকা নেই। সবসময় অবহেলিত নামকাওয়াস্তে দু'একজনের নাম রাখা হয়। শিক্ষা-দীক্ষা, খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষ্টি-কালচারে যথেষ্ট অগ্রসর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্য উপজেলার যথা (সদর ছাড়া) আশুগঞ্জ, সরাইল, কসবা, নাসিরনগর, বিজয়নগর, নবীনগর উপজেলার লোকজন দিনাদিন সব কাজ সেরে সদর থেকে ফিরে আসতে পারে। বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামের কথা নাইবা বললাম। যেতে-আসতে ৭০০ কিলোমিটার পথ। অথচ বাঞ্ছারামপুরের লোকজনের চলাচল ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-দীক্ষা, চিকিৎসাসেবা, কৃষ্টি-কালচার, আত্মীয়তা সবই নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ বা রাজধানী ঢাকার সঙ্গে। নরসিংদী যেতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র আধঘণ্টার পথ। বিভাগীয় সদর ঢাকা মহানগরী মাত্র ৫০ কিলোমিটারের পথ।
আমি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা দিতে ১৯৫৬ সালে প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে যাই। অতঃপর কলেজে অধ্যাপনা করার সময় ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জেলা সদরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করার জন্য ১৫ বছর পর দ্বিতীয়বার সদরে আসি। বাঞ্ছারামপুরের সাধারণ মানুষজন কেউ জেলা সদরে আসে না। আসার প্রয়োজন হয় না। শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ মানুষ জেলা সদরে কখনো আসে না।
এখন প্রশ্ন হলো, এমনি একটি ভৌগোলিক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হলো কী করে? জানা যায় ব্রিটিশ আমলে নবীনগর-বাঞ্ছারামপুর মিলে এক থানা ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদ আ ক ম জাকারিয়ার (সাবেক সিএসপি ও সচিব) মতে, ১৯১০ সালে বাঞ্ছারামপুর আলাদা পুলিশ স্টেশন হয়। কেউ কেউ বলেন, ১৯২৫ সালে বাঞ্ছারামপুর নবীনগর থেকে আলাদা হয়ে পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তখন এ অঞ্চলে নৌকা ছাড়া বিকল্প কোনো যানবাহন ছিল না। বিকল্প সৃষ্টিকর্তার দান পদযুগল। গয়না নৌকা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে হতো। সঙ্গে থাকত দু'দিন চলে এমন পরিমাণ চিড়া, মুড়ি, গুড়। মেঘনা নদী ছিল ভয়ঙ্কর। প্রমত্ত সর্বনাশা মেঘনা। কাছের হলেও মেঘনা পাড়ি দিয়ে নরসিংদী বা নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত সহজ ছিল না। তাই হয়তো বাঞ্ছারামপুর-নবীনগরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। আজকের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। মেঘনার সে ভয়ঙ্কর রূপ আর নেই। স্পিডবোটে ৩০ মিনিটে নরসিংদী। নারায়ণগঞ্জ যেতে ১ ঘণ্টা। স্পিডবোটে নরসিংদী যেতে ১০০ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা, খরচ হয় ৬০০ টাকা।
বাঞ্ছারামপুরের রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়টি কখনও গভীরভাবে বিবেচনায় এনেছেন বলে আমার মনে হয় না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেমন আমাদের নিজেদের যোগ্যতার বলে টিকে থাকতে হয়_ তেমনি অন্য কোনো জেলার সঙ্গে সংযুক্তি ঘটলে সেখানেও তো যোগ্যতার বলেই আমরা আমাদের যোগ্যতম স্থানটি দখল করে টিকে থাকব। জাতীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষা-দীক্ষা খেলাধুলা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সঙ্গীত, কৃষ্টি-কালচার বাঞ্ছারামপুরবাসীর যে অবদান তা তাদের যোগ্যতার বলেই অর্জন হয়েছে। তাহলে বাঞ্ছারামপুরবাসী কেন যুগ যুগ ধরে জিম্মি হয়ে থাকবে?
প্রশাসনিক ইউনিট সৃষ্টি করা হয় মানুষের কাছে সহজে সেবা পেঁৗছে দেওয়ার জন্য। তাই তো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দুটি বিভাগ বর্তমানে সাতটি হয়েছে। ১৭টি জেলা ৬৪টি জেলায় ভাগ হয়েছে। উপজেলা হয়েছে প্রায় ৪৮৬টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি উপজেলা এখন ৯টি। এই তো আমাদের বাঞ্ছারামপুরের কাছেই হোমনা ও দাউদকান্দি ভেঙে নতুন দুটি উপজেলা তিতাস ও মেঘনা স্বদম্ভে তাদের জনগণের কাছে সহজে সেবা পেঁৗছে দিচ্ছে। আমাদের বেলায় বাধা কোথায়। নরসিংদী সবচেয়ে কাছে ও সুযোগ-সুবিধা সবই সহজে পাওয়া যাবে। এর জন্য প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। শতাব্দীর বঞ্চনার হিসাবটি ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে, তাহলেই বাঞ্ছারামপুরের প্রকৃত কল্যাণের নতুন বাতাবরণ খুঁজে পাওয়া যাবে। মানুষ সত্যিকারের কল্যাণের পথ খুঁজে পাবে, সাপ মোচন ঘটবে। ছেলেবেলায় সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লিখতাম জেলা ত্রিপুরা, অতঃপর ১৯৫৮ সালের পর কুমিল্লা, বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এতে কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়নি।
শুরুতেই বলেছি, বাঞ্ছারামপুর আমার বড় ভালো লাগে। এর প্রতিটি ধূলিকণা, কাদামাটি, তরুলতা, পশুপাখি সব আমার অতি প্রিয়। এখানে জন্মেছি, এখানেই মরতে চাই, শেষ শয়ানও যেন এখানে হয়।
সবকিছুর শেষে শুধু এটুকুই বলব, অশুভ লগ্নে বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সমবেত চেষ্টায় বা কোনো মহৎ প্রাণের মহান প্রচেষ্টায় তার যেন অবসান হয়। নবদিগন্তের যেন শুভ সূচনা হয়। এ ধরাধাম থেকে শেষ বিদায় নেওয়ার আগে শত বছরের বঞ্চনার অবহেলার ইতিটুকু যেন দেখে যাওয়ার সুযোগ পাই এটুকু প্রার্থনা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। তাহলেই কেবল বাঞ্ছারামপুরবাসীর প্রকৃত কল্যাণ হবে, সময়ের অপচয় হবে, অর্থের অপচয় থেকে মুক্তি পাবে। জেলা সদরে সুযোগ-সুবিধা সহজলভ্য হবে, যোগাযোগ নিবিড় হবে।
মোঃ সিরাজুল ইসলাম : চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, বাঞ্ছারামপুর
No comments