অবরুদ্ধ ঢাকায় হরতালের আবহ অন্তহীন দুর্ভোগ
জোড়ায় জোড়ায় অসংখ্য চোখ। সবার চাহনিই উদ্বেগমাখা। ফাঁকা সড়কে যত দূর দৃষ্টি যায়, চোখগুলো কেবল একটা জিনিসই খুঁজছে- গণপরিবহন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণের এই অপেক্ষা আর অনুসন্ধান পুরোটাই নিষ্ফল। না অটোরিকশা, না ট্যাক্সি না ভ্যান। কোনো যানবাহন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত হেঁটে গন্তব্য অভিমুখে যাত্রা।
একই সঙ্গে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তল্লাশির নামে হয়রানি। ঢাকার প্রবেশদ্বার যাত্রাবাড়ী, গাবতলী ও আবদুল্লাহপুরে এই 'তল্লাশি' তৎপরতায় ঢাকামুখো মানুষ ছিল শঙ্কিত। মূলত এদের তৎপরতায়ই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানী। রাজধানীর শেওড়াপাড়া থেকে তাঁরা হাঁটছেন। গন্তব্য কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এলাকার ভিন্ন ভিন্ন কর্মস্থল। আগারগাঁওয়ে এসে একটি ভ্যান মিলল। সেখানে গাদাগাদি করে চেপে বসলেন ১০ জন। তাতে অফিসমুখোদের মিছিল একটু ছোট হলো মাত্র। বাকি ২০-২৫ জনের ভাগ্যে কোনো বাহন মিলল না। অগত্যা তাঁরা পায়ে ভরসা করেই এগোতে থাকলেন। তখন ঘড়িতে সকাল সাড়ে ৮টা। পদযাত্রার মিছিলের একজন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা সোহেল বললেন, 'কিছু না পেলে হেঁটেই যাব।' একটু দেরি হলে সোহেলের হয়তো সমস্যা হবে না। কিন্তু সরকারি চাকরিজীবী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সে সুযোগ কতটা আছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। তাই তাঁরা সড়ক ধরে হাঁটছিলেন আর উদ্বেগমাখা দৃষ্টিতে কোনো একটা বাহনের খোঁজ করছিলেন।
মহাসমাবেশের কারণে গতকাল রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় ছিল সফল হরতালের আবহ। দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় ছিল না বাস-মিনিবাস-প্রাইভেট কারসহ বড় বড় যানবাহন। ভরসা কেবলই রিকশা। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সকালে অফিস ও স্কুলে যেতে সেই রিকশা ছিল নিতান্তই কম। তার ওপর আগে থেকে চুক্তি করায় ভ্যানগুলোর বেশির ভাগই ছিল রাজনৈতিককর্মীদের দখলে। এ কারণে পথে পথে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ছিল অন্তঃহীন।
গতকাল সকালে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অপেক্ষারত আমেনা বেগম জানান, মেয়ে পারুলকে নিয়ে শেওড়াপাড়ায় ইস্ট ওয়েস্ট স্কুলে যেতে বের হয়েছিলেন। সকাল ৮টার মধ্যে যাওয়ার কথা ছিল। যেতে পারেননি। তাঁর চোখেমুখে ছিল উৎকণ্ঠা।
রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালে শত শত বাস ও মিনিবাসের চাকা ছিল বন্ধ। নিশ্চল রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক ছিল রিকশার দখলে। অন্যান্য দিনে চলাচলে বাধা থাকলেও নগরীর ভিআইপি সড়কগুলোয় রিকশার অবাধ চলাচল লক্ষ করা গেছে। মতিঝিল, বাংলা মোটর, মালিবাগ, শান্তিনগর, আরামবাগ, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, গাবতলী, মিরপুর, মহাখালী গুলশান- সর্বত্র রিকশা আর রিকশা।
সকাল ৯টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন হিফজুর রহমান। জরুরি কাজে তাঁকে যেতে হবে মতিঝিল। উত্তরা থেকে সকাল ৮টায় প্রথমে রিকশা ও পরে অটোরিকশায় কারওয়ান বাজারে এসে আর কোনো বাহন পাচ্ছেন না। অথচ ইতিমধ্যে পকেট থেকে খরচ হয়ে গেছে ৩২০ টাকা।
এ ছাড়া দুপুরে মালিবাগ, মৌচাক, শাহবাগ মোড়েও যানবাহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেক যাত্রী শাহবাগ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে বিআরটিসির বাসের অপেক্ষায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ সরকারি বাসও রাস্তায় নামায়নি।
এ তো গেল রাজধানীর ভেতরে থাকা মানুষগুলোর দুর্ভোগের খণ্ডচিত্র। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসতে গিয়েও চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। যাত্রাবাড়ী, গাবতলী ও আবদুল্লাহপুরে পুলিশের তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকামুখো মানুষগুলো ছিল শঙ্কিত। মূলত এই তল্লাশি তৎপরতায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানী।
সকালে ঢাকার পশ্চিম প্রান্ত গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, মিরপুর মাজার রোডের প্রবেশপথ, টেকনিক্যাল মোড় ও কল্যাণপুরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্যান্ডেল টাঙিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। গাবতলী থেকে ঢাকার ভেতরে বাস বা মিনিবাস না চললেও কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলেছে। এখানে রিকশা ও ভ্যানেই চলাচল করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
এদিকে ট্রেনের সংখ্যা হঠাৎ কমিয়ে দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়মিত যাতায়াতকারী অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ছিল অসহনীয়। তবে সকালে অফিসযাত্রীরা লোকাল বাস, ট্যাঙ্ িও অটোরিকশায় যাত্রাবাড়ী এসে সেখান থেকে রিকশাযোগে কর্মস্থলে আসেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় যাত্রাবাড়ী থানার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ যাত্রী আসছেন অটোরিকশায়। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসিন্দা আসলাম ও মিরাজ জানান, তাঁরা সকাল সাড়ে ৭টায় রওনা দিয়েছেন। পথে অটোরিকশা নষ্ট হলে আধঘণ্টা অপেক্ষার পর ৫০০ টাকায় আরেকটি অটোরিকশায় ঢাকায় ঢুকতে পেরেছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশন হয়ে গতকাল ঢাকায় ফেরে শত শত যাত্রী। এদের অনেকে যোগ দেন সমাবেশে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া আপ-ডাউন রুটে নিয়মিত ২৮টি ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু ঢাকায় বিরোধী দলের মহাসমাবেশের কারণে এই রুটে গতকাল ১৮টি ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের মাস্টার আবদুল আজিজ কালের কণ্ঠকে জানান, সোমবার সকালে রেলওয়ের কমলাপুর স্টেশনের কন্ট্রোল বিভাগ থেকে এক নোটিশে ট্রেন বন্ধ রাখার এই তথ্য জানানো হয়।
মহাসমাবেশের কারণে গতকাল রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় ছিল সফল হরতালের আবহ। দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় ছিল না বাস-মিনিবাস-প্রাইভেট কারসহ বড় বড় যানবাহন। ভরসা কেবলই রিকশা। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সকালে অফিস ও স্কুলে যেতে সেই রিকশা ছিল নিতান্তই কম। তার ওপর আগে থেকে চুক্তি করায় ভ্যানগুলোর বেশির ভাগই ছিল রাজনৈতিককর্মীদের দখলে। এ কারণে পথে পথে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ছিল অন্তঃহীন।
গতকাল সকালে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অপেক্ষারত আমেনা বেগম জানান, মেয়ে পারুলকে নিয়ে শেওড়াপাড়ায় ইস্ট ওয়েস্ট স্কুলে যেতে বের হয়েছিলেন। সকাল ৮টার মধ্যে যাওয়ার কথা ছিল। যেতে পারেননি। তাঁর চোখেমুখে ছিল উৎকণ্ঠা।
রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালে শত শত বাস ও মিনিবাসের চাকা ছিল বন্ধ। নিশ্চল রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক ছিল রিকশার দখলে। অন্যান্য দিনে চলাচলে বাধা থাকলেও নগরীর ভিআইপি সড়কগুলোয় রিকশার অবাধ চলাচল লক্ষ করা গেছে। মতিঝিল, বাংলা মোটর, মালিবাগ, শান্তিনগর, আরামবাগ, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, গাবতলী, মিরপুর, মহাখালী গুলশান- সর্বত্র রিকশা আর রিকশা।
সকাল ৯টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন হিফজুর রহমান। জরুরি কাজে তাঁকে যেতে হবে মতিঝিল। উত্তরা থেকে সকাল ৮টায় প্রথমে রিকশা ও পরে অটোরিকশায় কারওয়ান বাজারে এসে আর কোনো বাহন পাচ্ছেন না। অথচ ইতিমধ্যে পকেট থেকে খরচ হয়ে গেছে ৩২০ টাকা।
এ ছাড়া দুপুরে মালিবাগ, মৌচাক, শাহবাগ মোড়েও যানবাহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেক যাত্রী শাহবাগ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে বিআরটিসির বাসের অপেক্ষায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ সরকারি বাসও রাস্তায় নামায়নি।
এ তো গেল রাজধানীর ভেতরে থাকা মানুষগুলোর দুর্ভোগের খণ্ডচিত্র। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসতে গিয়েও চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। যাত্রাবাড়ী, গাবতলী ও আবদুল্লাহপুরে পুলিশের তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকামুখো মানুষগুলো ছিল শঙ্কিত। মূলত এই তল্লাশি তৎপরতায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানী।
সকালে ঢাকার পশ্চিম প্রান্ত গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, মিরপুর মাজার রোডের প্রবেশপথ, টেকনিক্যাল মোড় ও কল্যাণপুরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্যান্ডেল টাঙিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। গাবতলী থেকে ঢাকার ভেতরে বাস বা মিনিবাস না চললেও কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলেছে। এখানে রিকশা ও ভ্যানেই চলাচল করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
এদিকে ট্রেনের সংখ্যা হঠাৎ কমিয়ে দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়মিত যাতায়াতকারী অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ছিল অসহনীয়। তবে সকালে অফিসযাত্রীরা লোকাল বাস, ট্যাঙ্ িও অটোরিকশায় যাত্রাবাড়ী এসে সেখান থেকে রিকশাযোগে কর্মস্থলে আসেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় যাত্রাবাড়ী থানার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ যাত্রী আসছেন অটোরিকশায়। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসিন্দা আসলাম ও মিরাজ জানান, তাঁরা সকাল সাড়ে ৭টায় রওনা দিয়েছেন। পথে অটোরিকশা নষ্ট হলে আধঘণ্টা অপেক্ষার পর ৫০০ টাকায় আরেকটি অটোরিকশায় ঢাকায় ঢুকতে পেরেছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশন হয়ে গতকাল ঢাকায় ফেরে শত শত যাত্রী। এদের অনেকে যোগ দেন সমাবেশে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া আপ-ডাউন রুটে নিয়মিত ২৮টি ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু ঢাকায় বিরোধী দলের মহাসমাবেশের কারণে এই রুটে গতকাল ১৮টি ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের মাস্টার আবদুল আজিজ কালের কণ্ঠকে জানান, সোমবার সকালে রেলওয়ের কমলাপুর স্টেশনের কন্ট্রোল বিভাগ থেকে এক নোটিশে ট্রেন বন্ধ রাখার এই তথ্য জানানো হয়।
No comments