কম্পিউটার শিক্ষা-সখীপুরে প্রতারণার ফাঁদ
টাঙ্গাইলের সখীপুরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের নামে এমএলএম বা মাল্টি লেভেল মার্কেটিংয়ের যে জাল পাতা হয়েছে, তা নতুন নয়। প্রশ্নবিদ্ধ এই পদ্ধতি এখন নানাভাবেই ছড়ানোর চেষ্টা চলে। চাকরির মুলো ঝোলানো, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি_ অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসব আমরা আগেও দেখেছি।
সোমবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত প্রতারণার খবরটিতে যদি নতুন কিছু বলার বিষয় থাকে, তা হচ্ছে 'সহজে কোটিপতি হওয়ার কৌশল'। এমএলএম ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া কি আসলেই সম্ভব? প্রথম দিকে এতে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়লেও এখন লোকজনকে বিশ্বাস করানো কঠিন। সখীপুরে দেখা যাচ্ছে, যারা ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে কম্পিউটার শেখার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন, এমএলএম ব্যবসার কথা শুনে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। অথচ কম্পিউটার শিক্ষাই কি বৈষয়িক উন্নয়নের হাতিয়ার হতে পারে না? অস্বীকার করা যাবে না যে, গোটা বিশ্বেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি তরুণদের জন্য এক বিরাট সুযোগ হিসেবে এসেছিল। কিন্তু সবাই তা কাজে লাগাতে পারেনি। পার্শ্ববর্তী ভারত আইসিটি উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে সুবিধা করে নিতে পেরেছে, বাংলাদেশ সেখান থেকে অনেক পিছিয়ে। আমরা কেন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নতি করতে পারিনি, সখীপুরের অঘটন তার একটি উদাহরণ হতে পারে। সেখানে কম্পিউটার শেখার জন্য স্কুল-কলেজ পড়ূয়া তরুণ-তরুণীরা ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু তাদের পড়তে হয়েছে প্রতারণার ফাঁদে। সরকারিভাবে যদি উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকত তাহলে এই বিপত্তি এড়ানো সহজ হতো। প্রশাসনের নাকের ডগায় অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবসা চালিয়ে গেছে তা-ও অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। আমরা আশা করি, গোটা বিষয়টি অবিলম্বে খতিয়ে দেখা হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রতি তরুণ সমাজের আগ্রহ কাজে লাগানোর কথাও ভাবতে হবে একই সঙ্গে। প্রতারণার ফাঁদই কেবল বন্ধ নয়, বৈধ সুযোগের ব্যবস্থাও করতে হবে।
No comments